এই গাড়িতেই বাড়িতে ফিরছিলেন সজল ও সুরজিৎ। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
কালীপুজো উপলক্ষে অনুষ্ঠানে গিয়েছিল অর্কেস্ট্রা দল। সেখান থেকে ফেরার পথে কোলাঘাটে বুধবার ভোররাতে ঘটল দুর্ঘটনা। যাতে প্রাণ হারিয়েছেন সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্র-সহ ওই দলের দুই সদস্য। আহত তিনজনের মধ্যে দু’জন মহিলা। উল্লেখ্য, দুর্ঘটনাটি যেখানে ঘটেছে, ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের সেই অংশের উল্টোদিকের লেনেই বসানো রয়েছে একটি স্পিড ক্যামেরা। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে সেটি এখনও চালু করা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, দুর্ঘটনায় মৃত ছাত্রের নাম সুরজিৎ দাস (১৬)। তার বাড়ি নন্দকুমার থানার বরগোদা গ্রামে। সুরজিতের বাবা দেবাশিসবাবুর অর্কেস্ট্রা দল রয়েছে। ওই দলেই সুরজিৎ ড্রাম সেট বাজাত। দলে সুরজিতের দিদি শর্মিলা দাস গান করতেন।
কালীপুজোয় বিভিন্ন এলাকায় সুরজিতদের দল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করছিল। গত বুধবার তাঁদের দু’জায়গায় অনুষ্ঠান ছিল। ওই দিন বিকালে কোলাঘাটের একটি অনুষ্ঠান করেছিল তাঁরা। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে অনুষ্ঠান করার পর হাওড়ার শ্যামপুরের রাধানগর গ্রামের এক কালীপুজোয় অনুষ্ঠান করতে যান। রাত তিনটে নাগাদ সেই অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর খাওয়াদাওয়া সেরে তিনটি গাড়িতে সুরজিতদের দল বাড়ির দিকে রওনা দিয়েছিল।
তিনটি গাড়ির একেবারে সামনের গাড়িতে চালক ছিলেন সজল সুকাই (২৪) নামে এক সদস্য। তিনি দলে অক্টোপ্যাড বাজাতেন। ওই গাড়ির চালকের পাশের আসনে ছিল সুরজিৎ। পিছনের আসনে বসেছিলেন সুরজিতের মা যমুনাদেবী, দিদি শর্মিলা এবং শর্মিলার স্বামী অনিন্দ্য এবং দলের এক সদস্য রজত দাস। দলের বাকি সদস্যেরা পিছনের দুটি গাড়িতে ছিলেন। গাড়িগুলি হাওড়া থেকে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে আসছিল।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ভোর সাড়ে ৪টা নাগাদ কোলাঘাটে রূপনারায়ণ সেতু পার হওয়ার পর বাবুয়া গ্রামে রাস্তার পাশে দাঁড়ানো লরির পিছনে ধাক্কা মারে সুরজিতদের গাড়ি। ধাক্কায় গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। গাড়ির সামনে থাকা সজল এবং সুরজিৎ আহত হন। আহত হন পিছনের আসনের আরোহীরাও। পিছনের গাড়ির লোকজন এবং কোলাঘাট থানার টহলরত পুলিশ গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে এবং তমলুক হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে সজলের মৃত্যু হয়। সজল ময়নার শ্রীকণ্ঠা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। সুরজিতকে তমলুক থেকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যায়।
আহত যমুনাদেবী ও শর্মিলাকে জেলা হাসপাতাল থেকে তমলুকের একটি নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করা হয়। যমুনাদেবীর পেটে আঘাত লেগেছে। শর্মিলার পা ভেঙেছে। ঘটনায় আর এক আহত রজত দাস তমলুক হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের গাড়ির চালক অসুস্থ থাকায় ওই দিন সজল গাড়ি চালাচ্ছিলেন। ভোরবেলায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা লরিতে আমাদের গাড়ি ধাক্কা মারে। সজলের ঘুম এসে যাওয়াতে ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে মনে হচ্ছে।’’ একই কথা জানিয়েছে পুলিশও। তাদের ধারণা, গাড়িচালকের ঘুম এসে যাওয়াতেই দুর্ঘটনা ঘটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy