Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

‘গড়’ উদ্ধারে রদবদলের পথে বিজেপি

যাঁদের নিয়ে এত আলোচনা কী বলছেন তাঁরা?

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৫৭
Share: Save:

উপ-নির্বাচনের জন্য খড়্গপুরে স্থগিত ছিল বিজেপির সাংগঠনিক নির্বাচন প্রক্রিয়া। ভোটে ভরাডুবির পর খড়্গপুর সংগঠনে রদবদল করতে পারে বিজেপি। রেলশহরে বিজেপির তিনটি মণ্ডল রয়েছে। বিজেপি সূত্রের খবর, দুই মণ্ডল সভাপতির অপসারণ প্রায় নিশ্চিত। এমনকি, পরিস্থিতির পর্যবেক্ষণ করে তিন মণ্ডল সভাপতিকেও সরানো হতে পারে।

খড়্গপুরে দলের মণ্ডলস্তরে কি ব্যাপক রদবদল হবে? বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশের ইঙ্গিতপূর্ণ জবাব, ‘‘কাউকে সরিয়ে দেওয়া হয় কখন? হয় সে দক্ষ। তাকে দলের আরও গুরুত্বপূর্ণ কাজে প্রয়োজন। নয় তো সে ততটা দক্ষ নয়। তার জায়গায় আরও দক্ষ কাউকে প্রয়োজন।’’ খড়্গপুরে দক্ষিণ মণ্ডলের সভাপতি জয়ন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তর মণ্ডলের সভাপতি অভিষেক আগরওয়াল। আর মধ্য মণ্ডলের সভাপতি পদে রয়েছেন পি সোমনাথন। বিজেপি সূত্রের খবর, নিচুতলায় ওই তিন মণ্ডল সভাপতির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে যে প্রশ্ন রয়েছে তা অজানা নয় রাজ্য নেতৃত্বেরও। খড়্গপুরে এসে বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘‘কেন দলের হার হয়েছে সেটা নিয়ে খোঁজখবর শুরু হয়েছে। আরও পর্যালোচনা হবে। কর্মীদের সঙ্গে আরও কথা বলব। ভোটারদের সঙ্গে কথা বলব। যাঁদের কাছে ভোট চাইতে গিয়েছিলাম, তাঁদের সকলে কেন আমাদের ভোট দেননি, সকলের সঙ্গে কথা বলে সেটা বোঝার চেষ্টা করব।’’

যাঁদের নিয়ে এত আলোচনা কী বলছেন তাঁরা? হারের দায় নিতে নারাজ উত্তর মণ্ডলের সভাপতি অভিষেক। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা যথেষ্ট চেষ্টা করেছি। হারের ক্ষেত্রে কয়েকটি ফ্যাক্টর রয়েছে। সংখ্যালঘু ভোট আমাদের দিকে আসেনি। কিছু এলাকায় আমাদের কর্মীদের ভয় দেখানো হয়েছে। পুলিশ তৃণমূলকে সব রকম ভাবে মদত দিয়েছে।’’ মণ্ডল সভাপতি পদে না কি রদবদল আসন্ন? অভিষেক বলেন, ‘‘আমার এই পদে তিন বছর হয়ে গিয়েছে। আরও একটা মেয়াদ দল এই পদে রাখতে পারে, নাও রাখতে পারে। দল যে দায়িত্ব দেবেতা ভাল ভাবে পালন করার চেষ্টা করব।’ দক্ষিণ মণ্ডলের সভাপতি জয়ন্ত বলেন,‘‘ তৃণমূলের লোকেরা সন্ত্রাস করেছে। পুলিশ ওদের মদত দিয়েছে। আমাকে আর মণ্ডল সভাপতি পদে রাখা হবে কি হবে না সেই সিদ্ধান্ত দল নেবে। দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।’’

মণ্ডল সভাপতি হারের কারণ হিসেবে একাধিক কারণ সামনে আনছেন। রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্বও বলছেন, হারের কারণ সম্পর্কে বিশ্লেষণ চলছে। এরই মধ্যে যে পরিসংখ্যান সামনে আসছে তা দেখে বিজেপি নেতাদের একাংশ মানছেন, সাংগঠনিক সংস্কার না করলে নিজেদের গড় ধরে রাখা যাবে না। লোকসভার নিরিখে এখানে তৃণমূলের থেকে ৪৫ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল বিজেপি। উপ- নির্বাচনে সেখানে তৃণমূলের থেকে ২০ হাজার ভোটে পিছিয়ে পড়েছে তারা। ছ’মাস আগে যেখানে বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ছিল ৫৭ শতাংশ, এখন সেখানে বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ৩৪ শতাংশ। দলের এক সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, গত বিধানসভা নির্বাচনেও শতাংশের নিরিখে এর থেকে বেশি ভোট পেয়েছিল বিজেপি। তিন বছর আগে দলের ভোটপ্রাপ্তি ছিল ৩৯ শতাংশ।

তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির অবশ্য খোঁচা, ‘‘খড়্গপুরে বিজেপির কোমর ভেঙে গিয়েছে! ওরা আর উঠে দাঁড়াতে পারবে না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Kharagpur TMC By Election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE