নাচে-গানে: শালবনির গ্রামে চলছে সচেতনতা প্রচার। —নিজস্ব চিত্র।
ফাল্গুনের দুপুরে শালবনির প্রত্যন্ত করমশোল গ্রামে খোলা আকাশের নীচে বসেছে ঝুমুর গানের আসর। জঙ্গলমহলের বিশিষ্ট শিল্পী ইন্দ্রাণী মাহাতো গাইছেন, ‘ইস্কুলে পড়হা বিটিছানা, আঠারোর নীচে বিহা মানা/নিজের পায়ে দাঁড়হাক আগে নিজে, তারপরে বিটির বিহা দিবে।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে ধামসা-মাদলের বোলে মাতোয়ারা লালমাটির গ্রাম। গ্রামবাসী সজনী মাহাতো, পরীক্ষিত মাহাতোরা জানলেন, ১৮ বছরের আগে মেয়ের বিয়ে দিলে শাস্তি ও জরিমানা হবে।
জিন্দল গোষ্ঠীর উদ্যোগে কয়েক মাস ধরে শালবনির গ্রামে গ্রামে এমনই সচেতনতা কর্মসূচি চলছে। জিন্দলদের তরফে এই কর্মসূচি রূপায়ণের দায়িত্বে থাকা সংস্থার কর্মকর্তা শতদল সাহা বলেন, “ওই সব গ্রামে ঝুমুর গান খুব জনপ্রিয়। বাসিন্দাদের সচেতন করতে ঝুমুরশিল্পীদের সাহায্য নিচ্ছি আমরা। এতে সচেতনতার কাজটা অনেক সহজ হয়ে যাচ্ছে।”
শালবনির কাশীজোড়া ও বাঁকিবাঁধ পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে এখনও আঠারোর অনেক আগেই মেয়েদের বিয়ে হয়ে যায়। স্কুলে পড়ার বয়সে মা-ও হয়ে যায় তারা। সচেতনতা নেই অন্য ব্যাপারেও। সরকারি ভাবে বাড়ি বাড়ি শৌচাগার তৈরি হলেও তার ব্যবহার হচ্ছে না। পরিস্রুত পানীয় জল পানের ব্যাপারেও সচেতনতার অভাব রয়েছে। ফলে, নানা রোগজ্বালা লেগেই রয়েছে। এমনকী, যক্ষ্মা রোগের চিকিত্সাও মাঝপথে অনেকে বন্ধ করে দেন। ছবিটা পাল্টাতে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই জিন্দল শিল্পগোষ্ঠী শালবনিতে তাদের প্রকল্প এলাকার আশপাশে ২৮টি গ্রামে সচেতনতা কর্মসূচি নিয়েছে। ইতিমধ্যেই পাঁচটি গ্রামে কর্মসূচি রূপায়িত হয়েছে। বৃহস্পতিবার যেমন করমশোল, শ্রীকৃষ্ণপুর, পাথরাজুড়ি, বালিবাসা-সহ আরও পাঁচটি গ্রামে ঝুমুর গানের মাধ্যমে সচেতনতা কর্মসূচি হল। ইন্দ্রাণী মাহাতো ছাড়াও তাঁর সঙ্গে ছিলেন জঙ্গলমহলের আর এক ঝুমুরশিল্পী সমীর মাহাতো।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy