প্রতিবাদ: কালো ব্যাজ পরে চিকিৎসক নিগ্রহের বিরুদ্ধে সামিল অন্য চিকিৎসকেরা। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
হাসপাতালে ঢুকে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের মারধরের অভিযোগ উঠল মৃত শিশুর পরিবার ও বহিরাগতদের বিরদ্ধে। বুধবার রাতে এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ওই ঘটনায় বৃহস্পতিবার চিকিৎসকেরা হাতে কালো ব্যাজ পরে প্রতিবাদ করলেন।
ঘটনার সূত্রপাত বুধবার দুপুর থেকে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এগরা-১ ব্লকের জেড়থান গ্রামে শেখ সিদ্দিক নামে এক দু’বছরের শিশু জলে পড়ে যায়। পরিবারের সদস্যেরা তাকে উদ্ধার করে দুপুরে এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু হাসপাতালের দাবি, ওই শিশু রাস্তাতেই মারা যায়। হাসপাতালে পৌঁছনোর পরে চিকিৎসকেরা তাকে পরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশকে জানানো হয়। কিন্তু মৃত শিশুর পরিবার ময়নাতদন্তে বেঁকে বসে বলে অভিযোগ। তারা দেহটি নিয়ে চলে যেতে চায়। পুলিশকে জানানো হয়েছে বলে এতে আপত্তি জানান কর্তব্যরত চিকিৎসক ধীধীপন সর্দার।
পরিবারের লোকেরা তখন কিছু না বললেও সন্ধ্যা বেলায় ৭টা নাগাদ তাঁরা আরও লোক নিয়ে হাসপাতালে জড়ো হয়। নিরাপত্তা রক্ষী বাধা দিলেও লাঠি, বাঁশ তাঁরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ঢুকে পড়েন এবং কর্তব্যরত চিকিৎসক ধীধীপন সর্দারকে মারধর করেন বলে অভিযোগ। চিকিৎসকের পরনের পোশাক ছিঁড়ে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই চিকিৎসকের বুকে এবং কনুইয়ে আঘাত লেগেছে। রাতে হাসপাতালেই তাঁর চিকিৎসা হয়। ঘটনায় শেখ রেজাউল নামে এক ব্যক্তি-সহ আরও বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এর পরেই হাসপাতালের নিরাপত্তা এবং চিকিৎসক নিগ্রহে দোষীদের শাস্তির দাবিতে এ দিন চিকিৎসক এবং নার্সেরা কালো ব্যজ করে কাজ করেন। আক্রান্ত চিকিৎসক বলেন, ‘‘শিশুটিকে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছিল। নিয়ম অনুসারে তার ময়নাতদন্ত হওয়ার কথা। সেই কাজ করতে গিয়ে আমাকে মার খেতে হয়েছে। ওরা আমার পোশাক ছিঁড়েছে, বুকে ঘুষি মেরেছে। কনুইয়েও আঘাত পেয়েছি। অবিলম্বে দোষীদের শাস্তিু দিতে হবে।’’
হাসপাতালের সুপার গোপাল গুপ্তর কথায়, ‘‘ন্যক্কারজনক ঘটনা। পরিষেবা দিতে এসে চিকিৎসকেরা মার খাচ্ছেন। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার না করা হলে চিকিৎসকদের সঙ্গে বসে পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করা হবে।’’ উল্লেখ্য, মাস কয়েক আগেও এই হাসপাতালে রোগীর পরিবারের বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন চিকিৎসকেরা। যদিও মৃত শিশুর পরিবারের তরফে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তাদের দাবি, তাঁরা নন, বহিরাগতরা এই সব ঝামেলা পাকিয়েছে। এগরার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘হাসপাতালের তরফে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy