Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

বন্দরের ‘বাধা’, থমকে জেটি তৈরি

রুটিরুজির টানে নন্দীগ্রাম থেকে জলপথে শিল্প-বন্দর শহরে আসেন বহু মানুষ।

হলদিয়ায় থমকে রয়েছে জেটি তৈরির কাজ। নিজস্ব চিত্র

হলদিয়ায় থমকে রয়েছে জেটি তৈরির কাজ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৯ ০১:০৪
Share: Save:

উন্নয়নেও কেন্দ্র- রাজ্য ‘সংঘাত’।

রাজ্য পরিবহণ দফতর এবং হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষের ‘সংঘাতে’ ছ’মাসের মধ্যেই বন্ধ হয়ে গেল হলদি নদীর উপর পল্টুন জেটি তৈরির কাজ। হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, তাঁদের কাছে কোনও অনুমতি না নিয়েই জেটি বানানোর কাজ শুরু করেছিল পরিবহণ দফতর।

হলদিয়া আর নন্দীগ্রামের মাঝখান দিয়ে বয়ে গিয়েছে হলদি নদী। রুটিরুজির টানে নন্দীগ্রাম থেকে জলপথে শিল্প-বন্দর শহরে আসেন বহু মানুষ। ওই রুটে দিনে ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ যাতায়াত করেন। কোনও কারণে ফেরি বন্ধ থাকলে ঘুরপথে নন্দকুমার হয়ে হলদিয়া পৌঁছতে হয়। তাতে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে হয়। তাই গুরুত্বপূর্ণ ওই জলপথে চলতি বছর লোকসভা ভোটের আগে একটি পল্টুন জেটি বানানোর সিদ্ধান্ত নেয়

পরিবহণ দফতর।

সেই মতো কয়েক মাস আগে হলদিয়া টাউনশিপে সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন হলদি নদীর তীরে জেটি নির্মাণের কাজ শুরু হয়। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সেই কাজের সূচনা করেছিলেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী তথা হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান শুভেন্দু অধিকারী। ২৫ মিটার দীর্ঘ এবং আট মিটার চওড়া ওই জেটি তৈরির জন্য দু’কোটি ৮২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে পরিবহণ দফতর। কিন্তু অভিযোগ, সম্প্রতি ওই জেটির কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন হলদিয়া

বন্দর কর্তৃপক্ষ।

বন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, পরিবহণ দফতরের ওই জেটি বানানোর প্রক্রিয়া ঠিক ছিল না। তাঁরা জানাচ্ছেন, হলদি নদীর উপরে কোনও কিছু নির্মাণ করতে গেলে বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অনুমোদন নেওয়া কেন্দ্রীয় জাহাজ মন্ত্রকের নিয়ম। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের ৪৬ নম্বর ধারায় নির্দিষ্ট উল্লেখ রয়েছে। এই ধারা মতো হলদিয়াতে জেটি বানানোর জন্য রাজ্য সরকার অনুমোদন নেয়নি বলে বন্দরের অভিযোগ।

অবশ্য নির্মাণ কাজ আটকে দেওয়ার কথা মানতে নারাজ হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার অমলকুমার দত্ত বলেন, ‘‘পোর্ট ট্রাস্টের জায়গায় কিছু করতে হলে অনুমোদন লাগে। ওদের তেমন কিছু ছিল না। তাই জেটির নকশা এবং পরিকল্পনার নথি জমা দিতে বলা হয়েছে। কাজ বন্ধ করা হয়নি।’’

জেটির কাজ বন্ধ হওয়ায় তাঁদের সমস্যা বেড়েছে বলে দাবি নিত্য যাত্রীদের। গিরিরাজ পণ্ডা নামে নন্দীগ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামের প্রান্তে জলসীমায় জেটি বানোন শেষ হওয়ায় যাতায়াত কিছুটা হলেও সুবিধে হয়েছে। কিন্তু হলদিয়ার প্রান্তে এখনও জেটি নেই। তাই থাকায় জোয়ারের সময় অনেকটা এগিয়ে জল পেরিয়ে লঞ্চে উঠতে হয়।’’

গোটা ঘটনায় বন্দর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়েছেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। সম্প্রতি নন্দীগ্রামে এক অনুষ্ঠানে গিয়ে তিনি এ প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘‘মানুষের স্বার্থে উন্নয়ন করা হচ্ছে। পোর্ট ট্রাস্ট নিজে কিছু করে না। অন্যদের কাজ করতে দেয় না।’’ একই সঙ্গে তাঁর ঘোষণা, ‘‘উন্নয়ন নিয়ে কোনও বাধা শুনব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Haldia Port Ferry
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE