Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বিধ্বংসী আগুনে ভস্মীভূত হলদিয়ার রবার কারখানা

বিধ্বংসী আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেল হলদিয়ার ডিঘাসিপুরের একটি রবার গুঁড়ো তৈরির কারখানা। রবিবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ কারখানায় আগুন লাগে। দমকলের ১২টি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করে। দুপুরের পর থেকে আগুনের তীব্রতা কমতে থাকে। এ দিন রাতেও ঘটনাস্থলে দমকলের একটি ইঞ্জিন ছিল। আগুনে কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তির ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে বলে কারখানা সূত্রে খবর।

তখনও আগুন নেভানোর লড়াই চলছে। —নিজস্ব চিত্র।

তখনও আগুন নেভানোর লড়াই চলছে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৫ ০১:০০
Share: Save:

বিধ্বংসী আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেল হলদিয়ার ডিঘাসিপুরের একটি রবার গুঁড়ো তৈরির কারখানা। রবিবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ কারখানায় আগুন লাগে। দমকলের ১২টি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করে। দুপুরের পর থেকে আগুনের তীব্রতা কমতে থাকে। এ দিন রাতেও ঘটনাস্থলে দমকলের একটি ইঞ্জিন ছিল। আগুনে কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তির ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে বলে কারখানা সূত্রে খবর। দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কারখানায় পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ছিল না। কারখানার ভিতরে জলের পাইপলাইন থাকলেও তাও প্রয়োজনের সময় ব্যবহার করা যায়নি। ঘটনার খবর পেয়ে হলদিয়ায় বিভিন্ন শিল্প সংস্থার নিজস্ব দমকল বাহিনীও আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগায়। যদিও আগুনে কারও হতাহতের খবর নেই। এই ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে শিল্পশহরের বিভিন্ন কারখানার অগ্নি নিরাপত্তা।

যদিও পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা না থাকার অভিযোগ মানতে নারাজ ওই কারখানার অন্যতম মালিক আমিনুল ইসলাম। তাঁর দাবি, কারখানায় জলের রিজার্ভার, জল যাওয়ার পাইপ লাইন-সবই রয়েছে। এ দিন প্রথমে কারখানার জেনারেটরের কাছে আগুন লাগে। তাই আগুন নেভানোর জন্য জেনারেটর চালিয়ে রিজার্ভার থেকে জল তোলা যায়নি। দমকল সূত্রে খবর, কারখানায় অতি দাহ্য পদার্থ মজুত থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়েছে। তাছাড়া হাওয়ার গতি বেশি হওয়ায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লাগছে।

হলদিয়ার ডিঘাসিপুরে ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে ‘টিনা রাবার ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড’ নামে ওই কারখানায় বাস ও লরির বাতিল টায়ায়ের রবার গুঁড়ো করার কাজ হয়। সেই রবারের গুঁড়ো বিটুমেন তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হয়। বছর দেড়েক আগে গড়ে ওঠা এই কারখানায় প্রায় ২২৫ জন শ্রমিক কাজ করেন। কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন কারখানায় রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ওয়েল্ডিংয়ের কাজ চলছিল। রবিবার হওয়ায় কারখানায় কর্মীদের সংখ্যাও ছিল হাতেগোনা।

যদিও আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে দু’টি মত রয়েছে। কারখানার একাংশ কর্মীর দাবি, ওয়েল্ডিংয়ের আগুনের ফুলকি পাশেই রাখা রবার গুঁড়োর প্যাকেটে গিয়ে পড়তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আবার অন্য অংশের মত, শর্ট সার্কিটের দরুন আগুন লাগে। কর্মীদের থেকে খবর পেয়ে দমকলে খবর দেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। রাজ্য দমকল বাহিনীর তিনটি ইঞ্জিনের পাশাপাশি ‘আইওসি’, হলদিয়া বন্দর, ‘এইচপিএল’, ‘ধানসারি পেট্রোকেমিক্যালস’, ‘মিতসুবিশি’, ‘উরাল ইন্ডিয়া’-সহ বিভিন্ন কারখানার দমকলের ইঞ্জিনও আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগায়। দমকল সূত্রেও খবর, আগুন লাগার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। তদন্তের পরই বলা যাবে।

হলদিয়ার মহকুমাশাসক শঙ্কর নস্করও জানান, আগুনে ওই কারখানায় ক্ষতি হয়েছে। তবে হতাহতের কোনও খবর নেই। দমকল কর্তৃপক্ষকে কারখানার অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার বিষয়ে বলব। দমকলের তমলুক কেন্দ্রের ওসি কিশোরকুমার ধাড়া বলেন, ‘‘আগুন লাগার কারণ পরিষ্কার নয়। এ দিন সন্ধ্যায় আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসে। যদিও পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে ঘটনাস্থলে দমকলের একটি ইঞ্জিন রাখা রয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE