Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
খড়্গপুরে বৈঠকে মহকুমাশাসক
Dengue

মশা মারতে তেল পাবে প্রতিটি ব্লক

পরিস্থিতি বদলতাকে শুক্রবার বৈঠকে বসলেন খড়্গপুরের মহকুমাশাসক সুদীপ সরকার। মহকুমার দশটি ব্লকের বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নিয়ে ওই বৈঠক ডাকা হয়েছিল।

স্তূপাকার: খড়্গপুরের গোলখুলি রেল এলাকায় আবর্জনার পাহাড়। নজর নেই পুরসভার। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

স্তূপাকার: খড়্গপুরের গোলখুলি রেল এলাকায় আবর্জনার পাহাড়। নজর নেই পুরসভার। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৭ ০১:১৪
Share: Save:

মহকুমার প্রতিটি ব্লকে জ্বরের প্রকোপ। বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। দিন দশেক আগে এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত হয়েছিলেন এক আশাকর্মীও। অভিযোগ, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশই খড়্গপুর মহকুমা জুড়ে মশার আঁতুড়ঘরের কারণ।

পরিস্থিতি বদলতাকে শুক্রবার বৈঠকে বসলেন খড়্গপুরের মহকুমাশাসক সুদীপ সরকার। মহকুমার দশটি ব্লকের বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নিয়ে ওই বৈঠক ডাকা হয়েছিল। তাতে ছিলেন জেলা উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান, অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস পাল প্রমুখ। খড়্গপুর মহকুমা জুড়েই এ বার ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দিয়েছে। শীতের মুখেও বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি খড়্গপুর শহরে। অনেক আগে থেকেই খড়্গপুর শহরে ডেঙ্গি মোকাবিলায় নানা পদক্ষেপ করেছে প্রশাসন। জেলাশাসকের নির্দেশে পুরসভা শুরু করেছে বিশেষ অভিযান। তবে মহকুমার বিভিন্ন ব্লকেও ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। দেখা দিচ্ছে এনসেফ্যালাইটিস। নারায়ণগড়ের এক আশাকর্মী ইতিমধ্যেই এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত হয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। মূলত এসব কারনেই এ দিন বৈঠক ডেকে ব্লকের কর্তাদের মশার মোকাবিলায় জোর দিতে নির্দেশ দিয়েছেন মহকুমাশাসক।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিনের বৈঠকে মশার আঁতুরঘর ভাঙতে কী করনীয় তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে। এক্ষেত্রে মশার বংশবৃদ্ধি ঠেকাতে লার্ভা মারতে হবে বলে জানানো হয়েছে। জেলার মশাবাহিত রোগের নোডাল অফিসার রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, “আমি বৈঠকে বলেছি, এখন ডেঙ্গি-সহ মশাবাহিত রোগে সারাবছর সতর্ক থাকতে হবে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। মশার মোকাবিলা করতে হবে। এজন্য ব্লিচিং-ফিনাইল নয়, লার্ভা মারার তেল ব্যবহার করতে হবে।” যদিও লার্ভা মারার তেল ব্লক অনুযায়ী পৃথকভাবে কেনার খরচ বেশি হওয়ায় এ দিন মহকুমাস্তরে কেন্দ্রীয়ভাবে কেনার কথা জানিয়েছেন মহকুমাশাসক। তার পরে সেই তেল বিভিন্ন ব্লক নিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতস্তরে যাতে নিয়মিত মশার আঁতুরঘরে ব্যবহার করা হয় তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মহকুমায় এখন ব্লকগুলির মধ্যে খড়্গপুর-১, খড়্গপুর-২ ও নারায়ণগড় ব্লকে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। খড়্গপুর-১ ব্লকে এখনও পর্যন্ত ২৭জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। অবশ্য ওই ব্লকে ইতিমধ্যেই ডেঙ্গি মোকাবিলায় জোর দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিডিও সৌভিক বাগচী। তিনি বলেন, “আমরা অনেকদিন ধরেই ডেঙ্গি মোকাবিলায় নেমেছি। সচেতনতা প্রচার চলছে। তবে মানুষের মধ্যে সচেতনতার বেশ অভাব। ডেঙ্গিতে যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের অধিকাংশ ব্লকের বাইরে কাজে যান। তবে মহকুমাশাসকের পরামর্শ মেনে ডেঙ্গি মোকাবিলায় জোর দেব।”

আবার খড়্গপুর-২ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নারায়ণ মাজি বলেন, “আমরা আগেই ডেঙ্গি মোকাবিলায় জোর দিয়েছিলাম। তবে ব্লিচিং দিয়েই মোকাবিলার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু এই বৈঠকে লার্ভা মারার তেলের কথা জানতে পারলাম। এ বার সেই মতো কাজ হবে।” আর মহকুমাশাসক সুদীপ সরকার বলেন, “প্রতিটি ব্লককে গ্রাম পঞ্চায়েতস্তরে ডেঙ্গি মোকাবিলায় জোর দিতে বলা হয়েছে। প্রতিটি এলাকায় মশার আঁতুরঘরে মশার লার্ভা মারার তেল দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে ওই তেল কেনা হবে। আশা করছি মোকাবিলা সম্ভব হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

mosquitoes Block Oil Dengue
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE