বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা। নিজস্ব চিত্র
সাত সকালে ডোর বেল। দরজা খুলে অবাক গৃহকর্ত্রী শিখা রায়। ঝাড়গ্রাম শহরের এক বহুতলের বাসিন্দা শিখা কিছু বুঝে ওঠার আগেই গলায় পুরসভার পরিচয়পত্র ঝোলানো দুই মহিলা খাতা হাতে প্রশ্ন শুরু করলেন, ‘বিদেশ ফেরত কেউ আছেন বাড়িতে? কারও জ্বর-সর্দির উপসর্গ রয়েছে? অন্য রাজ্যে থেকে কেউ ফিরেছেন?’
করোনা শঙ্কায় ঝাড়গ্রাম শহরের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করছে পুরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত সমীক্ষক-দল। গত ২৯ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে এই সমীক্ষা। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে সমীক্ষার কাজ শেষের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। অরণ্যশহরের ১৮টি ওয়ার্ডের প্রায় ১৮ হাজার বাড়িতে যাবেন পুরসভার সমীক্ষকরা। পুর-প্রশাসক সুবর্ণ রায় বলেন, ‘‘পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মী ও স্ব-সহায়ক দলের সদস্যদের দিয়ে বাড়ি-বাড়ি সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। প্রতিদিন সংগৃহীত তথ্য স্বাস্থ্য দফতরকে জানানো হচ্ছে।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বিদেশ ও ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরেও কেউ কেউ সঠিক তথ্য জানাননি বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। কেউ আবার জ্বর-সর্দি হলেও চিকিৎসক দেখাননি। তাই এই সমীক্ষা। পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বসহায়ক দলের সদস্য মিলিয়ে ৬০ জনের দল বাড়ি-বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করছেন। এই ৬০ জনের মাথায় রয়েছেন ৭ জন সুপারভাইজার। পুরসভা সূত্রে খবর, এ পর্যন্ত চারজন বিদেশ ফেরতের তথ্য মিলেছে। তাঁরা গৃহ পর্যবেক্ষণে (হোম কোয়রান্টিন) রয়েছেন। রবিবার প্রাক্তন পুরপ্রধান দুর্গেশ মল্লদেবের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে সমীক্ষা করতে গিয়ে নেদারল্যান্ডস্ ফেরত এক ব্যক্তির তথ্য পাওয়া গিয়েছে, যিনি সম্প্রতি ফিরলেও চিকিৎসককে দেখানোর তথ্য সমীক্ষক-দলকে দিতে পারেননি।
করোনার শঙ্কায় গ্রামাঞ্চলের মানুষজন এখন অনেক সচেতন হয়েছেন। ঝাড়গ্রাম জেলার বিভিন্ন গ্রামে বাসিন্দাদের উদ্যোগে রাস্তায় ব্যারিকেড করে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু শহরবাসী এখনও সচেতন নন বলে আরও প্রচার শুরু করেছে পুরসভা। এখনও শহরে চোরাগোপ্তা কিছু টোটো চলছে। অযথা বাইক নিয়ে ঘুরছেন অনেকেই। শনিবার থেকে শহরের রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের নজরদারি তাই আরও জোরদার করা হয়েছে। সরকারি নির্দেশ অমান্য করে বাইক নিয়ে রাস্তায় বেরনোয় শনিবার সন্ধ্যায় দু’জনের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হয়েছে। হুঁশ ফেরাতে শহরের প্রধান রাস্তার তিনটি জায়গায় করোনাভাইরাসের ছবি এঁকে সচেতনতা বার্তা লেখার ব্যবস্থাও করছে পুরসভা। আজ, সোমবার ওই ছবি আঁকবেন শহরের পাঁচ তরুণ শিল্পী।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy