সারা রাজ্যের সঙ্গে জ্বর বাড়ছে হলদিয়াতেও। মহকুমা হাসপাতালের হিসাব অনুযায়ী গত এক সপ্তাহে ৫০ জন জ্বরের রোগীর রক্ত পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়েছে। তার মধ্যে চার জনের রক্তে মিলেছে ডেঙ্গির জীবাণু, জানিয়েছেন হাসপাতাল সুপার সুমনা দাশগুপ্ত।
তবে এটুকুই সব নয়। এর উপর রয়েছে বেসরকারি হাসপাতাল। হলদিয়ার বিসি রায় হাসপাতালে জ্বর নিয়ে ভর্তি ১৮ জন। আর একটি নার্সিংহোমে রয়েছেন ১২ জন, তাঁদের মধ্যে একজনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু রয়েছে বলে জানিয়েছেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। দুর্গাচকের এক নার্সিংহোমে সাত জন জ্বর ভর্তি রয়েছেন। হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক কেসি জানা বলেন, ‘‘বহু রোগীই জ্বর নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন। অনেকের এনএস-ওয়ান পজেটিভ।’’
এমন পরিস্থিতিতে নড়ে বসেছে হলদিয়া প্রশাসন। টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে পুরসভা। প্রচার কাজে যুক্ত করে নেওয়া হয়েছে স্থানীয় স্কুল, ক্লাব, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং স্বনির্ভর দলের মহিলাদের। বৃহস্পতিবার সাকলে ৩৩ টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কয়েকশো মহিলাকে নিয়ে বৈঠকে বসেন সুতাহাটার বিডিও সুরজিৎ শিকদার ও সুতাহাটার বিএমওএইচ লক্ষ্মীকান্ত প্রামামিক।
বিডিও জানান, ‘‘স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের ১০০ দিনের কাজেও যুক্ত করা হচ্ছে। ডেঙ্গি সচেতনতায় আমরা গোষ্ঠীর মহিলাদের সচেতন করছি। তাঁরা তাঁদের এলাকায় গিয়ে অন্য মহিলাদের সচেতন করবেন।’’ সাফাই অভিযানের জন্য ফিনাইল ও অন্য নানা উপকরণ বিতরণ করা হবে বলেও বিডিও জানান।
পুরসভা সূত্রে খবর, ৫ নভেম্বর হলদিয়া জুড়ে চলবে ডেঙ্গি প্রতিরোধ অভিযান। সমস্ত কাউন্সিলর, পুর-কর্মী এমনকী স্থানীয় ক্লাবগুলিকেও সেই অভিযানে সামিলক করা হবে। ইতিমধ্যে হলদিয়া পুর এলাকায় বিভিন্ন ক্লাবকে সঙ্গে নিয়ে পুরসভার বনফুল প্রেক্ষাগৃহে বৈঠক করেন পুরকর্তারা। হলদিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল (স্বাস্থ্য) আজিজুল রহমান জানান, স্কুলে স্কুলে প্রচার চালানো হচ্ছে। হলদিয়া পুর এলাকার বেশিরভাগ স্কুলেই এই অভিযান হয়েছে। এ দিন হলদিয়ার ২ নম্বর ওয়ার্ডের লাবণ্যপ্রভা বালিকা বিদ্যালয় ও শ্রীকৃষ্ণ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রচার অভিযান চালানো হয়।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ডেঙ্গি প্রতিরোধে একটি বুকলেট প্রকাশ করা হয়েছে। ওয়ার্ড প্রতি ২০০ জন চিকিৎসক, সাফাই কর্মী, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পথে নামবেন আগামী রবিবার। তবে, স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন, নালা বা আগাছা সাফাইয়ের কাজে পুরসভা তেমন সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে না। বিশেষত, রেলের আওতায় থাকা জলা জমি ও বন্দর এলাকায় সাফাইয়ে অনীহা রয়েছে পুরসভার।
হলদিয়া পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ঝিকুরখালি এলাকার দু’টি পুকুর এবং একটি প্রাথমিক স্কুলের সামনে নোংরা আবর্জনা জমে থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। চেয়ারম্যান শ্যামল আদক বলেন, ‘‘এলাকার সর্বত্র সাফাই অভিযান হবে। সে জন্য সকলকে যোগ দিতে বলা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy