পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাশাসকের কার্যালয়।
কেউ বললেন রাস্তা খারাপ, কারও ক্ষোভ পানীয় জলের বন্দোবস্ত নেই, কেউ আবার জানালেন বিদ্যুতের সমস্যার কথা। মেদিনীপুর শহরতলির খাসজঙ্গলের শিল্পতালুক পরিদর্শনে এসে মঙ্গলবার এমনই সব অভিযোগ শুনলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক পি মোহনগাঁধী।
মূলত উদ্যোগপতিরাই বিভিন্ন সমস্যার কথা জানান জেলাশাসককে। পর্যাপ্ত আলো নেই, পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে, সীমানা পাঁচিল নেই, খাসজঙ্গলের জন্য বিদ্যুতের পৃথক লাইন নেই— সবই জানানো হয়। জেলাশাসক মানছেন, “রাস্তা, পানীয় জল, নিকাশি, বিদ্যুৎ প্রভৃতি নিয়ে কিছু ছোটখাটো সমস্যা রয়েছে। সমস্যা সমাধানের সব রকম চেষ্টা হবে। এটা আমাদের দায়িত্বও।’’ খাসজঙ্গলে কারখানা রয়েছে, এমন উদ্যোগপতিদের এক সংগঠন রয়েছে। সেই সংগঠনের সম্পাদক সঞ্জীব রায় বলেন, “বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। সমস্যার কথা জেলাশাসককে জানানো হয়েছে। জেলাশাসক সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করব, দ্রুতই এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন পদক্ষেপ করবে।”
খাসজঙ্গলে নতুন করে শিল্প প্রসারে উদ্যোগী হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। এখানে বেশ কিছু ছোট-মাঝারি কারখানা রয়েছে। এ দিন জেলাশাসক এই কারখানাগুলো ঘুরে দেখেন তিনি। জেলাশাসকের সঙ্গে ছিলেন জেলার পদস্থ আধিকারিকেরাও। দিন কয়েক আগেই বাঁকুড়ায় জঙ্গলমহল সিনার্জি হয়েছে। শিল্পের উন্নতিতেই ওই কর্মসূচিতে জেলার উদ্যোগপতিরাও যোগ দেন। এর পরপরই পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসকের এই পরিদর্শন। খাসজঙ্গলের কারখানাগুলো ঘুরে দেখার পরে জেলাশাসক বলেন, “শিল্পের উন্নতিতে অনেক ভাবনাচিন্তা হচ্ছে। বাঁকুড়ায় জঙ্গলমহল সিনার্জি হয়েছে। এখানে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগেই এ সব হয়েছে। দেখে ভাল লেগেছে।’’ তিনি জানান, অনেক বিনিয়োগ হয়েছে। অনেক কর্মসংস্থানও হয়েছে। মহিলারাও এখানে কাজ করছেন।
এক সময় এখানে ৩৪টি ছোট-মাঝারি কারখানা ছিল। এখন ২৮টি রয়েছে। প্রায় এক দশক আগে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এখানে ছোট-মাঝারি শিল্প স্থাপনের জন্য জায়গা চিহ্নিত করা হয়। খাসজঙ্গলে বেশ কিছু খাসজমি পড়ে ছিল। তার মধ্যে প্রথম পর্যায়ে প্রায় সাড়ে ১৩.৫৯ একর জমি শিল্প স্থাপনের উপযোগী করে গড়ে তোলা হয়। পরে সেই জমি বিভিন্ন সংস্থাকে লিজে দেওয়া হয়। মশারি তৈরি, আটা তৈরি, ফাইবারের দরজা তৈরির কারখানা গড়ে ওঠে। পাশাপাশি আইসক্রিম, চকোলেট, পাইপ, পেরেক, সাইকেলের বিয়ারিং তৈরির কারখানাও রয়েছে। ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ সেন্টার’ হিসেবে গড়ে তোলা হয় খাসজঙ্গলকে। পাশেই রয়েছে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক, রেল লাইনও রয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য ২৫.২৯ একর জমি শিল্প স্থাপনের উপযোগী করে গড়ে তোলা হয়েছে। প্লট তৈরি হয়েছে। এক-একটি প্লটে ৭ থেকে ২০ ডেসিমেল জায়গা রয়েছে। প্রশাসনের আশা, এখানে আরও ছোট- মাঝারি শিল্প গড়ে উঠবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy