Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

আয়ুষে চলছে করোনা হাসপাতাল হোমিয়োপ্যাথ, আয়ুর্বেদেও ভরসা

মেদিনীপুর শহরতলির খাসজঙ্গলের আয়ুষ হাসপাতালকেই করোনা হাসপাতাল করা হয়েছে।

রূপান্তরিত: আয়ুষ হাসপাতালই এখন করোনা হাসপাতাল। নিজস্ব

রূপান্তরিত: আয়ুষ হাসপাতালই এখন করোনা হাসপাতাল। নিজস্ব

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২০ ০২:৩০
Share: Save:

মেদিনীপুরের করোনা হাসপাতাল সামলাচ্ছেন হোমিয়োপ্যাথি, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকেরাও। সূত্রের খবর, হাসপাতালে যতজন চিকিৎসক রয়েছেন, তার অর্ধেকই হোমিয়োপ্যাথি, আয়ুর্বেদিক। এক সূত্রের দাবি, জেলায় অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসকের সঙ্কট আছে। ওই হাসপাতালের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসক মেলেনি। তাই হোমিয়োপ্যাথি, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকও রাখতে হয়েছে।

সঙ্কট অবশ্য মানতে নারাজ জেলা স্বাস্থ্য দফতর। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘জেলায় চিকিৎসকের তেমন সমস্যা নেই। করোনা হাসপাতালে যে সংখ্যক চিকিৎসক থাকার কথা তাই আছেন। হাসপাতাল সুষ্ঠুভাবেই চলছে।’’ তবে করোনা হাসপাতালে যে হোমিয়োপ্যাথি, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকও রয়েছেন তা মানছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। তাঁর স্বীকারোক্তি, ‘‘ওখানে অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসকের পাশাপাশি হোমিয়োপ্যাথি, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক রয়েছেন। হাসপাতাল সুষ্ঠুভাবে চালাতে সবদিক দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’ জেলার অন্য এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের দাবি, ‘‘মেদিনীপুর মেডিক্যালের যে কোনও একজন সিনিয়র ডাক্তার ওখানে রোজ রাউন্ডেও যাচ্ছেন।’’

মেদিনীপুর শহরতলির খাসজঙ্গলের আয়ুষ হাসপাতালকেই করোনা হাসপাতাল করা হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রে খবর, এটি লেভেল-১ হাসপাতাল। করোনা সন্দেহভাজনদের মধ্যে যাঁদের উপসর্গ একেবারেই কম, তাঁদের এখানে রেখে চিকিৎসা করা হবে। যাঁদের উপসর্গ বেশি, তাঁদের মেদিনীপুরের অন্য এক করোনা হাসপাতালে পাঠানো হবে। শহরতলির মোহনপুরে বেসরকারি গ্লোকাল হাসপাতালকেও করোনা হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হয়েছে। এটি লেভেল-২ হাসপাতাল। বুধবার থেকে এখানে রোগী ভর্তি হচ্ছে।

মেদিনীপুরের ওই দু’টি করোনা হাসপাতালেই ৫০টি করে শয্যা রয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালটি চালু ছিলই। ফলে, সেখানে যাবতীয় পরিকাঠামো ছিলই। আয়ুষ হাসপাতালটি অবশ্য চালু ছিল না। রাজ্যের নির্দেশে তড়িঘড়ি এখানে যাবতীয় পরিকাঠামো গড়তে হয়েছে। সূত্রের খবর, ৫০টি শয্যার করোনা হাসপাতালে সুপার, অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার ছাড়াও অন্তত ১১ জন চিকিৎসক থাকার কথা। থাকার কথা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও। অন্তত ১৩ জন স্টাফ নার্স, ৪ জন সিস্টার ইনচার্জ, ২ জন ফার্মাসিস্ট থাকার কথা। সবমিলিয়ে ৬ জন টেকনিশিয়ান থাকার কথা। ওই করোনা হাসপাতালে অবশ্য সব কিছুই অপর্যাপ্ত রয়েছে।

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রের দাবি, ওই হাসপাতালে হোমিয়োপ্যাথি, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক থাকায় রোগীদের সুবিধেই হচ্ছে। ওই সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, ওই ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা ঠেকিয়ে সুস্থ থাকার জন্য সম্প্রতি কর্মীদের একাধিক টোটকা বাতলে দিয়েছে রেল। তাতে প্রাধান্য পেয়েছে আয়ুর্বেদিক পরামর্শ। করোনা-তথ্য পেতে এবং সংক্রমণ ঠেকাতে কেন্দ্রের তরফে ‘আরোগ্য সেতু’ অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে রেলকর্মীদের আয়ুর্বেদ ও ভেষজের উপরে নির্ভর করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি দেশের আয়ুষমন্ত্রী শ্রীপদ নায়েকও দাবি করেন, যুবরাজ চার্লসকে আয়ুর্বেদিক ও হোমিয়োপ্যাথি ওষুধ মিশিয়ে দিয়ে সুস্থ করা হয়েছে। অবশ্য করোনা সংক্রমণ রুখতে আয়ুর্বেদিক টোটকা কতটা কার্যকর তা প্রমাণিত হয়নি। জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের দাবি, ‘‘করোনার মোকাবিলায় ঘরোয়া টোটকাও কার্যকর হতে পারে। তবে তা নিয়ম মেনে গ্রহণ করতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Covid-19 Midnapore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE