Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Cyclone Amphan

আশ্রয়ে ৫২ হাজার

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এ দিন  সকালের মধ্যেই কয়েক হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

রাস্তায় ভেঙে পড়া গাছের ডাল সরিয়ে হাসপাতালের পথে এক নার্স। বুধবার রাতে ঘাটাল শহরে। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

রাস্তায় ভেঙে পড়া গাছের ডাল সরিয়ে হাসপাতালের পথে এক নার্স। বুধবার রাতে ঘাটাল শহরে। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২০ ০০:৫৭
Share: Save:

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরেও। প্রচুর গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে। অনেক বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাড়ির চাল উড়ে গিয়েছে। দুর্যোগের মধ্যেই বুধবার বিকেলে ওড়িশা সীমানা লাগোয়া দাঁতনের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান জেলাশাসক রশ্মি কমল। সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক উত্তম অধিকারী, অতিরিক্ত জেলাশাসক সৌর মণ্ডল।

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এ দিন সকালের মধ্যেই কয়েক হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। এঁদের বিভিন্ন ‘রেসকিউ সেন্টারে’ রাখা হয়েছে। ওই সেন্টারগুলির বেশিরভাগই স্কুলবাড়ি। দাঁতনের দু’টি ‘রেসকিউ সেন্টার’ পরিদর্শন করেছেন জেলাশাসক। কথা বলেছেন সেখানে উঠে আসা মানুষদের সঙ্গে। সকলকে মাস্ক পরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। দুর্গত মানুষদের থাকা- খাওয়ার বন্দোবস্তের তদারকি করেছেন জেলাশাসক। এলাকা পরিদর্শনের ফাঁকে সন্ধ্যায় জেলাশাসক বলেন, ‘‘যাঁরা বিপদসঙ্কুল এলাকায় বসবাস করেন, তাঁদের আমরা এদিন সকালের মধ্যেই নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে এনেছিলাম। রেসকিউ সেন্টারে সকলের থাকা- খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’

জেলায় কত মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরাতে হয়েছে? জেলাশাসক বলেন, ‘‘প্রায় ৫২ হাজার মানুষকে আমরা নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে এনেছিলাম।’’

মেদিনীপুর শহরে বহু গাছ ভেঙে পড়েছে। গভীর রাত পর্যন্ত জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। ঝড়ের প্রভাব পড়েছে কেশপুর, শালবনি, মেদিনীপুর সদর ব্লকেও। বেশ কিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই সব এলাকায়।

মেদিনীপুর মেডিক্যাল, মিশন গার্লস চত্বরেও গাছ ভেঙেছে। মেদিনীপুরের পুর-প্রশাসক দীননারায়ণ ঘোষ বলেন, ‘‘ভেঙে পড়া গাছ দ্রুত সরানো হয়েছে।’’ বুধবার সকাল থেকেই পশ্চিম মেদিনীপুরে বৃষ্টি শুরু হয়। টানা বৃষ্টিতে কংসাবতীর জল বেড়েছে। আমপানের মোকাবিলায় ব্লকস্তরে, মহকুমাস্তরে, জেলাস্তরে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছিল। জেলা পরিষদেও কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছিল। জেলার ২১টি ব্লকের মধ্যে ১৪টি ব্লককে সতর্ক করা হয়েছিল। সেই সতর্কতা এখনও রয়েছে। নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষদের নিরাপদ আশ্রয় ছেড়ে এখনই বাড়ি না ফেরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব খড়্গপুর মহকুমা জুড়েও দেখা গিয়েছে। ওড়িশা ঘেঁষা দাঁতন, মোহনপুর-সহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় ২৫ হাজার মানুষকে আপাতত বিভিন্ন স্কুলে রাখা হয়েছে। মোহনপুর ব্লকের বাগদা গ্রামে গোবিন্দ পাত্রের বাড়িতে গাছ পড়ে আহত হয় তার ছেলে নবকুমার। খড়্গপুর মহকুমার ২৫ হাজার লোককে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে খড়্গপুর শহরের ১৫০০ জন রয়েছেন। ডেবরায় ২০টি মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিডিও। মহকুমাশাসক বৈভব চৌধুরী বলেন, ‘‘মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছ পড়েছে। রাত পর্যন্ত মৃত্যুর কোনও খবর নেই।

ঘাটালের মহকুমাশাসক অসীম পাল বলেন, ‘‘প্রতিটি পঞ্চায়তে লোক রাখা হয়েছে। ব্লকগুলিতে সিভিল ডিফেন্সের দল তৈরি রাখা হয়েছে। বুধবার মহকুমার মোট ১০ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হয়েছে।” পঞ্চায়েত ও পুরসভায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছিল ঘাটালে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Amphan Midnapore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE