Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

তৃণমূলের ‘দ্বন্দ্ব’, উন্নয়নে গড়িমসির অভিযোগ

কয়েকদিন আগে একশো দিনের কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন গ্রামবাসীর একাংশ। গত শনিবার ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ধরমপুর গ্রাম সংসদে পঞ্চায়েতের উদ্যোগে দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী এক ব্যক্তির জমি সমতল করার কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু কয়েকজন গ্রামবাসী বিক্ষোভ দেখিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন বলে অভিযোগ। 

নিজস্ব সংবাদদাতা
লালগড় শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর কাজিয়ায় উন্নয়ন-কাজে গড়িমসি হচ্ছে। এমনই অভিযোগ তুলছেন লালগড় ব্লকের ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ।

কয়েকদিন আগে একশো দিনের কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন গ্রামবাসীর একাংশ। গত শনিবার ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ধরমপুর গ্রাম সংসদে পঞ্চায়েতের উদ্যোগে দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী এক ব্যক্তির জমি সমতল করার কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু কয়েকজন গ্রামবাসী বিক্ষোভ দেখিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন বলে অভিযোগ।

গ্রামবাসীদের অবশ্য অভিযোগ, গত বছর একশো দিনের কাজ করেও এখনও পর্যন্ত কয়েকটি পরিবার মজুরি পায়নি। নতুন কাজ শুরুর আগে বকেয়া মজুরি মেটানোর দাবি করেছেন তাঁরা। এই ঘটনায় বিগত পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের গরমিলের অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। যে জন্য বাসিন্দারা হাতে লেখা মাস্টার রোলের পরিবর্তে ছাপানো মাস্টার রোলে কাজের হাজিরা নথিভুক্ত করার দাবি করেছেন।

স্থানীয় সূত্রের অবশ্য খবর, ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখলকে ঘিরে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর বিরোধের জেরেই একশো দিনের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ বার পঞ্চায়েত ভোটে ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০টি আসনের মধ্যে ৮ টিতে জয়ী হয় তৃণমূল। ১ টি আসনে বিজেপি এবং আর একটি আসনে বিজেপি সমর্থিত নির্দল প্রার্থী জয়ী হন। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হুইপ অমান্য তৃণমূলের তিন বিক্ষুব্ধ সদস্য বিজেপি ও নির্দল সদস্যের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ফেলেন। ফলে পঞ্চায়েতে দুই গোষ্ঠী ৫-৫ হয়ে যাওয়ায় লটারিতে প্রধান নির্বাচিত হন বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর তৃণমূল সদস্য রেখারানি মুর্মু। উপপ্রধানও হন বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর তৃণমূল সদস্য ববিতা মাহাতো।

শাসক দলের অন্দরের রাজনীতিতে রেখারানি এবং ধরমপুর অঞ্চল সভাপতি দিলীপ মাহাতো পরস্পরের বিরোধী হিসাবেই পরিচিত। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব এমন পর্যায়ে পৌঁছয়, যে এখনও পর্যন্ত ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন উপ সমিতিগুলি কাজ শুরু করতে পারেনি বলে অভিযোগ।

দলীয় নির্দেশ অগ্রাহ্য করে বিজেপি-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে বোর্ড দখল করে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের রোষের মুখে পড়েছেন প্রধান রেখারানি। দিলীপ মাহাতো বলেন, “পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ক্ষমতায় এসেই স্বজনপোষণ শুরু করেছেন। এলাকার প্রকৃত গরিব মানুষ পরিষেবা পাচ্ছেন না। এলাকার দরিদ্র মানুষ যাতে পঞ্চায়েতের উন্নয়ন পরিষেবা যথাযথ পান, সে জন্য প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি।”

রেখারানি বললেন, “আগের বোর্ডের আমলে একশো দিনের কাজ করে কয়েকজন মজুরি পাননি। সমস্যার বিষয়টি ব্লক প্রশাসনকে জানিয়েছি।’’ এর পাশাপাশি তিনি যোগ করেন, ‘‘পুরনো সমস্যাকে অজুহাত করে কিছু মানুষ এখন একশো দিনের কাজ করতে বাধা দিচ্ছেন।”

এই বাধা কী দলের স্থানীয় কিছু লোকজন দিচ্ছেন। রেখাদেবীর জবাব, “এলাকায় বিরোধী কোথায়! সবাই তো মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের সঙ্গে রয়েছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Development Conflict TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE