Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

এক হাতে ছবি এঁকে কেরলের পাশে জগন্নাথ

দু’পায়ে ঠিক মত দাঁড়াতে পারেন না। একটা হাতও নেই। তবে সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করেই কাঁথির অফিস পাড়ায় ঘুরে ঘুরে নিজের আঁকা ছবি বিক্রি করছেন জগন্নাথ প্রধান। ছবি বিক্রির টাকা দিয়ে কেরলে বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন তিনি।

ছবি বিক্রি করছেন জগন্নাথ। নিজস্ব চিত্র

ছবি বিক্রি করছেন জগন্নাথ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৮ ০০:৫৭
Share: Save:

দু’পায়ে ঠিক মত দাঁড়াতে পারেন না। একটা হাতও নেই। তবে সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করেই কাঁথির অফিস পাড়ায় ঘুরে ঘুরে নিজের আঁকা ছবি বিক্রি করছেন জগন্নাথ প্রধান। ছবি বিক্রির টাকা দিয়ে কেরলে বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন তিনি।

রামনগর ২ ব্লকের চাউলখোলার অদূরে সাতবাটিয়া গ্রামে বাড়ি জগন্নাথের। জন্ম থেকে দুটো পা নেই। একটা হাত অকেজো। তবে বাকি একটা হাত দিয়েই সাদা ক্যানভাসে প্রাণ ফোটান তিনি। স্থানীয় একটি সংস্থার পক্ষ থেকে গত কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন প্রশাসনিক দফতর, আদালত চত্বরের মত জনবহুল এলাকায় ঘুরে শিবির বসানো হচ্ছে। সেই শিবির থেকে নিজেদের আঁকা ছবি বেচে শিল্পীরা যে টাকা উপার্জন করছেন, তা কেরলে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অন্য শিল্পীদের মতো এই প্রয়াসে সামিল হয়েছেন জগন্নাথও। তাঁর কথায়, ‘‘বন্যায় মানুষের কষ্ট টিভিতে দেখেছি। মানবিকতার টানেই সমাজের জন্য কিছু করার চেষ্টা করছি।’’

বুধবার জগন্নাথ ও তাঁর বন্ধুরা হাজির হয়েছিলেন কাঁথি মহকুমা শাসকের দফতর সংলগ্ন ট্রেজারি ভবনের নীচে। পাশেই চায়ের দোকানে আড্ডা দেওয়া কয়েক জন উঠে গিয়েছিলেন তুলির টান দেখতে। উৎসাহীদের মধ্যে ছিলেন দুই বন্ধু বিশ্বজিৎ মাইতি ও কণিষ্ক পণ্ডা। এ দিন জগন্নাথের আঁকা দু’টি ছবি হাজার টাকায় কিনেছেন তাঁরা। তাঁদের কথায়, ‘‘জগন্নাথ আমাদের সমাজের কাছে একটা ‘প্রতীক’। এত বাধা টপকেও তিনি তাঁর শিক্ষা যেভাবে কাজে লাগিয়ে দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তার কোনও তুলনা চলে না।’’ জগন্নাথ-সহ তাঁর সতীর্থদের সহযোগিতায় মুগ্ধ তাঁদের শিক্ষক বিষ্ণুপদ মাইতি। তিনি বলেন, ‘‘জগন্নাথ দেখিয়ে দিল, বিপদে পড়া মানুষদের পাশে দাঁড়াতে কোনও টাকা লাগে না। শুধু একটা মন লাগে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE