বিশ বাঁও জলে ওয়াই ফাই!
ঘোষণাই সার। এক বছরেও খড়্গপুরে চালু হয়নি নিখরচার ওয়াই ফাই। গত বছর ফেব্রুয়ারি নাগাদ এই পরিষেবা চালুর কথা ঘোষণা করে পুরসভা। প্রথমে ঠিক হয়, পুরভবনের এক কিলোমিটার ব্যসার্ধের মধ্যেই পরিষেবা মিলবে। পরে শহরের সর্বত্র মিলবে সংযোগ। পুরসভা সূত্রে খবর, ওয়াই ফাই পরিষেবার জন্য একটি সংস্থার সঙ্গে পুরসভার আলোচনা হয়। তারপর দেড় বছর পেরোতে চললেও পরিষেবা মেলেনি এখনও।
২০০৪ সালে খড়্গপুর আইআইটি চত্বরে ওয়াই ফাই চালু হয়েছে। শুধুমাত্র আইআইটি-র অধ্যাপক, পড়ুয়ারাই এই পরিষেবা পান। ‘এ ওয়ান’ খড়্গপুর রেলস্টেশনেও ওয়াই ফাই পরিষেবা চালু হচ্ছে। জোরকদমে চলছে প্রস্তুতি। খড়্গপুরে রেলের সিনিয়ার ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ইন্সপেক্টর কুলদীপ তিওয়ারি বলেন, “স্টেশন চত্ত্বরে যাত্রীদের সুবিধার্থে ওয়াই ফাই চালু করতে চলেছি। এর ফলে স্টেশনে বসে স্মার্টফোন থেকে ল্যাপটপে কাজ করতে পারবেন যাত্রীরা। আগামী এক মাসের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে।”
জেলার সদর শহর মেদিনীপুরে অবশ্য ওয়াই ফাই চালুর পরিকল্পনাই নেই পুরসভার! শহরবাসীর দাবি, এ ব্যাপারে পুর- কর্তৃপক্ষের উদ্যোগী হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। অন্তত শহরের কিছু এলাকায় নিখরচায় ওয়াই ফাই পরিষেবা চালু করতে পারে পুরসভা। শহরের বাসিন্দা অনিন্দিতা জানার কথায়, “মেদিনীপুর জেলার সদর শহর। শহরের কিছু এলাকায় নিখরচায় ওয়াই- ফাই পরিষেবা মিললে সুবিধেই হবে।”
মাস কয়েক আগে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়াই ফাই পরিষেবা চালু হয়েছে। শহরের বাসিন্দা সৌরদীপ দাসের কথায়, “শহরে ওয়াই ফাই পরিষেবা চালু হলে নিখরচায় নানা প্রয়োজনীয় তথ্য জানা যেতে পারে।” মেদিনীপুরের উপ-পুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাস অবশ্য বলেন, “শহরে ওয়াই ফাই চালু নিয়ে এখনও কোনও পরিকল্পনা নেই।”
এ দিকে, ওয়াই ফাই চালু না হওয়ায় হতাশ খড়্গপুরবাসী। সুভাষপল্লির যুবক রাকেশ সেন বলেন, “শুনেছিলাম, পুরসভা ওয়াই-ফাই পরিষেবা চালু করবে। শহরকে স্মার্ট করতে পুরসভার কথা রাখা উচিত।” রবীন্দ্রপল্লির বাসিন্দা কালু দাসের বক্তব্য, “প্রত্যেকেই নিজের শহরের উন্নতি চায়। আর এখন গতির যুগ। ওয়াই ফাই থাকলে দ্রুতগতির ইন্টারনেট পরিষেবা পাওয়া যাবে।’’
সমস্যা ঠিক কোথায়?
পুরসভা সূত্রে খবর, ওয়াই ফাই পরিষেবা চালুর জন্য প্রাথমিক ভাবে তিনটি সংস্থার সঙ্গে পুরসভার কথা হয়। ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদান করার জন্য একটি সংস্থার সঙ্গে কথা হয়। ‘ওয়াই ফাই ডিভাইস’ অন্য একটি সংস্থার সঙ্গেও কথা হয়। তৃতীয় আর একটি সংস্থার সঙ্গে কথা হয়, যারা দু’টি শর্তই পূরণ করতে পারবে। পুরসভা ‘পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ’ (পিপিপি) মডেলে এই পরিষেবা চালু করবে বলে ঠিক হয়। তিনটি সংস্থার মধ্যে তৃতীয় সংস্থাটিই সব থেকে বেশি টাকা দেওয়ার কথা বলে। ঠিক হয়, নিখরচায় অপেক্ষাকৃত কম গতির ওয়াই ফাই সংযোগের সুবিধা মিলবে। তবে দ্রুত গতির ওয়াই ফাই পরিষেবার জন্য দিতে হবে টাকা। তারপরে কাজও কিছুটা এগোয়।
কিন্তপ তৃণমূলের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “কংগ্রেস পুরবোর্ডের ওয়াই ফাই পরিষেবা চালুর ঘোষণা নিয়ে কোনও কাগজ পাইনি। জেনেছি, যে সংস্থার সঙ্গে কথা হয়েছিল তারা খড়্গপুরে ফোর-জি পরিষেবা চালু করেছে। এ নিয়ে ভবিষ্যতে ভেবে দেখব।” তদানীন্তন কংগ্রেস বোর্ডের পুরপ্রধান, বর্তমানে তৃণমূল কাউন্সিলর রবিশঙ্কর পাণ্ডে বলেন, “বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনা করেই ওয়াই ফাই চালুর কথা ঘোষণা করেছিলাম। বিষয়টি ফের বোর্ড মিটিংয়ে তুলব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy