বাড়ছে সংক্রমণ। বাইরে বেরনো বন্ধ। তাই ভরসা হোম ডেলিভারিতে। এগরায়। নিজস্ব চিত্র
ক’দিন আগেও পাড়াটার রাস্তাঘাট ছিল জমজমাট। লকডাউন চললেও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে বাড়ির বাইরে বার হচ্ছিলেন এলাকাবাসী। কিন্তু গত দু’তিন ধরে এগরার ১ নম্বর ওয়ার্ডের ছবিটা পাল্টে গিয়েছে। ঘর থেকে বার হচ্ছে প্রায় কেউই। প্রয়োজনে খাদ্য সামগ্রী হোম ডেলিভারিও নিচ্ছেন।আর পাড়ার অনেকের মুখে একটাই বক্তব্য— ‘‘একটা ভুল সিদ্ধান্ত। তার মাসুল গুণতে হচ্ছে এগরাবাসীকে!’’
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের এক চিকিৎসকের ছেলে বিয়েবাড়িতে এসেছিলেন কলকাতার করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধ। তার পরে গত তিন-চার দিনে সন্ধান মিলেছে এগরার আরও তিন আক্রান্তের। এঁরা সকলেই কলকাতার বৃদ্ধের সংস্পর্শে এসেছিলেন। এর পর থেকেই হোম আইসোলেশনে চলে গিয়েছে ১ এবং ৩ নম্বর ওয়ার্ডের গোটা পাড়া। জরুরি দরকারেও বাড়ির কেউ রাস্তায় নামছে না। এগরা পুরসভার কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কয়েকজন যুবক হোম ডেলিভারি শুরু করেছেন। তাঁরাই গৃহবন্দি মানুষদের রেশন সহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছেন। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌছেছে যে, অনেকে এগরা শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন।
এগরার ওই বিয়েবাড়িতে আমন্ত্রিত ছিলেন চিকিৎসকের বিদেশি বন্ধুরাও। ওই বিষয়টিকে দুষছেন এগরাবাসী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চিকিৎসকের এক প্রতিবেশী বলেন, ‘‘বিয়ের অনুষ্ঠানের সময় ভারতে করোনা নিয়ে জরুরি অবস্থা জারি হয়নি। কিন্তু জমায়েত এড়িয়ে চলতে হলা হয়েছিল। ওই চিকিৎসক জমায়েত সম্পর্কে তেমন সতর্ক হয়নি। এক জন দায়িত্বশীল চিকিৎসক হিসাবে বিদেশীদের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত না করাই উচিত ছিল। একটু ভুলে গোটা এগরা শহরবাসীকে আতঙ্কে ভুগতে হচ্ছে।’’
আতঙ্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সামান্য কাশি হলেই লোকজন ছুটছেন গ্রামীণ চিকিৎসকদের কাছে। এ বিষয়ে এগরার এক গ্রামীণ চিকিৎসক বলেন, ‘‘সামান্য কাশি হলেও অনেকে সরকারি হাসপাতালে না গিয়ে আমাদের কাছে আসছেন। কারণ তাঁরা ভয় পাচ্ছেন, সরকারি হাসপাতালে গেলেই তাঁদের আইসোলেশনে রেখে দেবে।’’
তবে মানুষকে আশ্বস্ত করছে পুরপ্রধান শঙ্কর বেরা। তিনি বলেন, ‘‘লকডাউন সঠিক ভাবে মেনে চলুন। কয়েকটা দিন নিজেদের গৃহবন্দি করে রাখুন। প্রশাসনের সর্বদা সতর্ক রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy