Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

স্কুলে অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র, চালাবে কে!

প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ ও প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রাথমিক স্কুলগুলিতে মিড-ডে মিল রান্নার জন্য সম্প্রতি রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার-সহ গ্যাস সংযোগ দেওয়ার জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু প্রাথমিক স্কুলগুলিতে এখনও রান্নার ভরসা কাঠের উনুন।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৯ ০০:৪৯
Share: Save:

স্কুলে স্কুলে চালু হয়েছে মিড ডে মিল। বিদ্যালয় চত্বরেই উনুন বা গ্যাস জ্বেলে হয় প্রতিদিনের রান্না। কোনও মুহূর্তে সেখান থেকে যদি আগুন লাগে, সে জন্য প্রশাসনের তরফে পূর্ব মেদিনীপুরের প্রতিটি প্রাথমিক স্কুলে বছর ছয়েক আগে অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই যন্ত্র ব্যবহারের জন্য শিক্ষক ও মিড–ডে মিলের রান্নায় যুক্ত কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। ফলে যন্ত্রগুলির ঠাঁই হয়েছে

প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ ও প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রাথমিক স্কুলগুলিতে মিড-ডে মিল রান্নার জন্য সম্প্রতি রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার-সহ গ্যাস সংযোগ দেওয়ার জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু প্রাথমিক স্কুলগুলিতে এখনও রান্নার ভরসা কাঠের উনুন। অধিকাংশ স্কুলেই ক্লাস ভবনের সংলগ্ন মিড-ডে মিলের রান্নাঘর রয়েছে। পড়ুয়াদের ক্লাস চলার মাঝে মিড-ডে মিল রান্না করেন কর্মীরা। তাই স্কুলের মিড-ডে মিল রান্নার সময় আগুন লাগার মত দুর্ঘটনা ঘটলে যাতে আপৎকালীনভাবে আগুন নেভানো যায় সেজন্য অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র দিতে উদ্যোগী হয়েছিল প্রশাসন ও সর্বশিক্ষা মিশন।

পূর্ব মেদিনীপুরের তিন হাজার ২৬৫টি প্রাথমিক স্কুলের প্রতিটিকে ২০১৩ সালে অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র (ফায়ার এক্সটিংগুইশার) দেওয়া হয়েছিল। একটি যন্ত্র স্কুল ভবনে এবং অন্যটি রান্নাঘরের দেওয়ালে ঝুলিয়ে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র সরবরাহের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত এক সংস্থা স্কুলগুলিতে গিয়ে ওই যন্ত্র বসানোর ব্যবস্থা করেন। কিন্তু যন্ত্রগুলি কীভাবে চালাতে হবে, তার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি শিক্ষক বা কর্মীদের। এছাড়া অভিযোগ, পুরনো যন্ত্রগুলির মেয়াদও উত্তীর্ণ হয়েছে।

সম্প্রতি নন্দকুমারের ব্যবত্তারহাট এলাকার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেল অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্রের সঙ্গে থাকা পাইপটিই লাগানো হয়নি। ওই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, ২০১৩ সালে অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র বসাতে আসা সংস্থার কর্মীরা প্রাথমিকভাবে ব্যবহার বোঝালেও সরকারিভাবে এখনও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হয়নি। সম্প্রতি শিক্ষক সংগঠনগুলি দাবি করেছেন, অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র ব্যবহারের জন্য দ্রুত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সাধারণ সম্পাদক অরূপকুমার ভৌমিক বলেন, ‘‘অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্রের ব্যবহার এবং তার রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে প্রশিক্ষণ না থাকায় অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মীরা বিপদের সময় ওই যন্ত্র ব্যবহার করতে পারবেন কি না, সেই সংশয় রয়েছে।’’ বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক সতীশ সাহুয়ের অভিযোগ, ‘‘বছর পাঁচেক আগে স্কুলগুলিকে অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র দেওয়ার সময়ে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মীদের ওই যন্ত্রের ব্যবহারের বিষয়ে প্রশিক্ষণের কথা জানানো হয়েছিল। কিন্তু এখনও সেই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়নি। স্কুলগুলিতে গ্যাস সিলিন্ডার-সহ গ্যাস সংযোগ দেওয়ার পাশাপাশি এ বিষয়ে দ্রুত প্রশিক্ষণের দাবি জানাচ্ছি।’’

গোটা ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সভাপতি মানস দাস বলেন, ‘‘অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র ব্যবহারে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণ না দেওয়া বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। তাঁদের প্রশিক্ষণের জন্য অবশ্যই জেলা প্রশাসনকে জানানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fire Extinguishers Medinipore Primary school
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE