Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সম্পন্নকেও বাড়ি, ফের ‘দুর্নীতি’ গুয়াবেড়িয়ায়

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, একশো দিনের কাজে উপভোক্তাদের কাছ থেকে এর আগে পঞ্চায়েত তহবিল খাতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল পরিচালিত এই পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে।

 রাধাকান্ত মহাপাত্রের সেই পাকা বাড়ি। যাকে কেন্দ্র করে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে পঞ্চায়েতে। নিজস্ব চিত্র

রাধাকান্ত মহাপাত্রের সেই পাকা বাড়ি। যাকে কেন্দ্র করে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে পঞ্চায়েতে। নিজস্ব চিত্র

কেশব মান্না
সুতাহাটা শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৮ ০২:৪১
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, একশো দিনের কাজে উপভোক্তাদের কাছ থেকে এর আগে পঞ্চায়েত তহবিল খাতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল পরিচালিত এই পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। যা একেবারেই নিয়মবিরুদ্ধ। বিষয়টি নিয়ে হইচই হওয়ায় শেষ পর্যন্ত উপভোক্তাদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা ফেরত দেয় পঞ্চায়েত। হলদিয়ার সুতাহাটা ব্লকের গুয়াবেড়িয়া নামে ওই পঞ্চয়েত ফের শিরোনামে। এ বার উঠল প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ।

অভিযোগ, নিজস্ব ঝাঁ চকচকে দোতলা বাড়ি রয়েছে এমন ব্যক্তিকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির টাকা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে। ওই পঞ্চায়েত এলাকার এরকম বেশ কয়েকজনের ব্যাঙ্ক আক্যাউন্টে সরকারি অনুদানের টাকা পড়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন প্রকৃত উপভোক্তারা।

পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির জন্য উপভোক্তাদের প্রথম কিস্তির টাকা তাঁদের ব্যাঙ্ক আক্যাউন্টে দেওয়া হয়েছে। সেই উপভোক্তাদেরই একাংশের অভিযোগ, গুয়াবেড়িয়া (দক্ষিণ) বুথে রাধাকান্ত মহাপাত্র নামে এমন এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে ওই টাকা এসেছে যাঁর দোতলা পাকা বাড়ি রয়েছে। তাঁদের দাবি, রাধাকান্তবাবুর স্ত্রী ঝর্না মহাপাত্র ওই বুথের পঞ্চায়েত সদস্য। রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে তাই এ ভাবে সরকারি অনুদান নয়ছয় করা হচ্ছে। জ্যোৎস্না মহাপাত্র নামে গ্রামের এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘উপভোক্তাদের তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও আমি অনুদান পাইনি। বাধ্য হয়ে বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।’’

শুধু টাকাই নয়, আবাস যোজনায় বাড়ি বিলিতেও অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একই ‘উপভোক্তা’ একাধিকবার আবাস যোজনায় অনুদান পেয়েছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। ২০১১ সালে মধুসূদন দাস ওরফে শম্ভু দাস নামে ইন্দিরা আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির টাকা পেয়েছিলেন। কিন্তু চলতি অর্থবর্ষে ফের তাঁর ছেলে একই রকম অনুদান পাওয়ায় দুর্নীতির অভিযোগে সরব বাসিন্দারা।

প্রশাসন সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ২০১১ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী প্রাপকদের তালিকা বানানো হয়েছিল। সেইমত প্রাপকেরা অর্থ পাচ্ছেন। যদিও সরকারি নিয়মেই বলা হয়েছে, কোনও উপভোক্তা একবার অনুদান পেলে দ্বিতীয়বার আর পাওয়ার অধিকারী হবেন না। রাজ্যের পঞ্চায়েত আইনের এই বিধিকে সামনে রেখে ‘স্বচ্ছতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারা।

পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নিয়ে প্রধান শেখ সাবিরউদ্দিন বলেন, ‘‘গ্রাম সংসদ যাদের নাম চূড়ান্ত করেছে তাঁদেরই নামের তালিকা ব্লক অফিসে পাঠিয়ে দিয়েছি। পরে ব্লক প্রশাসনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’ যদিও সুতাহাটার বিডিও সঞ্জয় শিকদার বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের সমীক্ষা অনুযায়ী প্রাপকদের নাম পাঠানো হয়। তবে এরকম কিছু হলে পঞ্চায়েতের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে তারা নেতিবাচক কিছু জানায়নি।’’

5.

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Corruption Pradhan Mantri Awas Yojana
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE