Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বিকল্প ব্যবস্থাপনা, ঝাড়গ্রামের করোনা হাসপাতাল মেদিনীপুরে

শনিবার থেকেই মেদিনীপুর শহরতলির ওই হাসপাতালকে করোনা হাসপাতালে রূপান্তরিত করার কাজ শুরু হয়েছে। ঝাড়গ্রাম থেকে স্বাস্থ্যকর্মীরাও এসেছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২০ ০১:৪৭
Share: Save:

আয়োজন

কোথায় শয্যা

পশ্চিম মেদিনীপুর

• আয়ুষ হাসপাতাল ৫০ (খাসজঙ্গল, মেদিনীপুর)

• গ্লোকাল হাসপাতাল ৫০ (মোহনপুর, মেদিনীপুর)

ঝাড়গ্রাম

• সেন্ট জোসেফস্‌ ১০০হাসপাতাল (ফুলপাহাড়ি, মেদিনীপুর)

দুই জেলার কোন হাসপাতাল করোনা হাসপাতালে রূপান্তরিত হচ্ছে, সেটি কোথায়, কত শয্যা থাকছে সেই পরিসংখ্যান।

সূত্র: রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ঝাড়গ্রামের করোনা হাসপাতাল হচ্ছে মেদিনীপুরে। মেদিনীপুর শহরতলির ফুলপাহাড়িতে সেন্ট জোসেফস্‌ হাসপাতাল রয়েছে। বেসরকারি এই হাসপাতালই করোনা হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হচ্ছে। ঝাড়গ্রাম জেলার সন্দেহভাজনেরা এখানে ভর্তি হবেন। বিভিন্ন মহলের মতে, রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত নজিরবিহীন। কারণ, রাজ্যের অন্য সব জেলার করোনা হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট জেলাতেই হচ্ছে। ব্যতিক্রম একমাত্র আদিবাসী অধ্যুষিত ঝাড়গ্রাম।

শনিবার থেকেই মেদিনীপুর শহরতলির ওই হাসপাতালকে করোনা হাসপাতালে রূপান্তরিত করার কাজ শুরু হয়েছে। ঝাড়গ্রাম থেকে স্বাস্থ্যকর্মীরাও এসেছেন। সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত ১৪জন স্বাস্থ্যকর্মী এসেছেন। ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক বা জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক কিছু বলতে চাননি। তবে জেলার জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ উজ্জ্বল দত্ত বলেন, ‘‘জেলায় এখনও করোনা আক্রান্তের খবর নেই। কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে পরিস্থিতি অনুযায়ী মেদিনীপুরের হাসপাতাল বা বেলেঘাটায় পাঠানো হবে।’’ আর পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্রের বক্তব্য, ‘‘জেলার জন্য আয়ুষ হাসপাতালকে করোনা হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হয়েছে।’’ ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের মতে, ‘‘ঝাড়গ্রাম আদিবাসী এলাকা। সব দিক খতিয়ে দেখেই ঝাড়গ্রামের করোনা হাসপাতাল মেদিনীপুরে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।’’

ক’দিন আগেই ভিডিয়ো বৈঠকে ঝাড়গ্রাম এবং পশ্চিম মেদিনীপুর নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর ভর্ৎসনার মুখে পড়েছিলেন ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রানি ও পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল। ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালকে করোনার চিকিৎসাকেন্দ্র করা যাবে না সাফ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ভিডিয়ো বৈঠকে আয়েষার উদ্দেশে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘ঝাড়গ্রাম নিয়ে আমার খুব চিন্তা রয়েছে। প্লিজ, আন্ডারস্ট্যান্ড দ্যা গ্র্যাভিটি অফ সিচুয়েশন।’’ এক সময়ে বিরক্তির সুরে তিনি আয়েষাকে বলেই ফেলেছিলেন, ‘‘তুমি তো একটা ডিএম, আমার থেকে তোমার বেশি জানা উচিত।’’ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ঝাড়গ্রাম আদিবাসী এলাকা। এ সব নিয়ে ‘সেন্টিমেন্ট’ তৈরি হচ্ছে। তিনি এটা হতে দেবেন না। বিকল্প খোঁজার নির্দেশ দেন তিনি।

একই ভাবে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে করোনার চিকিৎসাকেন্দ্র সরিয়ে নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এখানে সন্দেহভাজনদের জন্য পৃথক আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু করা হয়েছিল। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মির উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘আমরা কাজটা কিন্তু খুব সিরিয়াসলি করছি। মেদিনীপুর হাসপাতালে তোমরা যে ভাবে অল্পে কাজ সেরেছ, এতে আমি রিয়েলি সরি।’’ মেদিনীপুর শহরতলির কুইকোটার খাসজঙ্গলে আয়ুষ হাসপাতাল রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ওই আয়ুষ হাসপাতালই করোনা হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এখানে সন্দেহভাজনদের ভর্তি নেওয়া শুরুও হয়েছে। শনিবারও এখানে বেশ কয়েকজন ভর্তি ছিলেন। মেদিনীপুর শহরতলির মোহনপুরে থাকা গ্লোকাল হাসপাতালটিও করোনা হাসপাতালে রূপান্তরিত হচ্ছে। আয়ুষে ৫০টি শয্যা রয়েছে। গ্লোকালেও ৫০টি শয্যা থাকবে। এখানে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা হবে।

জানা যাচ্ছে, ঝাড়গ্রামে বেসরকারি হাসপাতাল নেই। বিকল্প কোনও বড় পরিকাঠামোও নেই। তাই ঝাড়গ্রামের করোনা হাসপাতাল মেদিনীপুরে করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মেদিনীপুরে প্রাথমিকভাবে দু’টি হাসপাতাল দেখা হয়েছিল। এক, রাঙামাটিতে থাকা প্যারা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। দুই, ফুলপাহাড়িতে থাকা সেন্ট জোসেফ হাসপাতাল। ঠিক হয়েছে, শুরুতে জোসেফ হাসপাতালকেই করোনা হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হবে। এখানে ১০০টি শয্যার ব্যবস্থা করা হবে। সেই মতোই পরিকাঠামো গড়ার কাজ শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE