প্রতীকী ছবি।
দুই ছাত্রীর উপরে অ্যাসিড হামলার ঘটনার পর একদিন কেটে গেলেও বুধবার রাত পর্যন্ত অভিযুক্তদের ধরতে পারেনি পুলিশ।
সোমবার রাতে দাসপুরের সুপা গ্রামের বাসিন্দা নবম শ্রেণির দুই পড়ুয়া টিউশন থেকে বাড়ি ফিরছিল। গ্রামের চেনা পথেই তাদের উপর অ্যাসিড হামলা হয়। ঘটনার পরই যন্ত্রণায় রাস্তাতেই তারা লুটিয়ে পড়ে। দ্রুত তাদের উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। তাদের মধ্যে একজনকে মঙ্গলবার ছেড়ে দেন চিকিৎসকেরা। এখনও একজন মেদিনীপুর মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। ওই ছাত্রীদের মামা বলেন, “ভাগ্নির অবস্থা স্থিতিশীল। ওষুধ, ইঞ্জেকশনের ঘোর কাটলেই কান্নায় ভেঙে পড়ছে সে। আমরা চাই, দ্রুত অভিযুক্তদের খুঁজে বার করুক পুলিশ।”
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই ছাত্রীর পবিবারের তরফে কয়েকজনের নামের তালিকা পুলিশের হাতে দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রয়োজনে ওই যুবকদের থানায় নিয়ে জেরা করা হতে পারে। দাসপুর-ঘাটালে বারবার তরুণীদের উপর অ্যাসিড হানার ঘটনায় ক্ষুব্ধ ঘাটালের বাসিন্দারা। তাঁদের প্রশ্ন, আর কবে খোলা বাজারে অ্যাসিড বিক্রির বাড়বাড়ন্ত বন্ধ হবে। পুলিশ-প্রশাসনই কবে সচেষ্ট হবে।
ঘাটাল-দাসপুর সোনার কারবারে বেশ পরিচিত জনপদ। এখানে অসংখ্য সোনা-তামা গয়না তৈরির সরঞ্জামের দোকান রয়েছে। সেখানেই অবাধে বিক্রি হয় অ্যাসিড। খোলা বাজারে বিয়ারের খালি বোতলে সালফিউরিক ও নাইট্রিক অ্যাসিড বিকোচ্ছে।এ মন ঘটনা ঘটলেই পুলিশ তেড়েফুঁড়ে নামে। প্রসঙ্গ থিতিয়ে গেলেই পুরানো ছবি ফিরে আসে। ভুক্তভোগীদের বক্তব্য, নিয়ম না মেনে অ্যাসিড বিক্রি হচ্ছে। জেনে-বুঝেও পুলিশ-প্রশাসনের হেলদোল নেই। এতেই বাড়ছে অ্যাসিড হানার মতো ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার রাতের ঘটনায় এখনও অবধি চারজনের নাম পাওয়া গিয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজন পড়ুয়াও রয়েছে। যে ছাত্রী হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরেছে তার সঙ্গেও কথা বলেছে পুলিশ। তার কাছে দুই বন্ধুর নাম পাওয়া গিয়েছে। ঘাটালের মহকুমা পুলিশ অফিসার কল্যাণ সরকার বলেন, “দ্রুতই অভিযুক্ত ধরা পড়বে।’’
এ দিন সুপা হাইস্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে একটি মৌন মিছিল করে। তাতে অংশ নেন শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল দ্রুত দোষীদের গ্রেফতার করতে হবে। ছাত্রীরা যাতে ঠিকঠাক ভাবে চিকিৎসায় দ্রুত সেরে উঠে তার ব্যবস্থা করতে হবে। খরচের আর্থিক বহন করার দাবি জানানো হয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সন্দীপ সিংহ বলেন, ‘‘স্কুলের পঞ্চম পিরিয়ডের পর স্কুলের ছেলেমেয়েরা মিছিল করে। তাতে আমাদের শিক্ষকরা অংশ নেয়। আমরা চাই, ওই দুই ছাত্রী যাতে দ্রুত স্কুলে ফিরে আসে। ওই ঘটনার দোষীদের গ্রেফতার করার দাবি জানানো হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy