Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বিবিধের মিলনে ছটের অন্য ছটা

বিহারি, বাঙালি, তেলুগু— রবিবার ছটপুজোয় মিলনের ছবি ধরা পড়ল মিনি ইন্ডিয়া খড়্গপুরে। তিন প্রহরে সূর্যদেবের এই আরাধনা শুরু হয়েছে শনিবার রাত থেকে। চলবে আজ, সোমবার ভোর পর্যন্ত। রবিবার ছিল মূল পুজো।

কংসাবতীর গাঁধীঘাটে আবর্জনার মধ্যেই পুজো।

কংসাবতীর গাঁধীঘাটে আবর্জনার মধ্যেই পুজো।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর ও মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share: Save:

বিহারি, বাঙালি, তেলুগু— রবিবার ছটপুজোয় মিলনের ছবি ধরা পড়ল মিনি ইন্ডিয়া খড়্গপুরে।

তিন প্রহরে সূর্যদেবের এই আরাধনা শুরু হয়েছে শনিবার রাত থেকে। চলবে আজ, সোমবার ভোর পর্যন্ত। রবিবার ছিল মূল পুজো। এ দিন বিকেলে শোভাযাত্রা দেখতে ভিড় জমে। খরিদা, মালঞ্চ, সুভাষপল্লি, আয়মা, নিমপুরা, ঝাপেটাপুর, গোলবাজার, ইন্দা মাতে উৎসবে।

মূলত হিন্দিভাষীদের এই উৎসবে চতুর্থী থেকে সপ্তমী পর্যন্ত ব্রত পালন করা হয়। এই ক’দিন লাউভাত, খাড়না (আতপ চালের ভাত) খাওয়ার রীতি রয়েছে। এ দিন বিকেলে উপোস করে নদী বা জলাশয়ে গিয়ে সূর্যাস্তের সময় সূর্যদেবকে অর্ঘ্য নিবেদন করা হয়। উৎসর্গ করা সুপা (কুলো) সাজে কলা, নারকেল, ঠেকুয়ায়। প্রথা মেনেদণ্ডি কেটে মানত পালন করতে দেখা গিয়েছে ভক্তদের। বাঙালিরাও তাতে সামিল হয়েছেন। মন্দিরতলার পুকুরঘাটে আসা মালঞ্চর বাসিন্দা অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “মহাভারতে সূর্য উপাসনার কথা রয়েছে। বিহারিদের এই উৎসব থেকে এটুকু বুঝেছি আমরাও এই ব্রত করতে পারি। প্রতিবার ছটে এই পুকুরে আসি।’’ খরিদার সঞ্জয় রাণাও বলেন, “প্রতিবার পাড়ার এক বন্ধু নিমন্ত্রণ করে। সকাল থেকে স্ত্রীকে নিয়ে পুজোর কাজে হাত লাগাই। দেবতার আরাধনা তো আর গণ্ডিতে বাঁধা নয়।’’

এ দিন ইন্দার বোসপুকুর, মালঞ্চর ঝিনতলাপুকুর, কৌশল্যা পুকুরের মতো ছোট ছোট পুকুর থেকে অদূরে কাঁসাই নদীর পাড়— সর্বত্রই চলেছে পুজোর আচার। সব থেকে ভিড় ছিল খরিদার মন্দিরপুকুর ঘাটে। জ্বলেছে আতসবাজি। তবেপুলিশি নজরদারিতে শব্দবাজিতে রাশ ছিল।

সর্বজনীন ছট খড়্গপুরের খরিদায়।

ছিল সর্বজনীন ছট পুজোর আয়োজনও। মন্দিরপুকুরের সামনে সূর্য দেবতার মূর্তি বসেছে। ছট পুজো প্রবন্ধক কমিটির এই আরাধনার এ বার নবম বর্ষ। খরিদা রেলগেটের কাছে ইয়ং বয়েজ সরগম ক্লাবের ১৯তম বর্ষের পুজোও হয়েছে সাড়ম্বরে। কমিটির সদস্য গোপাল যাদব, মান্না শেঠরা জানালেন, এই উৎসব এখন সকলের। মন্দিরতলা ঘাটে পুজো দিতে যাওয়া খরিদার সঞ্জু ভকত, নিমপুরার মনোজ রাজপালরাও বলছিলেন, “ছটপুজো আমাদের বিহারিদেরই উৎসব। তবে এই শহরে বহু মানুষের মিলনে উৎসব অন্য মাত্রা পায়।’’

ছটে মেতেছে মেদিনীপুরও। রবিবার দুপুর থেকে শহরের বিভিন্ন পুকুর, জলাশয়ের কাছে ভিড় জমে। কংসাবতীতেও প্রচুর ভিড় করেন। কিছু জায়গায় লক্ষ্মী-কালী প্রতিমার কাঠামো জলে পড়ে থাকায় ক্ষোভও ছড়িয়েছে। বক্সিবাজারের কমলেশ চৌধুরী বলেন, ‘‘ছটে মুখ্যমন্ত্রী ছুটি দিচ্ছেন। অথচ পুজো সুষ্ঠু ভাবে করানোর দিকে নজর নেই পুরসভার।’’ পালবাড়ির বাসিন্দা দুর্গেশ চৌধুরীর আবার নালিশ, ‘‘কংসাবতীর গাঁধীঘাটে বিসর্জনের আবর্জনা ছিল। এটা কাম্য নয়।’’ যদিও উপপুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাস বলেন, “নদীঘাট বাড়তি যত্ন নিয়ে সাফাই করা হয়েছে। নদীঘাট ও পুকুরের সামনে আলো, পানীয় জলের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।” ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল ও রামপ্রসাদ সাউ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chhath Puja Kharagpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE