Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

নেভানোর যন্ত্র আছে, জানা নেই ব্যবহার

মেডিক্যাল কলেজ থেকে সুপার স্পেশ্যালিটি— অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার হাল কী, কোনও কারণে আগুন লাগলে তা মোকাবিলায় কতটা প্রস্তুত হাসপাতালগুলো, খোঁজ নিয়ে দেখল আনন্দবাজার মেডিক্যাল কলেজ থেকে সুপার স্পেশ্যালিটি— অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার হাল কী, কোনও কারণে আগুন লাগলে তা মোকাবিলায় কতটা প্রস্তুত হাসপাতালগুলো, খোঁজ নিয়ে দেখল আনন্দবাজার

ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ফায়ার এক্সটিংগুইশার। নিজস্ব চিত্র

ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ফায়ার এক্সটিংগুইশার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৮ ০২:০৫
Share: Save:

যন্ত্র আছে যন্ত্রের মতো। আচমকা আগুন লাগলে সেই অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র কাজে লাগানোর নিয়ম জানা নেই তেমন কারও!

গত বছর মেদিনীপুর শহরের বটতলাচকের অদূরে এক নার্সিংহোমে আগুন লাগে। ঘটনার জেরে শোরগোল পড়ে রোগী ও রোগীর পরিজনদের মধ্যে।অনেকে ছোটাছুটি শুরু করে দেন। দমকলের ইঞ্জিন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তদন্তে নেমে দমকল দেখে এসি-র শর্ট সার্কিট থেকেই ঘটনাটি ঘটে। নার্সিংহোমের এসএনসিইউ এর পাশে একটি এসি-তে শর্ট সার্কিট হয়। শুরুতে ধোঁয়া বেরোতে শুরু করে। ধীরে ধীরে সেই ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে। আগুনও ধরে যায়।

আগুন লাগায় আতঙ্ক ছাড়ায় শহরের রবীন্দ্রনগরের এক বেসরকারি হাসপাতালেও। সেই ক্ষেত্রেও শর্ট সার্কিট থেকে বেসমেন্টে আগুন লেগেছিল। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে। ক’দিন আগেও ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালেও অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। অগ্নিনিবার্পণ যন্ত্র থাকা সত্ত্বেও ওই মুহূর্তে তা ব্যবহার হয়নি। দমকল আসার আগে ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গিয়েছিল।

অথচ ফায়ার এক্সটিংগুইশারের ব্যবহার সঠিক জানা থাকলে দমকল আসার আগে সহজেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যেত। দমকল দফতরের এক কর্তার কথায়, “অগ্নিনিবার্পণ সিলিন্ডারের সোডিয়াম বাই কার্বনেট মজুত থাকে। ভিতরে রয়েছে কার্বন ডাই অক্সাইড। সেফটি ক্লিপ খুলে প্ল্যাঞ্জারে চাপ দিলেই তা বেরিয়ে পড়ে। আগুন সহজেই বাগে আসে।”

আমরি হাসপাতালে অগ্নিকান্ডের পর স্বাস্থ্য ভবন সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান গুলিতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করে। সেই সময় প্রতিটি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে বসানো হয় ফায়ার এক্সটিংগুইশার সিলিন্ডার। কোটি কোটি টাকা খরচ করে সিলিন্ডার বসানো হলেও তার ব্যবহার ঠিকঠাক হচ্ছে না। অভিযোগ, নাম কা ওয়াস্তে সিলিন্ডারগুলি রাখা হয়েছে। দমকলের তরফেও ঠিকঠাক নজরদারি হয় না। হুঁশ নেই স্বাস্থ্য কর্তাদেরও। প্রশিক্ষণের অভাবে হাসপাতাল কিংবা নার্সিংহোমের অনেক কর্মীও অহ্নিনির্বাপণ যন্ত্রের ব্যবহার জানেন না। এমনকী বহু ক্ষেত্রে সিলিন্ডারগুলির মেয়াদও ফুরনোর পরেও পাল্টানো হয় না বলে অভিযোগ।

ঘাটাল শহরের এক নার্সিংহোমের মালিকেরও স্বীকারোক্তি, “ফায়ার এক্সটিংগুইশারের ব্যবহার আমরা জানি না। আগুন লাগলে ওই যন্ত্র চালাতে পারব না।” ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের এক কর্মীরও সাফ বক্তব্য, “প্রশিক্ষণ না দেওয়া হলে ওই যন্ত্র থেকে কি লাভ?” মেদিনীপুর মেডিকেলের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডুর জবাব, “এক দফায় সকল কর্মীকেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে ফের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।” দমকলের এক পদস্থ আধিকারিক মানলেন, “মাঝে মধ্যেই দফতরের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তবে সব ক্ষেত্রেই এখনও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে উঠেনি। উদ্যোগের অভাবও রয়েছে।”

(শেষ)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE