Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

প্রাণীর যত্নে দুই ব্লকে দফতরের দুই চেহারা

স্থানীয়দের প্রশ্ন, দু’টি দফতরই রাজ্য সরকারের অধীন। তা হলে তাদের এমন বিপরীত হাল কেন?

খেজুরি-১ ব্লকে প্রাণী স্বাস্থ্য দফতরের অবস্থা।

খেজুরি-১ ব্লকে প্রাণী স্বাস্থ্য দফতরের অবস্থা।

রাজকুমার গিরি
খেজুরি শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৮ ০৭:১০
Share: Save:

দুই ব্লক। দুই ভিন্ন চিত্র!

একটি ব্লকে রাজ্য প্রাণী স্বাস্থ্য দফতরের অফিসের ঢোকার মুখেই আগাছার সারি। ভেঙে পড়েছে দফতরের অধিকাংশ জানলার কাচ। জনসমাগমের বালাই নেই। দেখে পরিক্ত্যত্ত বাড়ি বলে ভুল হতেই পারে। অন্য ব্লকে, সরকারের নিজস্ব কোনও বাড়ি নেই। ভাড়া বাড়িতেই রমরমিয়ে চলছে প্রাণী স্বাস্থ্য দফতরের কাজ।

খেজুরি-১ এবং খেজুরি-২ ব্লকে দুই প্রাণী স্বাস্থ্য দফতরে দু’রকমের ছবিতে হতবাক স্থানীয় বাসিন্দারাই।

হেঁড়িয়া থেকে দু’কিলোমিটার দূরে তল্লা বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া খেজুরি-১ ব্লকের রাজ্য প্রাণী স্বাস্থ্য দফতর। ২০০৫ সালের ২৭ জুলাই তৎকালীন প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আনিসুর রহমান ওই দফতরের উদ্বোধন করেছিলেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রথমে ওই প্রাণী স্বাস্থ্য দফতরে ভিড় লেগেই থাকত। তবে ধীরে ধীরে সেই ভিড় কমতে থাকে। এর কারণ হিসাবে স্থানীয় লোকজনের দাবি, কর্মী সঙ্কট এবং খারাপ পরিষেবা।

সম্প্রতি ওই দফতরে গিয়ে দেখা গেল, দফতরের অধিকাংশ ঘরে তালা বন্ধ। সেই তালাতেও মরচে ধরেছে। কেবল একজন চিকিৎসক অফিস ঘরে বসেন। দফতরের যত্রতত্র আবর্জনায় ভরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘কয়েক বছর আগেও দফতরে কাজ হত। এখন আর বিশেষ কেউ এখানে আসেন না। আসলে, সাধারণ মানুষ এখান থেকে তো তেমন কোনও পরিষেবা পান না। দিনে দিনে অফিসটিও উঠে যাওয়ার জোগাড়।’’ ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে টিকাশি গ্রাম পঞ্চায়েত। স্থানীয়দের অভিযোগ, পঞ্চায়েতের তরফেও কেউ উদ্যোগী হয় না।

খেজুরি-২ ব্লকের দফতরে ভিড় লেগেই রয়েছে।

খেজুরি-২ ব্লকের প্রাণী স্বাস্থ্য দফতরের নিজস্ব বাড়ি নেই। ভাড়া বাড়িতেই চলছে সরকারি কাজ। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে সেখানে মানুষজন আসেন। লক্ষ্মণচক এলাকা থেকে দফতরে এসেছিলেন নিতাই দাস। তাঁর কথায়, ‘‘গৃহপালিত পশু অসুস্থ হলে আমরা স্থানীয় পশু চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে এখানে আসি। সরকারি পরিষেবা বিনামূল্যে পেয়ে থাকি। এ ছাড়া, এই ব্লক প্রাণী স্বাস্থ্য দফতর থেকে সব রকম সাহায্য এবং সহযোগিতা পেয়ে থাকি। তাই বাইরের ডাক্তার দেখানোর প্রয়োজন হয় না।’’

স্থানীয়দের প্রশ্ন, দু’টি দফতরই রাজ্য সরকারের অধীন। তা হলে তাদের এমন বিপরীত হাল কেন? সদুত্তর মেলেনি। এই বিষয়ে খেজুরি-১ এর বিডিও সুদীপ্ত রায় বলেন, ‘‘খেজুরি প্রাণি স্বাস্থ্য দফতরের হাল এ রকম কেন, তা খতিয়ে দেখা হবে।’’

পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রাণী স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ দেবব্রত দাস বলেন, ‘‘এই বিষয়ে আমি খোঁজখবর নিয়ে বলতে পারব। কেন কাজ হচ্ছে না, তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Khejuri Animal health department Block
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE