চলছে গুড় তৈরি। নিজস্ব চিত্র।
শীত মানেই লেপ-কম্বল আর পিঠে পুলির সঙ্গে নলেন গুড়ের স্বাদ। কিন্তু সেই রসাস্বাদনে কিছুটা টান পড়ার আশঙ্কা। সৌজন্যে সেই নোট কাণ্ড। প্রতি বছর শীত পড়লেই খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করে নলেন গুড় তৈরি জন্য ঘর ছেড়ে তমলুক, কোলাঘাট, পাঁশকুড়ার বিভিন্ন এলাকায় বাসা বাঁধেন খেজুরির নূর ইসলাম, শেখ কালু, শেখ বাবুজানরা। কিন্তু এ বছর নোট বাতিলের ধাক্কায় গুড় কেনাবেচাই কমে গিয়েছে।
তমলুক শহর সংলগ্ন নারায়ণপুর গ্রামে নলেন গুড় তৈরির ‘শাল’ দেওয়া শেখ কালু জানান, ৫০ টি খেজুর গাছ ভাড়ায় নিয়ে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করা হয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ২০ কিলোগ্রাম করে গুড় হচ্ছে। প্রথম দিকে প্রতি কিলোগ্রাম ১০০ টাকা দরে বিক্রি করা হলেও খদ্দের মেলেনি। বাধ্য হয়ে তিনি এখন ৮০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। কালু বলেন, ‘‘নোট সমস্যার জন্য অনেকেই এ বছর গুড় কিনতে আসেননি। আর নলেন গুড়ের মিষ্টি তৈরি জন্য দোকানেও চাহিদা কম। আয় কমে অর্ধেক হয়ে গিয়েছে।’’
প্রতি বছর শীতের সময় খেজুরির বাঁশগোড়া, বালিচক ও নন্দীগ্রামের সুবদি এলাকার প্রায় দেড়শোর বেশি পরিবার পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে খেজুর গাছ (প্রতি গাছের জন্য ২ কিলোগ্রাম গুড় দিতে হয় গাছ মালিককে) থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করেন। এ বার নোট কাণ্ডের জেরে চাহিদা কমায় বিপাকে পড়েছেন গুড় তৈরির কারিগরেরা।
নলেন গুড়ের চাহিদা কম কেন? তমলুক শহরের বড়বাজারের মিষ্টি ব্যবসায়ী তপন মাইতি বলেন, ‘‘প্রতি বছর শীতের সময় নলেন গুড়ের রসগোল্লা, সন্দেশ প্রভৃতি তৈরির জন্য আমরা গুড় কিনে থাকি। কিন্তু নোট সমস্যার জেরে এইসব মিষ্টির চাহিদা কমে গিয়েছে।’’ তবে এত সহজে হাল ছাড়ছেন না গুড় তৈরির কারিগররা। নোটের ধাক্কা সামলে শীতে বাঙালি ফের নলেন গুড়ে মজবে, আশায় কারিগররা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy