Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

দোকান খুলতেই দূরত্ব বজায় রেখে মিষ্টিমুখী জনতা

সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী আপাতত প্রতিদিন বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত খোলা থাকবে মিষ্টির দোকান। একটি মিষ্টি দোকানের মালিক দীপঙ্কর জানা জানান,  দোকান বন্ধ থাকায় বেশ কিছু কর্মী বাড়ি ফিরে গিয়েছেন।

মঙ্গলবার এ ভাবেই বিক্রি করা হল মিষ্টি। হলদিয়ার একটি দোকানে।

মঙ্গলবার এ ভাবেই বিক্রি করা হল মিষ্টি। হলদিয়ার একটি দোকানে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২০ ০৪:১৪
Share: Save:

দোকান খুলতেই হই হই করে হাজির ক্রেতা। লকডাউনের বাজারে এমনটা আশা করেননি মিষ্টি বিক্রেতা। কিন্তু সরকারি ঘোষণার পর মঙ্গলবার দুপুরে হলদিয়া শহরের বেশ কিছু নামী মিষ্টির দোকান ১২টায় খোলার আগেই সেখানে হাজির হয়ে যান মিষ্টিপ্রেমীরা। গোল দণ্ডি কাটা বৃত্তের মধ্যে দাঁড়িয়ে থেকে চলতে থাকে দোকান খোলার প্রতীক্ষা। রসগোল্লা, পান্তুয়া, সন্দেশ, কালোজাম-সহ বেশ কিছু আইটেম আনা হয়েছিল হলদিয়ার ওই মিষ্টির দোকানে। কিন্তু দোকান খোলার দু’ঘণ্টার মধ্যেই শেষ মিষ্টির ভাণ্ডার।

সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী আপাতত প্রতিদিন বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত খোলা থাকবে মিষ্টির দোকান। একটি মিষ্টি দোকানের মালিক দীপঙ্কর জানা জানান, দোকান বন্ধ থাকায় বেশ কিছু কর্মী বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। তা ছাড়া মিষ্টি তৈরির যে প্রধান উপকরণ ছানা তা পাওয়ার ক্ষেত্রেও সমস্যা রয়েছে। কারণ রেল ও অন্যান্য যানবাহন বন্ধ। সাঁতরাগাছি থেকে মোষের দুধ, পাঁশকুড়া, ঘাটালের চৈতন্যপুর থেকে ১২০০ লিটার দুধ এখানকার একাধিক মিষ্টির দোকানে আসে। কিন্তু বর্তমান অবস্থায় ওই পরিমাণ দুধ পাওয়া যাবে না। স্থানীয়ভাবে তাঁরা এ দিন ৭০০ লিটার দুধ পেয়েছেন। তাতেই কাজ চালানো হচ্ছে।’’ শিল্পশহরের আর এক মিষ্টি বিক্রেতা জানান, লক ডাউনের পর কর্মীদের বাড়ি যাওয়ার জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাই দোকান খোলার অনুমতি মিললেও তা কতটা কার্যকর হবে তা ভাবনার বিষয়। অনেকেই বিশেষ গাড়ি করে কর্মীদের আনার কথা ভাবছেন। সে ক্ষেত্রে প্রশাসনের অনুমতি নেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে। বিশেষ করে যাঁরা দুধের জোগান দেন তাঁরা কী ভাবে দুধ পোঁছে দেবেন সেটাও প্রশাসনের দেখা উচিত।

এ দিন এক মিষ্টি বিক্রেতা চন্দন সামন্ত বলেন, ‘‘নানা বিধি মেনেই মিষ্টি বিক্রি করছি। দোকানের বাইরে দূরত্ব থেকে ক্রেতাদের দাঁড়ানোর জন্য বৃত্ত আঁকা রয়েছে। তবে দোকান খোলার আগে থেকেই মিষ্টি নিতে মানুষজন চলে এসেছিলেন। দুপুরের মধ্যে সব মিষ্টি শেষ।’’ হলদিয়ার দুর্গাচকের মিষ্টি বিক্রেতা সিদ্ধেশ্বর জানা, ব্রজলালচকের শচীন সামন্ত বলেন, ‘‘দোকান খোলা হলেও দ্রুত নষ্ট হয়ে যায় এমন মিষ্টি তৈরি করা হবে না।’’

মহিষাদলের সিনেমা মোড়ে মিষ্টি কিনতে এসেছিলেন দেবাশিস মাইতি। তিনি বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখেই মিষ্টি কিনলাম। বাড়িতে বাচ্চারা অনেক দিন মিষ্টি খায়নি । ওদের জন্যই ছানার মুড়কি কিনে নিয়ে যাচ্ছি। কারণ এটা কিছুদিন রেখে খাওয়া যায়।’’

মিষ্টি দোকান খোলায় সবচেয়ে খুশি দুধ বিক্রেতারা। চৈতন্যপুরের এক দুধ বিক্রেতা বলেন, ‘‘আমাদের দুধ সব মিষ্টির দোকানে দেওয়া হয়। মিষ্টির দোকান না খোলায় হঠাৎ এত দুধ কী করব ভেবে কুলকিনারা পাচ্ছিলাম না। খোলা বাজারে বিক্রি করা যাচ্ছিল না। মিষ্টির দোকান খোলায় কিছুটা হলেও ক্ষতি পুষিয়ে যাবে।’’

কী বলছেন মিষ্টিপ্রেমীরা?

হলদিয়ার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘তৈরি মিষ্টি জরুরি পরিষেবার মধ্যে পড়ে না। তবু দোকান খোলার সরকারি ঘোষণায় খুশিই হবেন আমার মতো মিষ্টিপ্রেমীরা।’’

অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE