ফাইল চিত্র
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে তিন সপ্তাহের লকডাউনের ঘোষণা করেছে কেন্দ্র সরকার। থমকে জন জীবন। অন্য দোকানের পাশাপাশি বন্ধ বীজের দোকানগুলিও। ফলে গ্রীষ্ম মরসুমের আনাজ চাষে ধাক্কা লেগেছে। বড় বড় আনাজ বাজারগুলি বন্ধের কারণে আনাজ বিক্রি নিয়েও তৈরি হয়েছে সমস্যা। এর ফলে আনাজ চাষে উৎসাহী হারাচ্ছেন চাষিরা। এরকম চলতে থাকলে খাদ্য সঙ্কট আশঙ্কা তৈরি হতে পারে আশঙ্কা সব মহলে।
কৃষি প্রধান পূর্ব মেদিনীপুরে গত কয়েক বছরে উচ্চ ফলনশীল আনাজের চাষ বেড়েছে। আনাজের পাশাপাশি এখানে চাষ হয় নানা ধরনের শাকও। আনাজ ও শাক চাষের বীজ কিনতে চাষিদের ভরসা বীজ দোকান এবং জেলার হাট। লক ডাউনের গেরোয় বীজ দোকান এবং হাট— দু’টোই বন্ধ। ফলে এই মুহূর্তে দোকান থেকে বীজ কিনতে পারছেন না চাষিরা।
প্রতি বছর মরসুমের এই সময় শসা, ঝিঙে, চিচিঙে ইত্যাদি আনাজ ব্যাপক হারে চাষ হয়। করোনা আতঙ্ক শুরু হওয়ার আগে কিছু পরিমাণ আনাজ চাষ হলেও এখন নতুন করে চাষ একেবারেই বন্ধ। আনাজ বাজারগুলি বন্ধ থাকায় তা বিক্রির ক্ষেত্রেও সমস্যা তৈরি হয়েছে। ফলে আনাজ চাষে আগ্রহ নেই চাষিদের। পাঁশকুড়ার পূর্ব বাকুলদা গ্রামের আনাজ চাষি বিশ্বজিৎ মাজি বলেন, ‘‘বীজের দোকান বন্ধ থাকায় আনাজ চাষের প্রয়োজনীয় বীজ সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। অন্যদিকে যেটুকু আনাজ ফলছে, তা বিক্রিও করা যাচ্ছে না। ফলে আর নতুন আনাজ চাষ করছি না।’’
পাঁশকুড়া স্টেশন বাজারের সব থেকে বড় বীজের দোকানটি লক ডাউনের সময় থেকেই বন্ধ। ফলে পাঁশকুড়া ও কোলাঘাটের বিস্তীর্ণ এলাকার আনাজ চাষি সংগ্রহ করতে পারছেন না। পুলিশি অভিযান চলায় বন্ধ গ্রামের দিকের বীজ দোকানগুলিও। মাইশোরার মনসাপুকুর বাজারের একটি দোকানের মালিক বিশ্বনাথ সামন্ত বলেন, ‘‘পুলিশ এসেছিল। মুদির দোকান ও ওষুধ দোকান ছাড়া বাকি সমস্ত দোকান বন্ধ রাখতে বলেছে। তাই বন্ধ রেখেছি। ফলে চাষিরা যেমন চাষ করতে পারছে না,আমিও ক্ষতির মুখে পড়েছি।’’
এই পরিস্থিতিতে বীজ দোকান খুলে রাখার পাশাপাশি আনাজ বাজারগুলিকে সচল রাখার দাবি তুলেছেন চাষিরা। কৃষক সংগ্রাম পরিষদের সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র নায়ক বলেন, ‘‘প্রশাসনের উচিত আনাজ ও শাক বীজের দোকানগুলি খুলে রাখার অনুমতি দেওয়া। পাশাপাশি আনাজ বাজারগুলি যাতে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করে সচল রাখা যায়, সে বিষয়েও প্রশাসনকে পদক্ষেপ করতে হবে। এটা না করা গেলে খাদ্য সঙ্কট দেখা দিতে পারে।’’ এই বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি। সঠিক পর্যবেক্ষণ করে কিছু কিছু জিনিসের ওপর লকডাউন শিথিল করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy