Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

জেলা জুড়ে তৈরি হচ্ছে কোয়রান্টিন 

 জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত প্রথম পর্যায়ে জেলা জুড়ে ৪৬টি কোয়রান্টিন সেন্টার গড়ে তোলা হবে।

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২০ ০১:৪১
Share: Save:

ভিন্ রাজ্য থেকে জেলায় ফেরা মানুষের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ২০ হাজারের কাছাকাছি ঠেকেছে। এঁদের অনেকের বাড়িতেই গৃহ-পর্যবেক্ষণে থাকার যথাযথ ব্যবস্থা নেই। তাই সবদিক খতিয়ে দেখে পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন জায়গায় কোয়রান্টিন সেন্টার গড়ে তোলার তোড়জোড় শুরু হয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত প্রথম পর্যায়ে জেলা জুড়ে ৪৬টি কোয়রান্টিন সেন্টার গড়ে তোলা হবে। এর প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে সম্প্রতি জেলায় বৈঠকও হয়েছে। সেখানে ছিলেন জেলাশাসক রশ্মি কমল, জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা প্রমুখ। কোথায় কোথায় কোয়রান্টিন সেন্টার গড়ে তোলা সম্ভব, ওই বৈঠকে সে নিয়ে প্রাথমিক আলোচনাও হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর। জেলাশাসক রশ্মি কমল মানছেন, ‘‘জেলায় বেশ কিছু কোয়রান্টিন সেন্টার হচ্ছে।’’

জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘ভিন্ রাজ্য থেকে যাঁরা ফিরছেন, তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। সকলেই সপ্তাহ দুয়েক গৃহ-পর্যবেক্ষণে থাকার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। যাঁদের বাড়িতে গৃহ-পর্যবেক্ষণে থাকার ব্যবস্থা নেই, তাঁদেরই কোয়রান্টিন সেন্টারে রাখা হবে।’’ জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ভিন্ রাজ্য থেকে যাঁরা ফিরেছেন তাঁদের অনেকেই দিনমজুর। কেউ কেউ পরিবার নিয়ে এক কামরার ঘরের বাড়িতেই থাকেন। ফলে, তাঁদের পক্ষে নিজের বাড়িতে পৃথক ঘরে থাকা সম্ভব নয়। অথচ, ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরলে পৃথক ঘরে থাকা আবশ্যিক। সবদিক দেখেই রাজ্য সরকার বিভিন্ন ব্লকে ও শহরে কোয়রান্টিন সেন্টার গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছে। জেলাতেও সেই মতো পদক্ষেপও করা হচ্ছে। কোনও ব্লকে ১টি, কোনও ব্লকে আবার ৪টিও কোয়রান্টিন সেন্টারও খোলা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, জেলায় আইসোলেশনের শয্যা খুব কম নেই। ইতিমধ্যে সরকারি উদ্যোগে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৪টি, খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ৪টি, ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ৬টি, ডেবরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ৪টি এবং শালবনি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ৪টি আইসোলেশনের শয্যা হয়েছে। জেলায় পৃথকভাবে কোয়রান্টিন ওয়ার্ডও চালু হচ্ছে ডেবরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। সেখানে ৫০টি শয্যা থাকবে। এক সময়ে ঠিক হয়েছিল, জেলার গ্রামীণ হাসপাতালগুলিতে অন্তত ৫টি করে আইসোলেশনের শয্যা চালু করা হবে। পরে অবশ্য সিদ্ধান্ত বদলেছে। ঠিক হয়েছে, আপাতত প্রতিটি ব্লক ও পুরশহরগুলিতে অন্তত একটি করে কোয়রান্টিন সেন্টার গড়ে তোলা হবে। নতুন কোয়রান্টিন সেন্টার হিসেবে মূলত কিসান মান্ডি এবং ফ্লাড শেল্টারগুলিতে পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। নতুন চালু হতে চলা কোয়রান্টিন সেন্টারে সন্দেহভাজনেরা পর্যবেক্ষণে থাকবেন। এঁদের উপরে স্বাস্থ্যকর্মীরা নজর রাখবেন। এই সেন্টারগুলিতে যাঁরা থাকবেন তাঁদের জন্য ‌খাবারের জোগান থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য পরিষেবা, সব ব্যবস্থাই করা হবে।’’

জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, বুধবার পর্যন্ত ভিন্ রাজ্য থেকে ১৯,১৯৪ জন ফিরেছেন। তাই করোনা সংক্রমণের প্রকোপ আরও বাড়লে যাতে গোটা ব্যবস্থাপনা ভেঙে না পড়ে, সেই প্রস্তুতি সেরে রাখা হচ্ছে। তিনি মানছেন, ‘‘করোনা সংক্রমণের আতঙ্কে এবং সন্দেহে জেলায় গৃহ-পর্যবেক্ষণে থাকা মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। আরও বাড়তে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Quarantine Medinipur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE