Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

উল্টো পথে ফিরে তাণ্ডব চালাল হাতি

দলমার হাতির দলের তাণ্ডবে ফসলের ক্ষতি হওয়ায় বিক্ষোভ দেখাল গ্রামবাসী। রবিবার রাতে খড়্গপুর গ্রামীণের কলাইকুণ্ডা রেঞ্জের জঠিয়া জঙ্গলে প্রায় ৮০টি হাতির একটি দল ঢুকে পড়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৬ ০০:২৩
Share: Save:

দলমার হাতির দলের তাণ্ডবে ফসলের ক্ষতি হওয়ায় বিক্ষোভ দেখাল গ্রামবাসী। রবিবার রাতে খড়্গপুর গ্রামীণের কলাইকুণ্ডা রেঞ্জের জঠিয়া জঙ্গলে প্রায় ৮০টি হাতির একটি দল ঢুকে পড়ে। রাতভর চলে তাণ্ডব। হাতির হানায় জঠিয়া, হরিয়াতাড়া, বাঁশপাথরি-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে কয়েক হেক্টর জমির ধানের ক্ষতি হয়েছে। হাতির দল যাতে লোকালয়ে ঢুকে পড়তে না পারে সে জন্য জঙ্গল ঘিরে রাখা হয়েছে। এই ঘটনায় সোমবার ভোরে বন দফতরের খড়্গপুর-১ ব্লকের কলাইকুণ্ডা রেঞ্জ অফিসে বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয়রা।

প্রতিবছর দলমা থেকে আসা বেশ কয়েকটি হাতির দল পুরুলিয়া, বাঁকুড়া হয়ে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিকে পশ্চিম মেদিনীপুরে ঢোকে। এরপর কলাইকুণ্ডা, সাঁকরাইল, নয়াগ্রাম হয়ে ওড়িশায় পৌঁছয় যায় হাতি। সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে ওড়িশা থেকে ফের দলমার দিকে ফিরতে শুরু করে হাতির দলগুলি। সেই মতো এ বার অক্টোবর মাসের শেষ দিকে কলাইকুণ্ডা রেঞ্জ থেকে কাঁসাই নদী হয়ে মেদিনীপুর সদর ব্লকের চাঁদরায় চলে গিয়েছিল হাতিগুলি। বনকর্মীদের একাংশের ধারণা, চাঁদরায় কোনও ভাবে বাধা পেয়ে হাতিগুলো ফের পুরনো পথে কলাইকুণ্ডায় ফিরে এসেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’দিন আগে থেকেই নদী পেরিয়ে মানিকপাড়া ব্লকের চিথলবনি, বল্লা, কুমারি, ডোবারিয়ার দিকে উল্টো পথে যাত্রা শুরু করে হাতির দলটি। এ দিন ভোরে দেখা যায় প্রায় ৮০টি হাতির ওই দলটি কলাইকুণ্ডার জঠিয়া জঙ্গলে ঢুকেছে। রাতভর হাতির তাণ্ডবে ক্ষোভ ছড়ায় এলাকায়। সকাল হতেই বন দফতরের অফিসের সামনে তাঁরা জড়ো হয়। বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে তাঁরা। বনকর্মীদের ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাসে পরে বিক্ষোভ উঠে যায়।

হাতির হানার ভয়ে রাতের ঘুম ছুটেছে স্থানীয়দের। স্থানীয় নারায়ণপুরের বাসিন্দা প্রণব অধিকারী, ভুরুরচাটি গ্রামের রজনী মাহাতোরা বলছিলেন, “জঙ্গল থেকে রাতে এত হাতি একসঙ্গে বেরিয়ে পড়লে কারও কিছু করার থাকবে না। আমরা বিকেল থেকে রাস্তায় বেরোবো না। কিন্তু রাতে আমাদের এলাকায় হাতি হানা দিলে কী হবে তা নিয়েই চিন্তা রয়েছে। দ্রুত ওই হাতিগুলিকে অন্য পথে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুক বন দফতর।”

বন দফতর সূত্রে খবর, আপাতত হাতিগুলিকে তাড়ানোর পথে হাঁটতে চাইছেন না বনকর্মীরা। কারণ দলটিতে হস্তিশাবক রয়েছে। ফলে তাড়াতে গেলে ভয়ে হাতিগুলি এলাকায় আরও তাণ্ডব চালাতে পারে। হাতির দলের উপর নজর রেখে ধীরে চলো নীতি নিয়েই এগোতে চাইছে বন দফতর। খড়্গপুরের ডিএফও অঞ্জন গুহ বলেন, “স্বাভাবিক গতিপথে বাধা পেয়েই হাতির দলটি ফিরে এসেছে। তাছাড়া এই অসময়ে ফিরে আসার কোনও কারণ নেই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা আপাতত হাতিগুলিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি না। ওই হাতিগুলি যাতে লোকালয়ে চলে আসতে না পারে সে জন্য এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে। হাতির গতিপ্রকৃতি বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Elephant group destroyed corps
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE