Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

টোটোয় যুবতীর দেহ ‘পাচার’, ভাঙচুর পুলিশের গাড়ি

রবিবার বিকেলে ঝুমা মণ্ডল (২২) নামে ওই মহিলার দেহ উদ্ধার করতে গিয়ে বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশ। উত্তেজিত জনতা পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করে।

টোটোয় করে এ ভাবে পুলিশের সামনেই মৃতদেহ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ (বাঁদিকে)। পুলিশের গাড়ির কাচ ভাঙছেন এক বিক্ষোভকারী। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

টোটোয় করে এ ভাবে পুলিশের সামনেই মৃতদেহ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ (বাঁদিকে)। পুলিশের গাড়ির কাচ ভাঙছেন এক বিক্ষোভকারী। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খেজুরি শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৪০
Share: Save:

এক মহিলার অস্বাভাবিক মৃত্যুতে উত্তপ্ত হয়ে উঠল খেজুরির রামচক গ্রাম।

রবিবার বিকেলে ঝুমা মণ্ডল (২২) নামে ওই মহিলার দেহ উদ্ধার করতে গিয়ে বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশ। উত্তেজিত জনতা পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করে। জনতার হাতে বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। তাতে কয়েকজন গ্রামবাসী জখম হন।

কাঁথির এসডিপিও অভিষেক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠাতে গিয়েছঠিল পুলিশ। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু তারপরেও কিছু লোক অশান্তি পাকাতে এ ধরনের গোলমাল করেছে। কয়েকজন পুলিশকর্মীকে মারধর করা হয়েছে। ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মহিলার বাপের বাড়ি এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’ যদিও জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠি চালানোর অভিযোগ মানতে চাননি এসডিপিও।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে খেজুরি-২ ব্লকের খেজুরি গ্রাম পঞ্চায়েতের অলিচক গ্রামের বাসিন্দা ঝুমা মণ্ডলের সঙ্গে বারাতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের রামচক গ্রামের সুরজিৎ দাসের বিয়ে হয়। কালীপুজো উপলক্ষে বাপের বাড়ি গিয়েছিলেন ঝুমা। শনিবার শ্বশুরবাড়িতে ফেরেন। প্রতিবেশীদের দাবি, শনিবার রাতে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে অশান্তি বাধে ঝুমার। রবিবার দুপুরে তাঁকে শ্বশুরবাড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। ঝুমার বাপের বাড়ির পরিবার এবং এলাকার লোকেদের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকজন ঝুমাকে মেরে বস্তায় পুরে টোটোয় করে নিয়ে পালাচ্ছিল। সেই সময় পুলিশ সেখানে থাকলেও কোনও পদক্ষেপ করেনি। এর পরই বিদ্যাপীঠ মোড়ে ঝুমার বাপের বাড়ির লোকজন এবং এলাকার মানুষ মৃতদেহ রাস্তায় আটকে রেখে বিক্ষোভ শুরু করেন। জনতার বিক্ষোভে আটকে পড়ে পুলিশ। সেই সময় পুলিশের একটি গাড়ি জনতা ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। এমনকী কয়েক জন পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ লাঠি চালালে দু’পক্ষের বেশ কয়েক জন আহত হন। পরে খেজুরি থানা থেকে বিরাট পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধারের পাশাপাশি বাপের বাড়ি এবং শ্বশুর বাড়ির লোকেদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশকে মারধর এবং গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, মৃতার বাপের বাড়ির পক্ষ থেকে খুনের অভিযোগ দায়ের করার কথা বলা হলেও তা নিতে অস্বীকার করে পুলিশ। এদিকে মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও স্থানীয় তৃণমূল নেতা অসীম মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘এলাকার শান্তি বিঘ্নিত করতে বিজেপির লোকেরা সাধারণ মানুষকে খেপাচ্ছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার জন্য পুলিশকে বলেছি।’’

যদিও এতে তাঁদের দলের কেউ জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন বিজেপির জেলা সভাপতি (কাঁথি) অনুপ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দলের কোনও নেতা ওই গোলমালে জড়িত নয়। সাধারণ মানুষই এ দিন প্রতিবাদ করেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Young Girl Khejuri Death Toto
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE