Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কিশোরের মৃত্যু, ধন্দে পুলিশও 

দীপের বাবা শ্রীমন্ত দিনমজুর। মা স্বাতী মিদ্যাও দিনমজুরি করেন। ডলংয়ে বাড়ির কিছুটা দূরে চা গুমটিও রয়েছে শ্রীমন্তর।

 দীপ মিদ্যা। নিজস্ব চিত্র

দীপ মিদ্যা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কেশপুর শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৯ ০১:০৪
Share: Save:

সন্ধে ছ’টা নাগাদ ‘দিদি বেরোচ্ছি, এখুনি ফিরব’ বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল ছেলেটা। মাঝে দু’টো ঘণ্টা। রাত আটটা নাগাদ বাড়ি থেকে কিছুটা দূরেই মিলল তার দেহ।

বুধবার রাতে কেশপুরের আনন্দপুরে ওই কিশোরের মৃত্যুতে রহস্য ঘনিয়েছে। মৃত দীপ মিদ্যা (১২)-র বাড়ি আনন্দপুরের ডলংয়ে। সে সাহসপুর ঘোষাল হাইস্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল। দীপের বাবা শ্রীমন্ত মিদ্যার অভিযোগ, ছেলেকে কেউ বা কারা খুন করেছে। তবে কিশোরের মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধন্দে তদন্তকারীরা। জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘তদন্তে সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ পুলিশের এক সূত্রের খবর, মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা দায়ের হয়েছে। মৃতের পরিবার কারও নামে অভিযোগ করেনি। তাই মামলা হয়েছে অজ্ঞাতপরিচয়ের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ বোঝা যেতে পারে।’’ নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক তদন্তকারী জানাচ্ছেন, মৃতদেহের বাইরে জোরাল আঘাতের চিহ্ন ছিল না। আবার দেহ দেখে মনে হয়েছে স্বাভাবিক মৃত্যুও নয়। খানিক ধন্দেই রয়েছি আমরা।’’

উত্তর অধরা

• কেন ফিরেও ফের বাড়ি থেকে বেরোল দীপ
• বাড়ি ফেরার পথে কি কারও সঙ্গে তার দেখা হয়েছিল
• ঘটনাস্থলে কি আগে থেকে কেউ বা কারা ছিল
• দেহে আঘাত নেই। তবে কি শ্বাসরোধ করেই খুন
• খুনির উদ্দেশ্য কী ছিল

দীপের বাবা শ্রীমন্ত দিনমজুর। মা স্বাতী মিদ্যাও দিনমজুরি করেন। ডলংয়ে বাড়ির কিছুটা দূরে চা গুমটিও রয়েছে শ্রীমন্তর। দম্পতির এক ছেলে, এক মেয়ে। দীপ ছোট। মেয়ে পূজা নবম শ্রেণির ছাত্রী। বুধবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে এক দোকানে গিয়েছিল দীপ। দোকান থেকে বাড়ি ফিরে ফের বেরিয়ে যায় সে। বাড়িতে তখন ছিল দিদি পূজা। শ্রীমন্তরা গুমটিতে ছিলেন। পরে বাড়ি ফিরে শ্রীমন্তরা দেখেন, দীপ তখনও ফেরেনি। পূজা জানায়, দীপ কোথায় গিয়েছে বলে যায়নি। আটটা নাগাদ দীপের মৃতদেহ উদ্ধার হয় বাড়ির কাছেই। শ্রীমন্ত বলছেন, ‘‘আমার ছেলেকে কে, কেন খুন করবে সেটাই তো বুঝছি না।’’ দীপের মা স্বাতীর দাবি, ‘‘আমাদের কারও সঙ্গে ঝগড়া নেই। ছেলের সঙ্গেও কারও ঝগড়া ছিল না।’’

পুলিশ সূত্রে খবর, কিশোরের নাক ও মুখের কাছে নাকি সামান্য আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। তদন্তকারীদের একাংশ জানাচ্ছেন, শ্বাসরোধ করে খুন করলে এমন চিহ্ন মেলে। দীপের কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গেও কথা বলেছেন তদন্তকারীরা। তবে ধন্দ কাটেনি। বন্ধুরা জানিয়েছে, দীপ তাদেরকে কখনও কোনও আশঙ্কার কথা বলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE