জীবাণুনাশক স্প্রে দমকল কর্মীদের। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
দিন দু’য়েক আগে বাজারের কয়েকশো মিটারের মধ্যে এক আবাসনে করোনা পজ়িটিভ রোগীর সন্ধান মিলেছে। কিন্তু সংঙ্কীর্ণ পরিসরে চলা বাজারে চেনা ভিড়ের কোনও পরিবর্তন নেই বলে অভিযোগ। বাজার সরানোর জন্য স্থানীয় প্রশাসনের তরফে পরিকল্পনাও করা হয়েছিল। কিন্তু আপত্তি করেছিল বাজার কমিটি। যা দেখে অনেকে বলছেন, শহরের থেকে গ্রামীণ এলাকার মানুষ অন্তত বাজার হাটের ব্যাপারে বেশি সচেতন।
হলদিয়ায় গত চার-পাঁচ দিনে তিন জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু তাতেও শহরবাসীর একাংশের হুঁশ ফিরছে না বলে অভিযোগ। হলদিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় বাজার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের মাখনবাবুর বাজার। রাজ্য সরকারের প্রথম দফায় পূর্ব মেদিনীপুরের গণ্ডিবদ্ধ এলাকার (কনটেনমেন্ট) যে তালিকা দিয়েছিল, তাতে মাখবাবুর বাজারটি পড়েনি। স্বাভাবিক ভাবেই এই বাজরে খাদ্য সামগ্রী কিনতে আসা মানুষের
ভিড়ও কমেনি।
কিন্তু দিন তিনেক আগে এই বাজারের লাগোয়া এক আবসানের এক বাসিন্দা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ওই বৃদ্ধ কলকাতায় চিকিৎসা করিয়ে ফিরেছিলেন। পুলিশ ও প্রশাসন ওই আবাসনকে ‘সিল’ করেছে। বুধবার আবাসন সংলগ্ন এলাকায় জীবাণুনাশক ছড়িয়েছে দমকল।
কিন্তু এর পরেও এ দিন সকালে মাখনবাবুর বাজারে ভিড় দেখে চিন্তত এলাকাবাসী। তাঁদের একাংশের প্রশ্ন, কেউ বাজারকে হেলিপ্যাড ময়দানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল না! স্থানীয় বাসিন্দা কাকলি দাস, বৈদ্যনাথ ঘোষেরা জানাচ্ছেন, অবিলম্বে বাজার সরিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত। বিশেষ করে মাছের বাজারটি। প্রতিদিনই কিছু মানুষের মাস্ক পরে রাস্তার পাশে চেয়ার পতে আড্ডা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের দাবি, শহরের থেকে গ্রামীণ এলাকার মানুষ বেশি সচেতন।যেমন দ্বারবেড়িয়া এলাকায় মোবাইল আনাজ বাজার খোলা হয়েছে। সেখানে ফোন করলে বাড়িতে আনাজ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
যদিও হলদিয়ার পুরপারিষদ (স্বাস্থ্য) আজিজুল রহমান বলেন, ‘‘হলদিয়ায় সংক্রমিত প্রত্যকেরই বাইরের যোগ রয়েছে। করোনা রুখতে পুরসভা সব সময় তৎপর।’’ উল্লেখ্য, লকডাউনের প্রথম দিকে মাখনবাবুর বাজার হেলিপ্যাড ময়দানে সরিয়ে নিয়ে যেতে উদ্যাগী হয়েছিল পুরসভা। তবে সে সময় বাজার কমিটি সরে যেতে চায়নি। করোনার এত প্রকোপের পরে এখনও নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় বাজার কমিটি। বাজার কমিটির সম্পাদক শুভেন্দু সর্দারের কথায়, ‘‘ঝড়-বৃষ্টির সময় বাজার সরিয়ে নিয়ে যেতে সমস্যা রয়েছে। আমরা তো এখানে নিয়ম মেনেই বিক্রিবাটা করছি।’’ যদিও বাস্তব ছবিটা সম্পূর্ণ আলাদা।
বাজার সংলগ্ন যে এলাকার বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, সেটি ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে পড়ে। এ দিন ওই এলাকা এবং বাজার পরিদর্শনে যান জেলাশাসক পার্থ ঘোষ, জেলা পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়, পুরপ্রধান শ্যমুলকুমার আদক, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল। তার পরে এ দিন বিকেলের বাজার ছিল কার্যত ফাঁকা।
হলদিয়ার মহকুমাশাসক অবনীত পুনিয়া বলেন, পাশাপাশি দুটি আবাসনকে গণ্ডিভুক্ত করা হয়েছে। সেখানে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছনোর জন্য লোক ঠিক করা হয়েছে। আবাসনের ম্য্যানেজার অর্ডার নিয়ে রাখবেন। বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy