Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Bombing

ফুটবল-যুদ্ধে বোমাবাজি, পণ্ড খেলা

সোমবার বিকেলে উত্তেজনা ছড়াল এগরা-২ ব্লকের অস্তিচক গ্রামে। 

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
এগরা শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২০ ০০:৪০
Share: Save:

ফুটবল প্রতিযোগিতা চলাকালীনই বোমাবাজি! আর তা ঘিরে সোমবার বিকেলে উত্তেজনা ছড়াল এগরা-২ ব্লকের অস্তিচক গ্রামে।

স্থানীয় সূত্রের খবর, বাথুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার অস্তিচক মাঠে স্থানীয় দুটি ক্লাবের উদ্যোগে গত ১১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে ‘সুষমা স্মৃতি কাপ নক আউট ফুটবল প্রতিযোগিতা। সোমবার ছিল পাঁশকুড়ার সঙ্গে বনাম কলকাতা কেএফসি ক্লাবের খেলা। অভিযোগ, বিকেল ৩টের দিকে খেলা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই মাঠের পাশে বোমাবাজি শুরু হয়। অভিযোগ, অল্প সময়ের মধ্যে এলাকায় ২০-২৫টি বোমা ছোড়া হয়। এতে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। ওই মাঠের পাশেই রয়েছে অস্তিচক প্রাইমারি এবং হাইস্কুল। বিকেলে ওই সময় স্কুলের কয়েকটি শ্রেণির ছুটি হয়েছিল। হঠাৎ করে বোমাবাজি শুরু হওয়ায় স্কুল ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়ায়। স্থানীয় এক ব্যক্তি মানিক মণ্ডল বলেন, ‘‘দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এখানে খেলা চলেছে। কখনও মারামারির ঘটনা ঘটেনি। অথচ এ দিন এত বোমা পড়ল। ভয় হচ্ছে।’’

কিন্তু বোমাবাজি করল কারা? স্থানীয় সূত্রের খবর, ঘটনার সূত্রপাত রবিবার। ওই দিন ওই ফুটবল প্রতিযোগিতায় খেলা ছিল পটাশপুর এলাকার এমএসকেবি এবং লালড়ের নরেশ একাদশের। পটাশপুর এবং মারিশদা থানা এলাকার কয়েকটি গ্রাম নিয়ে গঠিত এমএসকেবি দলটি গত কয়েক বছর ওই প্রতিযোগিতা জিতছে। দাবি, ভাল খেলার জন্য তারা ভাল খেলোয়াড়ও দলে ভাড়া করে আনে। তবে রবিবার লালগড়ের দলের কাছে তারা ২-০ গোলে হেরে যায়।

এর পরেই ঝামেলা শুরু হয়। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, এমএসকেবি ক্লাবের সদস্যেরা ভাড়া করা খেলোয়াড়দের কাছ থেকে টাকা ফেরত চান। টাকা না দিলে তাঁদের যেতেও দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। ওই সময় প্রতিযোগিতার উদ্যোক্তারা মধ্যস্থতা করেন এবং ক্লাবকে ওই ভাড়ার খেলোয়াড়দের থেকে টাকা নিয়ে তা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেন। এতে সমস্যার সাময়িক ভাবে মিটমাট হয়ে যায়।

অভিযোগ, এর পরেই এ দিন খেলা চলাকালীন পটাশপুরের ওই ক্লাবের লোকজন বোমাবাজি করে। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, অস্তিচক মাঠটি একটি খালের পাশে রয়েছে। ওই খালের একটি প্রান্ত পটাশপুর এবং অন্য প্রান্তটি এগরা। অভিযোগ, ৩টে নাগাদ ১৫-২০ জন লোক পটাশপুরের দিক থেকে খালের অন্য প্রান্তে থাকা অস্তিচকের দিকে বোমাবাজি করে। প্রতিযোগিতার একটি উদ্যোক্তা ক্লাবের সভাপতি দেবদুলাল মহান্তির বাড়ি জামুয়ালছিমপুর গ্রামে। অভিযোগো, এ দিন তাঁর বাড়ির সামনেও বোমাবাজি হয়েছে। খবর পেয়ে ফুটবল মাঠে যান মারিশদা থানা এবং এগরা থানার ওসি। এলাকায় নামানো হয় র‌্যাফও।

একটি ক্লাবের কাছে এত বোমা এল কী করে, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এমএসকেবি ক্লাবের নেতৃত্ব দেন ভগবানপুর২ ব্লকের অর্জুননগর পঞ্চায়েতের তৃণমূলের সভাপতি বুদ্ধদেব বেরা এবং স্থানীয় তৃণমূল নেতা বিমল পইড়্যা। ফলে ঘটনায় রাজনৈতিক যোগ থাকারও বিষয়টি উড়িয়ে দিচ্ছেন না অনেকে।

যদিও প্রতিযোগিতার আর একটি উদ্যোক্তা ক্লাবে সম্পাদক বিকাশ বেজ বলেন, ‘‘এখানে কোনও রাজনীতি নেই। হেরে যাওয়াটা মেনে নিতে পারেনি ওই ক্লাব। তাই এখানে খেলা বানচাল করতে এমএসকেবি-র দুষ্কৃতীরা বোমাবাজি করেছে। পুলিশকে এ বিষয়ে জানিয়েছি।’’

এমএসকেবি ক্লাবের সম্পাদক বিকাশ ভুঁইয়া বলেন, ‘‘এই ধরনের বোমাবাজি ঘটনায় আমাদের ক্লাব কোনও ভাবেই জড়িত নয়। অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, খেলায় হার-জিত নিয়ে ঝামেলার জেরে বোমাবাজি হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। খবর পেয়ে এলাকায় যাওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে কয়েকটি পেটো বোমা উদ্ধার করে তা খালের জলে ফেলে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। রাতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এগরার এসডিপিও শেখ আকতার আলি বলেন, ‘‘ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ হয়নি। ঘটনা খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bombing Egra Football Tournament
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE