বিজেপি’র সভায় মঞ্চে বসেই রইলেন নেতৃত্ব। নিজস্ব চিত্র
দৃশ্য ১: সকাল পৌনে ১১টা। ‘গেটওয়ে অফ হলদিয়া’র কাছে এসে দাঁড়াল একটি গাড়ি। তার দরজা খুলে নামলেন বিজেপি’র রাজ্য সহ-সভাপতি বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরী। দলীয় নেতা লক্ষ্ণণ শেঠকে সঙ্গে নিয়ে তিনি ঢুক গেলেন ব্লক পার্টি অফিসে।
দৃশ্য ২: সকাল সওয়া ১১টা। বৈঠক করা জন্য মঞ্চে বসে বিশ্বপ্রিয়বাবু আর লক্ষ্ণণ শেঠ। কিন্তু, হলঘরে দর্শক কই? মেঝেতে ত্রিপল পেতে তো বসে রয়েছেন মাত্র পাঁচ-ছ’জন লোক।
দৃশ্য ৩: রাজ্য সহ-সভাপতির সামনে দর্শকের সংখ্যা দেখে বেজায় চটলেন জেলা বিজেপি সভাপতি (তমলুক সংগঠন) প্রদীপ দাস। বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার জেলা সভাপতি সাদ্দাম হোসেনকে কঠোর গলায় কিছু নির্দেশ দিলেন তিনি।
এর পরেই বিজেপির রাজ্য-সহ সভাপতি বিশ্বপ্রিয়বাবুকে মঞ্চে বসিয়ে রেখেই কর্মী-সমর্থক জোগাড় করতে ছুটলেন পার্টি এবং সংগঠনের স্থানীয় নেতৃত্বেরা। তবে শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েই ফিরলেন তাঁরা। হলঘরে দেখা মিলল না বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের ভিড়।
শনিবার এই পরিস্থিতি দেখা যায় বিজেপি’র সংখ্যালঘু মোর্চার জেলা সম্মেলনে। ব্রজলালচকে ব্লক পার্টি অফিসে ওই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরী, প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্ণণ শেঠ চাড়াও ছিলেন সংখ্যালঘু মোর্চার রাজ্য সভাপতি আবু হোসেন- সহ দলের অন্য নেতারা। কিন্তু জেলা সম্মেলনে কর্মীদের উপস্থিতির হার দেখে রীতিমতো হতাশ রাজ্য নেতৃত্বরা।
দোর গড়ায় পঞ্চায়েত ভোট। ওই নির্বাচনে সংখ্যালঘুদের ভূমিকা কী হবে, সেই রণকৌশল ঠিক করতেই এদিন সম্মেলন ডেকেছিল বিজেপি। কিন্তু নন্দীগ্রাম, সুতাহাটা, গেঁওখালি, তমলুক, নন্দকুমারের মত সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় থেকে সম্মেলনে কর্মী আনতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয় বিজেপি। হাতেগোনা কয়েকজন কর্মীর সামনেই বিশ্বপ্রিয়বাবু এবং লক্ষ্ণণবাবুরা এ দিন বলেন, ‘‘এতদিন সিপিএম এবং তৃণমূল সংখ্যালঘুদের নিয়ে শুধু ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি করেছে। তাই এবার বাংলায় পরিবর্তন চাই।’’ এদিন বিশ্বপ্রিয়বাবুর কথায়, ‘‘শুধু মুসলমান নয়, সংখ্যালঘু মানে শিখ, জৈন, পার্সি, খ্রিষ্টানদের প্রতিনিধিদেরকেও আমাদের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। যাতে পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলকে হারানো যায়।’’
অবশ্য এ দিন যেভাবে কর্মী-সমর্থক আনতে বিজেপি ব্যর্থ হয়েছে, তাতে আগামী পঞ্চায়েত ভোটে তাদের পূর্ব মেদিনীপুর দখলের স্বপ্ন অলীক বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। লোকসংখ্যা কমের প্রসঙ্গে বিজেপি’র যুক্তি, তৃণমূলের সন্ত্রাসেই কর্মীরা সম্মলেন যেতে ভয় পেয়েছেন। এ বিষয়ে সংখ্যালঘু মোর্চার জেলা সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘‘সব জায়গায় আমাদের লোককে আটকে দেওয়া হয়েছে। তবে এত কিছু করেও ওরা বিজেপিকে পঞ্চায়েত ভোটে আটকাতে পারবে না।’’
বিজেপি’র সম্মেলনকে কটাক্ষ করে মহিষাদল ব্লক তৃণমূল সভাপতি তিলক কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তৃণমূল মানেই মা-মাটি-মানুষ। আমরা সব সময়ই মানুষের পাশে রয়েছি। মানুষও আমাদের পাশে রয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy