Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

সবেধন ক্লাসঘরও ভাঙা, বর্ষায় পড়াশোনা শিকেয়

স্কুলের চারটি ক্লাসঘরে বসার জো নেই। একটি ঘরেই চলছে দাঁতনের আঙ্গুয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেখানেও ছাউনি ভাঙা, বৃষ্টিতে এলেই ব্যাগ নিয়ে উঠে যেতে হয় পড়ুয়াদের।

এমনই হাল দাঁতনের আঙ্গুয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। নিজস্ব চিত্র

এমনই হাল দাঁতনের আঙ্গুয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দাঁতন শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:২৫
Share: Save:

স্কুলের চারটি ক্লাসঘরে বসার জো নেই। একটি ঘরেই চলছে দাঁতনের আঙ্গুয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেখানেও ছাউনি ভাঙা, বৃষ্টিতে এলেই ব্যাগ নিয়ে উঠে যেতে হয় পড়ুয়াদের।

২০০৭-০৮ সালে সর্বশিক্ষা মিশনের টাকায় দু’টি ক্লাসঘর তৈরি হয়েছিল এই স্কুলে। তবে অবস্থা বিশেষ ফেরেনি। বর্ষায় তো পড়াশোনা কার্যত শিকেয় ওঠে। বিভিন্ন দফতরে জানিয়েও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ। স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবাশিস ঘোষ বলেন, ‘‘২০১৫ সাল থেকে সব দফতরে সমস্যার কথা জানিয়েছি। কিন্তু কিছুই হয়নি।’’

১৯৯০-৯২ সাল নাগাদ মাটির স্কুল ভেঙে চারটি ক্লাসঘর তৈরি হয়েছিল। কিন্তু জানলা, দরজা ছিল না। চারটির মধ্যে একটি ঘরেই পরে জানলা-দরজা বসানো হয়। বর্তমানে সেখানে রান্নার কাঠ রাখা হয়। ছাদের টিনের ছাউনি দীর্ঘ দিন না বদলানোয় ভেঙেচুরে গিয়েছে। বৃষ্টি নামলে একটি ঘরেই গাদাগাদি করে আশ্রয় নিতে হয় ১৩৮জন পড়ুয়া আর পাঁচজন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে। স্কুলের সহ-শিক্ষিকা কৃষ্ণা নন্দ বলেন, ‘‘বৃষ্টির সময় প্রায় তিনমাস আমরা কোনও ক্লাস করতে পারি না। একটি ঘরে সব পড়ুয়াদের বসালে তাদের সামলানোই মুশকিল হয়। পুরনো ভবনের ছাদের টিন বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। ভয়ে থাকতে হয়, কখন কী বিপদ হবে।’’ স্কুলের পড়ুয়া সায়ন মাহাতো, রুম্পা বেরা, দেবু মাইতিরাও বলে, ‘‘একটু বৃষ্টি হলেই জল জমে যায়। ক্লাস করতে পারি না। দুপুরের খাবারও খেতে পারি না। ভয় করে কখন টিন খুলে মাথায় পড়বে।’’ অভিভাবক অজিতকুমার মিশ্র, খগেন্দ্রনাথ দাশ, শিউলি করদের বক্তব্য, ‘‘স্কুল ভবন অবিলম্বে মেরামত না করলে ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠাব না।’’

সমস্যা রয়েছে আরও। স্কুলে গেট থাকলেও সীমানা পাঁচিল নেই। অথচ স্কুলের তিনদিকে পুকুর। যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। মিড ডে মিল রান্নার স্থায়ী ঘর নেই। শৌচাগারের অবস্থাও করুণ। বর্তমান প্রধান শিক্ষক দেবাশিস ঘোষ ২০০৩ সালে এই স্কুলে যোগ দিয়েছেন। ২০১৫ সাল থেকে দফায় দফায় নানা মহলে দরবার করেও স্কুলের হাল ফেরাতে পারেননি। দাঁতন দক্ষিণ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) শেখ কেফায়েতুল্লা বলেন, ‘‘জেলার সংশ্লিষ্ট দফতরে জানিয়েছি। পুনরায় স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে দ্রুত সমস্যার সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’ দাঁতনের বিডিও অনিরুদ্ধ ঘোষেরও আশ্বাস, ‘‘ইতিমধ্যে জেলা দফতরে বিষয়টি জানানো হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Classroom Condition Poor Rain
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE