—প্রতীকী চিত্র।
এক দিন আগেই পুর এলাকায় ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির তালিকা প্রকাশ হয়েছে। তার পর দিনেই নিয়ে তালিকায় নিয়ে দেখা গেল বিতর্ক। তমলুক পুর এলাকায় অভিযোগ উঠেছে, ক্ষতিগ্রস্তদের ওই তালিকায় নাম রয়েছে সদ্য প্রাক্তন তৃণমূলের এক কাউন্সিলরের দুই ছেলের নাম!
তমলুক পুর এলাকা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি নেই। এক হাজার ৩০০ জনের যে তালিকা প্রকাশ হয়েছে, সবই আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত বলে জানিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। সেই মতো ২০ হাজার বদলে পাঁচ হাজার করে টাকা পাবেন ক্ষতিগ্রস্তেরা। তালিকায় দেখা গিয়েছে, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা বর্তমানে ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর রঞ্জিতা জানার দুই ছেলে কুশধ্বজ জানা এবং নবকুমার জানার। দোতলা পাকা বাড়িতে থাকা কুশধ্বজ এবং নবকুমারের নাম থাকা নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই শুক্রবার দু’জনে তমলুকের মহকুমাশাসকের কাছে গিয়ে টাকা ফেরতের আবেদন জানিয়েছেন। রঞ্জিতার অবশ্য দাবি, তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানতেন না। তিনি বলেন, ‘‘এবিষয়ে আমি আগে কিছুই জানতাম না। শুক্রবার তালিকা প্রকাশের পরে ছেলেদের নাম থাকার বিষয়টি জানি। এর পরেই ওই টাকা ফেরতের জন্য প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছি।’’
এ নিয়ে সরব বিরোধী বিজেপি এবং কংগ্রেস। শনিবার বিজেপির তমলুক নগর মণ্ডল কমিটির তরফে তমলুক পুরসভা অফিসের সামনে এ নিয়ে বিক্ষোভও দেখানো হয়। বিজেপি’র তমলুক নগর মণ্ডল সভাপতি সুকান্ত চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘পুরসভার ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় প্রকৃতদের অনেকের নাম নেই। এদিকে, প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলরের ছেলেদের নাম রয়েছে। এখন সব কিছু ফাঁস হয়ে যাওয়ায় টাকা ফেরত দেওয়ার নাটক করছেন।’’ ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তথা তমলুক শহর কংগ্রেসের নেতা শেখ জিয়াদের অভিযোগ, ‘‘ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরিতে যে ব্যপক দুর্নীতি ও স্বজনপোষণ হয়েছে, এই ঘটনা তাঁর প্রমাণ। আমরা চাই ফের তদন্ত করে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি অর্থ সাহায্য দেওয়া হোক।’’
দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে তমলুক পুর প্রশাসক রবীন্দ্রনাথ সেন বলেন, ‘‘পুরসভায় আবেদনের ভিত্তিতে তদন্ত করে ওই তালিকা তৈরি হয়েছে । তাতে পুরসভার জনপ্রতিনিধিদের পরিবারের কেউ আবদেন করেছিলেন কি না জানা নেই। তালিকায় দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ ঠিক নয়। কেউ যদি মনে করেন তিনি বঞ্চিত হয়েছেন তিনি পুরসভায় আবেদন জানাতে পারেন। আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করব।’’
একই ঘটনা ঘটেছে ভগবানপুরেও। সেখানে তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে ক্ষতিপূরণের ২০ হাজার টাকা। সেই টাকা ফেরত দিতে চেয়ে বিডিও’র কাছে আবেদন জানিয়েছেন ওই নেতা। ভগবানপুর-১ ব্লকের কোটবাড় ১০ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূল পরিচালিত। সেখানের পঞ্চায়েত সদস্য বিভাসচন্দ্র সাঁই। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ঝড়ে তাঁর বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি এবং তিনি ক্ষতিপূরণের আবেদন না করলেও তাঁর অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়েছে। বিভাস বলেন, ‘‘আবেদন না করেও আমার অ্যাকাউন্টে আমপানের ক্ষতিপূরণের ২০ হাজার টাকা জমা দেওয়া হয়েছে। যেহেতু আমার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, তাই টাকা ফেরত দিতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy