প্রতীকী ছবি।
করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫০০-র গণ্ডি পার হল পূর্ব মেদিনীপুরে।
এগরায় একটি বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠান যোগে গত ২৮ মার্চ প্রথম করোনা আক্রান্তের হদিস মিলেছিল জেলায়। পরে তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক এবং হলদিয়ায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৩১ মে পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ ছুঁয়েছিল। কিন্তু তারপর ভিন্ রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকেরা ফেরার পরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। শনিবার পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৯৫। রবিবার নতুন করে আরও ৫২ জন করোনায় আক্রান্ত হন। অর্থাৎ ৪১ দিনের মধ্যে সাড়ে চারশো জনের বেশি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন জেলায়।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে পরিযায়ী শ্রমিক থাকলেও অনেকের কলকাতা ও হাওড়ার মতো করোনা আক্রান্ত প্রবণ এলাকায় যাতায়াতের যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে। ফলে জেলা জুড়ে বাসিন্দাদের উদ্বেগও বাড়ছে। করোনা সংক্রমণ রোধে রাজ্য সরকার নতুন করে গণ্ডিবদ্ধ এলাকা চিহ্নিত করে সেই এলাকায় বাসিন্দাদের বাড়ির বাইরে বের হওয়া এবং জমায়েত এড়াতে ‘লকডাউন’ কার্যকর করছে। তমলুক, হলদিয়া ও পাঁশকুড়া পুরসভার কিছু ওয়ার্ড-সহ বিভিন্ন ব্লক মিলিয়ে জেলায় ১২টি এলাকা গণ্ডিবদ্ধ ঘোষিত হয়েছে। ৯ জুলাই থেকে এই সব এলাকায় লকডাউন কার্যকর হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসন সূত্রে খবর, আনলক পর্ব শুরু হয়েছিল পয়লা জুন থেকে। সরকারি-বেসরকারি অফিস খোলার পাশাপাশি বাস চলাচল ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান খোলার অনুমতি দেয় রাজ্য সরকার। এমনকী শর্ত সাপেক্ষে বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানের অনুমতিও দেওয়া হয়। এর সুযোগ নিয়ে জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রকাশ্যে মিছিল, সভাও করতে শুরু করে। কিন্তু জেলায় ক্রমশ করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে থাকায় যা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে সাধারণ মানুষের। অনেকের অভিযোগ, এক দিকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে প্রকাশ্যে মিছিল-সভা করছে শাসক দল। একই ভাবে বামফ্রন্ট, কংগ্রেসের তরফেও মিছিল করা হচ্ছে। অন্যদিকে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে মিছিল-সভায় কমতি নেই কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির। করোনা সংক্রমণ বাড়ায় এ ভাবে প্রকাশ্যে জমায়েত বন্ধ করতে রাজনৈতিক দলগুলির কাছে সদর্থক ভূমিকা পালনের দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা।
সাম্প্রতিক কালে কয়েকটি জায়গায় দলীয় মিছিলের কথা স্বীকার করলেও বিজেপির জেলা (তমলুক) সভাপতি নবারুণ নায়েক বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার বিভিন্ন এলাকাকে গণ্ডিবদ্ধ ঘোষণা করে লোকজনের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ ও জমায়েত বন্ধের নির্দেশ জারি করেছে। আমরা তার আগে থেকেই দলীয় ভাবে জেলার সর্বত্র সভা-মিছিল বন্ধ করেছি। এমনকী ৯ জুলাই বিধানসভা ভিত্তিক যে ভার্চুয়াল সভার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল তাও বন্ধ করা হয়েছে।’’
তৃণমূলের জেলা সভাপতি শিশির অধিকারীর দাবি, ‘‘করোনা পরিস্থিতির কারণেই দলীয় ভাবে বড় মিছিল-সভায় নিষেধ করা হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে কর্মসূচি পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, ‘‘করোনার কারণেই ৯ জুলাই থেকে জেলার সর্বত্র প্রকাশ্য মিছিল-সভা বন্ধ রাখার জন্য আমরা দলীয়ভাবে নির্দেশ দিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy