Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Durga Puja 2020

বড় পর্দায় দূর থেকে অঞ্জলি

বেশ কয়েকটি পুজো কমিটি অঞ্জলি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোথাও আবার মণ্ডপ থেকে ১০ মিটার দূরত্বে ভার্চুয়ালি অঞ্জলি হবে।

গোলকুয়াচকে পুজো মণ্ডপের সামনে স্প্রে করা হচ্ছে জীবাণুনাশক। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

গোলকুয়াচকে পুজো মণ্ডপের সামনে স্প্রে করা হচ্ছে জীবাণুনাশক। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

নিজস্ব প্রতিবেদন 
শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২০ ০২:০৭
Share: Save:

ব্যারিকেড নয়। জেলার পুজো উদ্যোক্তাদের ভাবাচ্ছে অঞ্জলি।

হাইকোর্টের রায়ের পরে অনেকেই এবারের মতো অঞ্জলি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কেউ ভ্রাম্যমাণ অঞ্জলির ব্যবস্থা করছেন। অনেকে ব্যারিকেডের বাইরে থেকে জায়ান্ট স্ক্রিনে অঞ্জলি দেওয়ানোর কথাও ভাবছেন। সেক্ষেত্রে ভিড় সামলানো নিয়েও ভাবতে হচ্ছে।

মেদিনীপুর শহরের রবীন্দ্রনগর দুর্গোৎসব কমিটি এবার ভ্রাম্যমাণ অঞ্জলির ব্যবস্থা করছে। কমিটির সম্পাদক সোমনাথ দাস বলেন, ‘‘আমাদের পুজোর থিম এ বার ‘থাকবে তুমি ঘরে / ঠাকুর তোমার দুয়ারে’। মূল মণ্ডপে প্রতিমা থাকবে। আর সেই প্রতিমার একটি ‘ডামি’ সপ্তমী থেকে নবমী বিভিন্ন পাড়ায় ঘুরবে। সেই ট্রাকেই অঞ্জলি দেওয়া যাবে। তাছাড়া মণ্ডপের সামনে দূরত্ববিধি মেনে যাতে অঞ্জলি দেওয়া যায় তার ব্যবস্থাও হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ফুল নিজেদের আনতে হবে।’’ খড়্গপুরে আবার জটিলতা এড়াতে অনেক পুজো কমিটিই অঞ্জলির আয়োজন বাতিল করছে। গোলবাজার দুর্গামন্দিরে অঞ্জলি দিতে প্রতি বছরই ভিড় হয়। ওই মন্দির কমিটির সম্পাদক স্বপন শিকদার বলেন, ‘‘হাইকোর্টের রায়কে মান্যতা দিয়ে অঞ্জলি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ সাউথ ডেভেলপমেন্ট অভিযাত্রী দুর্গাপুজোর কর্তা জয়ন্ত জোয়ারদারও বলেন, ‘‘নির্দেশ মতো ব্যারিকেড করছি। একইসঙ্গে অঞ্জলিও বন্ধ রাখছি।’’ তিনি জানান, বিকল্প হিসেবে মাইকে অঞ্জলির মন্ত্র উচ্চারিত হবে। প্রয়োজনে সেই মন্ত্র শুনে যে যাঁর ইষ্টদেবতার চরণে অঞ্জলি দেবেন।

ঘাটাল মহকুমার বেশ কয়েকটি পুজো কমিটিও অঞ্জলি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোথাও আবার মণ্ডপ থেকে ১০ মিটার দূরত্বে ভার্চুয়ালি অঞ্জলি হবে। দাসপুর, চন্দ্রকোনা, ক্ষীরপাইয়ের বিভিন্ন মণ্ডপে ব্যারিকেড করে জায়ান্ট স্ক্রিন বসিয়ে অঞ্জলির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। দাসপুরের সোনাখালির পুজো উদ্যোক্তারা সাধারণ মানুষের জন্য এবার অঞ্জলির ব্যবস্থা রাখছেন না। বেলদা, নারায়ণগড়, দাঁতন, মোহনপুর, কেশিয়াড়ি এলাকার কিছু পুজোয় অবশ্য ব্যারিকেডের বাইরে ছোট ছোট দল করে অঞ্জলির ব্যবস্থা থাকছে। বেলদার একতা ক্লাব মণ্ডপ থেকে অনেক দূরে অঞ্জলির ব্যবস্থা করছে।

ঝাড়গ্রাম শহরের ঘোড়াধরা সর্বজনীন পুজো কমিটির সম্পাদক উজ্জ্বল পাত্র জানান, অঞ্জলির বিষয়টি নিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ঝাড়গ্রাম শহরের অফিসার্স ক্লাবের পুজো কমিটির সম্পাদক চন্দন শতপথী বলেন, ‘‘বিধি মেনেই সবকিছু হবে। অষ্টমীর অঞ্জলি নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।" অরণ্য শহরের সমাজকর্মী পঞ্চাশোর্ধ্ব স্বাতী দত্তের কথায়, ‘‘সাড়ে চার দশক ধরে প্রতি বছর মণ্ডপে গিয়ে মহাষ্টমীর অঞ্জলি দিই। এবার দেবো না। বাড়িতেই মায়ের ছবিতে অঞ্জলি দেবো। করোনা মুক্ত বাংলার জন্য প্রার্থনা জানাব।’’

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের এক আধিকারিক মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘অঞ্জলির ক্ষেত্রে পুজো কমিটিগুলিকে বলা হচ্ছে, যা কিছু হবে সবই দূরত্ব বিধি মেনে করতে হবে। পারলে অনলাইনে অঞ্জলি দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। কোনওমতেই করোনা বিধি লঙ্ঘন করে অঞ্জলি দেওয়া যাবে না। মণ্ডপগুলিতে নজর রাখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2020 Worshiping Virtual
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE