Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
পিছনে শাসকের কোন্দল

বিবেক দিবসে মাঠ পেল না ডিওয়াইএফ

বিবেকানন্দের জন্মদিন পালন করছে রাজ্য সরকার। কলকাতা-সহ সারা রাজ্যেই শাসক নেতানেত্রীর ছবি দিয়ে পোস্টার, ব্যানার, তোরণ তৈরি হয়েছে বিবেক দিবসে। অথচ সেই একই উদ্দেশ্যে নিয়ম মেনে আবেদন করেও খেলার মাঠ পেল না বাম যুব সংগঠন।

অভিজিৎ চক্রবর্তী
ঘাটাল শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

বিবেকানন্দের জন্মদিন পালন করছে রাজ্য সরকার। কলকাতা-সহ সারা রাজ্যেই শাসক নেতানেত্রীর ছবি দিয়ে পোস্টার, ব্যানার, তোরণ তৈরি হয়েছে বিবেক দিবসে। অথচ সেই একই উদ্দেশ্যে নিয়ম মেনে আবেদন করেও খেলার মাঠ পেল না বাম যুব সংগঠন। অভিযোগ উঠেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল শহরে। আর তার পিছনেও পাওয়া যাচ্ছে সেই শাসকের কোন্দল-গন্ধ।

অভিযোগ, ১২ জানুয়ারি চার দলীয় নকআউট ক্রিকেট প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফ। ছিল ছোটদের জন্য বসে আঁকো প্রতিযোগিতাও। সে জন্য নিয়ম মেনে শহরের বিদ্যাসাগর হাইস্কুলের মাঠ ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছিল নেতৃত্ব। অভিযোগ, অনুমতি দেননি কর্তৃপক্ষ। অথচ, শহরের যাবতীয় খেলাধুলা ও অনুষ্ঠান ওই মাঠেই হয়ে থাকে। যদিও এ দিন ওই প্রতিযোগিতা হয়েছে শহর থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে নিশ্চিন্দি প্রাথমিক স্কুলের মাঠে। ডিওয়াইএফের শহর কমিটির সম্পাদক কল্যাণ দাস জানান, গত বারো বছর ধরে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করছেন তাঁরা। তবে প্রতি বছর ১২ জানুয়ারি প্রতিযোগিতা হয় না। বিবেকানন্দের জন্মদিন উপলক্ষে কোনও এক দিন প্রতিযোগিতা হয়। কল্যাণবাবুর অভিযোগ, “নিয়ম মেনেই আবেদন করেছিলাম। বার বার স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করায় তাঁরা জানিয়ে দেন মাঠ দেওয়া যাবে না। অথচ বৃহস্পতিবার যে ওখানে কোনও অনুষ্ঠান হল, তেমনটা নয়। শহর থেকে দূরে আমাদের প্রতিযোগিতা হওয়ায় সাধারণ মানুষের অসুবিধা হল।”

কিন্তু কেন দেওয়া হল না মাঠ? বিশেষত যেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজে খেলাধুলা, শিল্প-সংস্কৃতি, মনীষীদের জন্মদিন পালনে যথেষ্ট আগ্রহী।

ওই স্কুলের টিচার-ইনচার্জ প্রবীর সিংহ বলেন, “পরিচালন সমিতির সভাপতি-সহ অনান্য সদস্যদের মৌখিক ভাবে বিষয়টি জানিয়েছিলাম। কিছু সদস্যদের আপত্তি ছিল। তাই মাঠ দেওয়া সম্ভব হয়নি। আমি দুঃখিত।” স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি ও ঘাটাল ব্লক তৃণমূলের সভাপতি অজিত দে অবশ্য দাবি করেছেন, “স্কুল পরিচালন সমিতির প্রশাসনিক গাফিলতিতেই এই ঘটনা ঘটেছে। আর কিছু বলব না।” শাসক দলের একাংশও যে ঘটনায় ক্ষুব্ধ তা স্পষ্ট। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের ঘাটাল ব্লক কোর কমিটির এক সদস্য তো বলেই ফেললেন, “কিছু নেতৃত্বদের জন্যই দলের বদনাম হচ্ছে। বিষয়টি সাধারণ মানুষ ভাল ভাবে নিচ্ছেন না।’’

তৃণমূলের সদস্যরাই ঘটনায় দলের ভিতরের কোন্দল দেখতে পাচ্ছেন। অজিত দে-র সঙ্গে ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলইয়ের বিরোধ দীর্ঘদিনের। পরিচালন সমিতির সভাপতি অজিতবাবু অনুমতি দেওয়ার পক্ষে ছিলেন। অথচ সে অনুমতি মিলল না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলেরই এক ব্লক সদস্যের কথায়, “বিধায়ক অনুগামী এক নেতা ওই স্কুলের সরকার মনোনীত সদস্য। তাঁর আপত্তিতে শেষ পর্যন্ত মাঠ ব্যবহারের অনুমতি পায়নি সিপিএমের ওই যুব সংগঠন।” অভিযোগের আঙুল শম্ভু বেরার দিকে। শম্ভুবাবু বলেন, “আমাকে স্কুলের তরফে কিছুই জানানো হয়নি।” ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলই বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিচ্ছই। খুব নিন্দনীয় ঘটনা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Swami Vivekananda DYFI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE