Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়নে জোর

মুখ্যমন্ত্রীর ধমকের পরে জরুরি বৈঠক

সম্প্রতি ঝাড়গ্রাম জেলা সফরে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন জেলা গঠনের পরে এটাই ছিল মুখ্যমন্ত্রীর প্রথম জেলা সফর।

পাশাপাশি: শান্তিরাম মাহাতো ও সুকুমার হাঁসদা। নিজস্ব চিত্র

পাশাপাশি: শান্তিরাম মাহাতো ও সুকুমার হাঁসদা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

ঝাড়গ্রামের প্রশাসনিক বৈঠকে পশ্চিমাঞ্চলের কাজকর্ম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, কাজের ক্ষেত্রে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। ধমকও দিয়েছেন কয়েকজন আমলাকে। সমন্বয় বাড়াতে বৈঠকে বসল পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ। মঙ্গলবার মেদিনীপুর সার্কিট হাউসে এই বৈঠক হয়। ছিলেন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো, পর্ষদের চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদা-সহ পদস্থ কর্তারা। ছিলেন পর্ষদের আওতাধীন সাত জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকেরাও। সরকারি সূত্রে বলা হচ্ছে, সামনে জঙ্গলমহল উত্সব শুরু হবে। সেই উত্সবের প্রস্তুতি নিয়েই এই বৈঠক। বৈঠক শেষে শান্তিরামবাবুর বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী কাজে আরও গতি বাড়ানোর কথা বলেছেন। কাজে গতি আরও বাড়ানো হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, “বৈঠকে জঙ্গলমহল উত্সবের প্রস্তুতি নিয়েই আলোচনা হয়েছে।’’

সম্প্রতি ঝাড়গ্রাম জেলা সফরে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন জেলা গঠনের পরে এটাই ছিল মুখ্যমন্ত্রীর প্রথম জেলা সফর। ঝাড়গ্রামের উন্নয়নের কাজে তিনি যে সন্তুষ্ট নন তা শুরুতেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন তিনি। প্রশাসনিক বৈঠকে আমলাদের পাশাপাশি বিস্তর বকাঝকা করেন দলের মন্ত্রী-নেতাদেরও। প্রশাসনিক বৈঠকের পরে অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ মন্ত্রী চূড়ামণি মাহাতোকে তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ভারপ্রাপ্ত জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতিকে। এখানেই থামেননি মুখ্যমন্ত্রী। সমান্তরাল ভাবে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আর অর্জুনের মাথায় বসানো হয় পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনাকে। পর্ষদের এক কর্তা মানছেন, “কিছু ক্ষেত্রে হয়তো সমন্বয়ের অভাব ছিল। ফলে, কাজ এগোতে সমস্যা হচ্ছিল। বেশি সময় লাগছিল। আশা করি, এ বার আর তা থাকবে না।’’

বৈঠকে জঙ্গলমহল উত্সবের প্রস্তুতি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। শুরুতে ব্লকস্তরে এই উত্সব হয়। এরপর জেলাস্তরে। সবশেষে রাজ্যস্তরে। রাজ্যস্তরের উত্সব ঝাড়গ্রামেই হবে। তবে রাজ্যস্তরের উত্সবের দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। পর্ষদের এক কর্তার কথায়, “গত তিন বছর যেমন ঝাড়গ্রামে জঙ্গলমহল উত্সব হয়েছিল, এ বছরও তা হবে। ডিসেম্বরের শেষের দিকে কিংবা জানুয়ারির প্রথম দিকে হবে।’’

প্রশাসন সূত্রে খবর, উত্সবের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রীই। শীঘ্রই দিনক্ষণ চূড়ান্ত হতে পারে। উত্সব ছ’দিনের হতে পারে। জঙ্গলমহলে যে সব সাংস্কৃতিক দলগুলো রয়েছে, লোকসংস্কৃতির দলগুলো রয়েছে, সেই দলগুলো উত্সবে যোগ দেবে। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম— এই তিন জেলার জন্য একদিন করে বরাদ্দ থাকতে পারে। অর্থাৎ, এক-একদিন এক-এক জেলার সাংস্কৃতিক দলগুলো অনুষ্ঠান করবে। ওই কর্তার আশ্বাস, “কী ভাবে এই উত্সব আরও আকর্ষণীয় করে তোলা যায়, তার চেষ্টা চলছে।’’ উত্সবের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে ফের বৈঠক হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE