মেদিনীপুর শহরে কালীপুজোর রাতে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
শব্দবাজি ফাটল বটে। তবে তা সহ্যের সীমা ছাড়াল না।
পুলিশের সক্রিয়তা নাকি সচেতনতা! কারণ যাই হোক না কেন, মঙ্গলবার, কালীপুজোর রাতে ঘাটাল মহকুমা জুড়ে শব্দবাজির দাপট ছিল অনেকটাই কম। ঘাটালের বাসিন্দাদের একাংশ বলছেন, “বাজি ফাটেনি এমনটা নয়। কিন্তু শান্তিতে রাতে ঘুমোতে পেরেছি। গত ক’বছরে তো এই ঘুমটাই উধাও হয়ে গিয়েছিল।” ঘাটালের মহকুমা পুলিশ অফিসার কল্যাণ সরকার বলছেন, “পুলিশ পুলিশের কাজ করেছে। সাধারণ মানুষও নিজেদের ভাল বুঝেছেন। তাঁদেরকেও ধন্যবাদ।’’
কালীপুজো মানেই শব্দবাজির দাপট। প্রতিবারই গোটা রাজ্যের সঙ্গে ঘাটাল শহরেও দেখা একই ছবি। রাত যত বাড়ত ততই বাজির রমরমা বাড়ত। বাজির দাপটে অতিষ্ঠ হয়ে পড়তেন মানুষ। এবার এমনিতেই পুজো দেরিতে শুরু হয়েছে। তাই অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন, এবারও কালী পুজোতে শব্দবাজির দৌরাত্ম্য বজায় থাকবে রাতের ঘাটাল। মঙ্গলবার সন্ধ্যা নামতেই দেখা যায় আতসবাজির রোশনাই। বাজির শব্দও শোনা যাচ্ছিল। তবে কখনও তা সহ্যের সীমা ছাড়ায়নি। আরও আশ্চর্যের হল, রাত বা়ড়তেই কমল শব্দের দাপট। অন্যবারে চেয়ে যা একেবারেই নতুন অভিজ্ঞতা ঘাটালবাসীর। শহরের বাসিন্দা মায়া মণ্ডল বললেন, “আমার ঘাটালেই বাড়ি। বুকে যন্ত্রণা নিয়ে গত বছর শহরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলাম। বাজির আওয়াজে কষ্ট হয়েছিল। এবার তা হয়নি। পুলিশকে ধন্যবাদ।”
নেই নেই করে প্রায় ৬০-৭০টি বাজির কারখানা রয়েছে মহকুমায়। এ বার বাজি ফাটানো নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর তৎপর হয়ে ওঠে পুলিশ প্রশাসন। কয়েকদিন ধরেই শব্দবাজি রুখতে তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ। তবে এত কিছুর পরেও শব্দবাজি বিক্রি বন্ধ হয়নি। অভিযোগ, বহু ক্ষেত্রে প্রকাশ্যেই বিক্রি হয়েছে শব্দবাজি। ঘাটাল শহরের এক ব্যবসায়ীর কথায়, “এবারেও বাজি বিক্রিতে কোনও ভাটা পড়েনি। তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দিষ্ট নিয়মের জন্য অন্য বছরের তুলনায় শব্দবাজির কম চাহিদা ছিল।”
কালীপুজোর রাতে কেমন ভূমিকা ছিল পুলিশের? এক বাজি বিক্রেতা বললেন, “এবার পুলিশ এত কড়া হবে তা কেউ ভাবেনি। দশটা বাজতেই সাদা পোশাকে পুলিশও টহল শুরু হয়েছিল। তাই কেউ সাহস দেখায়নি। পুজো মিটতেই বহু খদ্দের বাজি ফেরত নেওয়ার আর্জি রাখছেন।” প্রতিবার শহরের বড় রাস্তার সংযোগকারী রাস্তাগুলি কার্যত শব্দবাজি ফাটানোর ময়দানে পরিণত হত। তার জেরে ঘটত ছোটখাটো দুর্ঘটনাও। এ বার কুশপাতা, গোবিন্দপুর-সহ একাধিক সড়ক এবং অলিগলিতে পুলিশি টহল ছিল। ফলে অনেকেই বাজি ফাটানোর সাহস পাননি। কালীপুজো উতরে গেল। এ বার পরীক্ষা দেওয়ালির রাতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy