প্রতীকী ছবি।
সপ্তাহ খানেক আগেই এলাকা থেকে বেরিয়ে ঝাড়খণ্ডের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনও কার্যত একই জায়গায় ঘুরপাক খাচ্ছে দলমার হস্তিকুল। যার কারণ হিসাবে বন দফতর জানাচ্ছে, রুদ্ধ হয়েছে হাতির স্বাভাবিক গতিপথ। তারা যে দিক দিয়েই এলাকা ছাড়ার চেষ্টা করছে, সে দিকেই বাধা পাচ্ছে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে। ফলে বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতির সংখ্যা।
বন দফতর এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, সপ্তাহ খানেকেরও বেশি সময় ধরে মেদিনীপুর গ্রামীণের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে রয়েছে হাতির পাল। মাঝে একবার শালবনির গোদাপিয়াশালের কাছে গিয়েছিল। অভিযোগ, সেই এলাকায় গ্রামবাসীদের কাছে তাড়া খেয়ে সেখান থেকে ফের মেদিনীপুর গ্রামীণে চলে এসেছে হাতির দল। অথচ এতদিনে পালটির ঝাড়গ্রাম পেরিয়ে ঝাড়খণ্ডের উদ্দেশে পাড়ি দেওয়ার কথা ছিল বলে জানাচ্ছে বন দফতর।
বন দফতর জানাচ্ছে, মাস কয়েক আগে দলমার এই পাল পশ্চিম মেদিনীপুরেই ছিল। পরে কংসাবতী, সুবর্ণরেখা পেরিয়ে ওড়িশায় চলে যায়। ফের ওড়িশা থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরে ঢুকে পড়েছে। এ বার হাতিদের গন্তব্য কী? বন দফতর সূত্রে খবর, পালটির ফের ঝাড়খণ্ডে ফেরার কথা। ঝাড়গ্রাম হয়েই ঝাড়খণ্ডে ফিরবে। তবে সহজে পালটি ঝাড়গ্রামের দিকে যেতে পারছে না। মেদিনীপুরের এক বনকর্তার স্বীকারোক্তি, ‘‘সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে হাতিরা ঝাড়খণ্ডে চলে যেত। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তা হচ্ছে না!’’ কিন্তু কেন? জবাবে ওই বনকর্তা বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের কেউ কেউ হাতির স্বাভাবিক পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন। বাধা দিচ্ছেন। তাঁরা নিজেদের ফসল বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু এটা বুঝতে পারছেন না, হাতি এক এলাকায় থেকে গেলে সার্বিকভাবে ক্ষয়ক্ষতি আরও বেশি হবে।’’
বর্তমানে মেদিনীপুর গ্রামীণের পশ্চিমাংশে ঠিক কতগুলি হাতি রয়েছে? বন দফতরের সূত্রের খবর, হাতি কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে রয়েছে। বড় দলটি রয়েছে গাড়রায়। সেখানে ১৭-১৮টি হাতি রয়েছে। শুকনাখালিতে রয়েছে ৭-৮টি হাতি। অন্যদিকে, বাগডুবিতে দু’টি, আমঝরনায় ১০-১২টি, মহিষডুবিতে একটি, ধানঘরিতে দু’টি হাতি রয়েছে।
একই জায়গায় এতদিন ধরে হাতির দল থেকে যাওয়ায় বর্তমানে কার্যত ল্যাজেগোবরে অবস্থা বনকর্মীদেরও! হাতি তাড়াতে গিয়ে ‘হামলার’ মুখে পড়েছে হুলাপার্টিও। বেশ কয়েকজন জখম হয়েছেন। গোটা ব্যাপারে মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের সচেতন করা হচ্ছে। জানানো হচ্ছে যে, হাতির স্বাভাবিক গতিপথে বাধা দেওয়া উচিত নয়। তবে সকলে সমান সচেতন হচ্ছেন না। আমরা জন সচেতনতা বাড়ানোর সব রকম চেষ্টা চালাচ্ছি। যে এলাকায় হাতি থাকছে, সেই এলাকায় মাইকেও প্রচার চালানো হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy