উদ্ধার হওয়া কচ্ছপ। নিজস্ব চিত্র
আইনের কাছে আবেগ মানল হার! হলদিয়ার এক স্কুল শিক্ষক প্রাণনাথ শেঠের বাড়ির ‘দ্বীপ’ থেকে ১৯টি কচ্ছপ শঙ্করপুরের সংরক্ষণশালায় নিয়ে গেল বন দফতর।
হলদিয়ার পেট্রো কেমিক্যালসের কাছে নিজের বাড়িতে কচ্ছপদের জন্য পরিখা কেটে ‘দ্বীপ’ বানিয়েছেন প্রাণনাথ। সেখানে কচ্ছপদের জন্য বানিয়ে দিয়েছেন ‘শেল্টার হাউস’। বিভিন্ন জায়গা থেকে কচ্ছপ এনে নিজের বাড়িতে তাদের পরিচর্যা করেন প্রাণনাথ। বর্তমানে কচ্ছপের সংখ্যা শতাধিক। সম্প্রতি ওই খবর সংবাদপত্রে প্রকাশিত হলে প্রাণনাথের বাড়িতে হাজির হন হলদিয়া রেঞ্জের বন দফতরের আধিকারিকেরা। আসেন জেলার অতিরিক্ত মুখ্য বন আধিকারিক বলরাম পাঁজা। কচ্ছপের জন্য প্রাণনাথের তৈরি ‘শেল্টার হাউস’ দেখে খুশি হন তাঁরা।
তবে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে বাড়িতে এভাবে কচ্ছপ রাখা যায় না বলে জানান তাঁরা। সেই মত সোমবার সকালে বন দফতরের তরফে ফের প্রাণনাথের বাড়িতে যান নন্দকুমার রেঞ্জের আধিকারিক প্রকাশ মাইতি, বালুঘাটার বিট অফিসার শুক্লা হেমব্রম এবং আরও চার জন বনকর্মী। এ দিন ‘দ্বীপে’র পাশে প্রায় ছ’ফুট গভীর পরিখা থেকে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় ১৯টি কচ্ছপ ধরেন তাঁরা। তার পরে সেগুলি নিয়ে যাওয়া হয় শঙ্করপুরের বন দফতরের রেসকিউ সেন্টারে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বন দফতর সূত্রের খবর, উদ্ধার করা কচ্ছপগুলি ‘ইন্ডিয়ান ফ্ল্যাপ শেল’ প্রজাতির। কয়েকটির ওজন কয়েক কিলোগ্রামের বেশি। নন্দকুমারের রেঞ্জার প্রকাশ মাইতি বলেন, ‘‘প্রাণনাথবাবুর বাড়ির পরিখাতে জলের গভীরতা ছিল অনেক। জলের নীচে ইট বিছানো থাকায় জাল দিয়ে কচ্ছপ ধরা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই মাত্র ১৯টি কচ্ছপ উদ্ধার করা গিয়েছে। সেগুলি শঙ্করপুরের পুকুরে ছাড়া হয়েছে।’’
প্রাণনাথ বন দফতরের আধিকারিকদের কাছে অনুরোধ জানান, তাঁর কচ্ছপদের থাকার জায়গা যেন ভাল হয়। ওরা নিরাপদে থাকলেই তিনি কচ্ছপ দিতে রাজি হবেন। প্রকাশবাবু জানান, তাঁরা ওই শিক্ষককেও শঙ্করপুর নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। তিনি নিজের চোখে দেখে আসতে পারতেন যে, তাঁর ‘সন্তানেরা’ ভালই থাকবে।
বনকর্মীরা কচ্ছপ নিয়ে যাওয়ার পরে প্রাণনাথ বলেন, ‘‘খুব খারাপ লাগছে। এতদিন সন্তান স্নেহে লালন করেছিলাম। তবে ওরা ভাল থাকলেই আমি খুশি। আইন তো আর অমান্য করা যাবে না।’’
বন দফতর সূত্রে খবর, প্রাণনাথবাবুকে সামনে রেখে বন বিভাগ কচ্ছপ বাঁচানোর পোস্টার-প্রচার করা করার পরিকল্পনা করছেন। রেঞ্জার প্রকাশ মাইতি বলেন, ‘‘ওঁর উদ্যোগকে সম্মান দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। এলাকায় কেউ কচ্ছপ উদ্ধার করলে তিনি যাতে প্রাণনাথবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করেন, সে ব্যাপারেও ভাবা হচ্ছে। প্রাণনাথকে সামনে রেখে কচ্ছপ বাঁচানোর সচেতনতা বাড়াতে চায় বন দফতর।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy