—ফাইল চিত্র।
অসহায় ওরা। অসহায় প্রশাসনও।
ওরা পরিযায়ী শ্রমিক। কেউ পাঁচদিন, কেউ আবার এক সপ্তাহ হেঁটে ওড়িশা থেকে মঙ্গলবার রাত থেকে পৌঁছলেন দাঁতনের সোনাকোনিয়ায় ওড়িশা সীমান্তে। একটাই আর্জি ওঁদের—‘‘অনেক সয়েছি। এবার বাড়ি ফিরতে চাই।’’ পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিল প্রশাসনও। কিন্তু বুধবার বেলা গড়াতেই প্রকাশ্যে এল প্রশাসনের অসহায়তা। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য তাঁবু খাটিয়ে তৈরি করা হয়েছিল অস্থায়ী কেন্দ্র। মোটের উপর ৫০০ জন থাকতে পারেন সেখানে। সকালের কিছু পরেই দেখা গেল, প্রায় দ্বিগুণ সংখ্যায় হাজির হয়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা।
ফল যা হওয়ার তাই হল। খোলা আকাশের নীচে থাকতে হল শ্রমিকদের একাংশকে। আর স্বাস্থ্যপরীক্ষা! পরীক্ষার জন্য হাতে গোনা কয়েকজনের লালরসের নুমনা সংগ্রহ করা হল। আর বাকিদের থার্মাল স্ক্যানারে জ্বর মেপেই সংশ্লিষ্ট জেলায় পাঠিয়ে দিল প্রশাসন।
জেলার অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস পাল বলেন, “আমরা বুধবার দাঁতন সীমানা থেকে ৩২ জনের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করেছি। বাকিদের উপসর্গ পরীক্ষা করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
কিন্তু উপসর্গ না থাকলেও তো করোনা হচ্ছে। ফলে প্রশ্ন উঠছে এ ভাবে পরিযায়ী শ্রমিকদের ছেড়ে দেওয়ায় কি অতিরিক্ত ঝুঁকি নেওয়া হল?জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে শ্রমিকেরা মহারাষ্ট্র, গুজরাত ও দিল্লি থেকে আসবেন তাঁদের শুধুমাত্র লালারসের নমুনা সংগ্রহ হবে। এছাড়া আমাদের জেলার শ্রমিকদের সকলের লালারস পরীক্ষা হবে।” ়
বিষয়টি নিয়ে মহকুমাশাসক বৈভব চৌধুরী বলেন, “সকলের তো লালারসের নমুনা পরীক্ষা সম্ভব নয়, উপসর্গ রয়েছে কিনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। তার পরে বাসে বিভিন্ন জেলায় ওই শ্রমিকদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে।”
পরিযায়ী শ্রমিকদের অধিকাংশ মুর্শিদাবাদ জেলার বাসিন্দা। অনেক ওড়িশার বিভিন্ন নিভৃতবাস কেন্দ্রে ছিলেন। আবার অনেকেই তামিলনাডু, অন্ধপ্রদেশ-সহ দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন এলাকা থেকে ওড়িশায় এসে আটকে গিয়েছিলেন। মহকুমাশাসক বলেন, “ওড়িশা সরকার ওঁদের ছেড়ে দেওয়ায় এই পরিযায়ী শ্রমিকেরা হেঁটে আমাদের রাজ্যের সীমানায় চলে আসছেন। এত শ্রমিক একসঙ্গে চলে আসায় আমাদের ওখানে যে আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে তা ভরে যাচ্ছে।’’
ওড়িশার ভুবনেশ্বর থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিক শেখ মিয়াজউদ্দিন বলেন, “মাস দু’য়েক আগে আমরা ৬জন বারুইপুর থেকে ভুবনেশ্বরে গিয়েছিলাম। পাঁচদিন ধরে ভুবনেশ্বর থেকে হেঁটে রাজ্যের সীমানায় পৌঁছলাম। খোলা আকাশের নীচে ছিলাম। সামাজিক দূরত্ব রাখা সম্ভব হয়নি। পরীক্ষা হলেই করোনা আছে কি না বোঝা যাবে!”
এ দিনও জেলায় আটকে থাকা বিভিন্ন জেলার পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা হয়। খড়্গপুরের বিদ্যাসাগর শিল্পতালুক থেকে কয়েকশো শ্রমিককে উপসর্গ পরীক্ষা করে বাসে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা হয়।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy