Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
বাড়ছে পথ কুকুরের সংখ্যা

জলাতঙ্ক রোধে পশ্চিমে শিবির

রাস্তায় বাড়ছে কুকুরের সংখ্যা। প্রায়শই কুকুরের কামড় খেয়ে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, গ্রামীণ হাসপাতালে আসছেন অনেকে। পরিস্থিতি দেখে জলাতঙ্ক রোধে এ বার জেলার মেডিক্যাল অফিসারদের (এমও) বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হল।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

রাস্তায় বাড়ছে কুকুরের সংখ্যা। প্রায়শই কুকুরের কামড় খেয়ে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, গ্রামীণ হাসপাতালে আসছেন অনেকে। পরিস্থিতি দেখে জলাতঙ্ক রোধে এ বার জেলার মেডিক্যাল অফিসারদের (এমও) বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হল। সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুরে এই প্রশিক্ষণ শিবির হয়েছে।

বছর দশেক আগেও বছরে গড়ে জেলায় ৫-৬ হাজার কুকুর কামড়ানোর ঘটনা ঘটত। এখন সেই সংখ্যাটা ১২ হাজারে ঠেকেছে! জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রে খবর, ২০১৬ সালে জেলায় সব মিলিয়ে ১২,০৩৫ জনকে কুকুরে কামড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, “আগের থেকে কুকুরে কামড়ানোর ঘটনার সংখ্যা বেড়েছে। শিশুদেরও কুকুরে কামড়াচ্ছে। তবে কুকুরের কামড়ে কেউ মারা গিয়েছে, এমন কোনও তথ্য নেই।”

কুকুরের কামড় খেয়ে কেউ চিকিত্সার জন্য এলে ঠিক কী করা উচিত, প্রশিক্ষণ শিবিরে এমওদের সেটাই জানানো হয়। কী ভাবে রোগীদের চিকিৎসা করা হবে এ ব্যাপারেও শিবিরে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথবাবুর কথায়, “কুকুর-বেড়াল কামড়ালে প্রতিষেধক নেওয়া জরুরি। এ জন্য ব্লক স্তরে ক্লিনিক খোলা হয়েছে। এমওদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতেই জেলায় প্রশিক্ষণ শিবির হয়েছে।”

২০২০ সালের মধ্যে পৃথিবী থেকে জলাতঙ্ক নির্মূল করা হবে বলে ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। জেলার ছবিটা অবশ্য আলাদা। জেলায় জলাতঙ্কের উপসর্গ নিয়ে যাঁরা হাসপাতালে আসেন, তাঁদের একাংশকে ঠিক সময় প্রতিষেধক ইঞ্জেকশন দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ। জেলার এক স্বাস্থ্য-কর্তার কথায়, “কুকুর-বেড়াল কামড়ালে তাদের দাঁতে লেগে থাকা লালা যদি মানুষের রক্তে মেশে একমাত্র তখনই জলাতঙ্কের আশঙ্কা থাকে। সে ক্ষেত্রে প্রতিষেধক নেওয়া অবশ্যই জরুরি।”

ইতিমধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরে ৩৩টি র‌্যাবিজ ক্লিনিক খোলা হয়েছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। এরমধ্যে ২৪টি পশ্চিম মেদিনীপুর স্বাস্থ্য জেলায়। ৯টি ঝাড়গ্রাম স্বাস্থ্য জেলায়। জেলার এক স্বাস্থ্য-কর্তার কথায়, “যেখানে শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল রয়েছে, সেখানে এই ক্লিনিক খোলা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, ‘‘জলাতঙ্কের উপসর্গ নিয়ে কেউ এই সমস্ত ক্লিনিকে এলে কী ভাবে চিকিত্সা হবে, প্রশিক্ষণ শিবিরে তা নিয়েই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”

জলাতঙ্ক রোধে ব্যবস্থা নিলেও কুকুরের উপদ্রব কমাতে ভ্রূক্ষেপ নেই প্রশাসনের। এক সময় মেদিনীপুর পুরসভা ‘ডগ ক্যাচার’ কিনেছিল। অনেক দিন আগেই তা খারাপ হয়ে গিয়েছে। পুরনো ‘ডগ ক্যাচার’ মেরামত করা কিংবা নতুন ক্যাচার কেনার উদ্যোগও চোখে পড়েনি। কুকুরের নির্বীজকরণেও প্রশাসন উদাসীন বলে অভিযোগ। জেলার এক স্বাস্থ্য-কর্তাও মানছেন, “যে ভাবে কুকুরের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে কুকুরের জন্ম নিয়ন্ত্রণ করাটা জরুরি। না হলে আগামীতে সমস্যা আরও বড় আকার নেবে।” এ বিষয়ে জেলার উপ- মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথবাবুর আশ্বাস, “কুকুরের জন্ম নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগী হওয়ার ব্যাপারে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Camp Rabies
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE