প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি ও মহকুমা হাসপাতালে।
হাইটেনশন লাইনে বিদ্যুৎ বিপর্যয়। তার জেরে বিদ্যুৎহীন হয়ে রইল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালও!
রবিবার রাতে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি ও মহকুমা হাসপাতালে। জেনারেটর চালিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়। এতে সব বিভাগে আলো, পাখা চালু ছিল। তবে পাম্পে জল তোলা, ওটি, এসএনসিইউ, এইচডিইউ-এর মতো জরুরি বিভাগগুলিতে এসি চালু রাখার কাজে সমস্যা হয়েছে। চলেনি লিফ্টও। হাসপাতালের সুপার কুণাল মুখোপাধ্যায় বলেন, “রবিবার ভোররাত থেকে সাড়ে তিন ঘন্টা বিদ্যুৎ ছিল না। আবাসনগুলিতেও বিদ্যুৎ ছিল না। জেনারেটর চালিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা হয়েছে।”
হাসপাতাল সূত্রের খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর, মেদিনীপুরের মতো শহরে রাতে জরুরি ভিত্তিতে হাই-টেনশন লাইন মেরামত করা হয়। কিন্তু ঘাটালে এই পরিষেবা চালুই হয়নি। তার জেরেই ভোগান্তি চলছে। বিঘ্নিত হচ্ছে হাসপাতালের মতো জরুরি পরিষেবা।
বিদ্যুৎ দফতরের ব্যাখ্যা, হাই-টেনশন এবং লো-টেনটেশন মূলত দুটি লাইনের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছনো হয়। ঘাটালে লো-টেনশন লাইনে রাতে জরুরি পরিষেবা চালু আছে। কিন্তু হাই-টেনশন লাইনে রাত দশটার পরে কোনও সমস্যা দেখা দিলে তা মেরামতি সম্ভব নয়। অথচ মাঝে মধ্যেই হাইটেনশন লাইনে (এগারো হাজার ভোল্ট) ব্রেক ডাউন, ফল্ট দেখা দেয়। তখন সকাল ছ’টা পর্যন্ত অপেক্ষা ছাড়া গতি নেই।
ঘাটাল মহকুমার সদর শহর। এখানে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল ছাড়াও একাধিক বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স রয়েছে। আছে ছোট ছোট কারখানা। আর সাধারণ গ্রাহকেরা তো আছেনই। কিন্তু এখনও ঘাটালে হাইটেনশন লাইনের জন্য রাতের জরুরি পরিষেবা চালু করেনি বিদ্যুৎ দফতর।
ফলে, রাত দশটার পরে হাইটেনশন লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনও সমস্যা দেখে দিলেই গোটা এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। অন্ধকার এবং ভ্যাপসা গরমে নাজেহাল হতে হয় আমজনতাকে। রবিবার রাতে যেমন ভুগতে হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা। মাথার যন্ত্রণা নিয়ে দিন তিনেক ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি আছেন অতনু মণ্ডল। রবিবার রাতে বিদ্যুৎ যেতেই তাঁর ঘুম ভেঙে যায়। গরমে অস্বস্তি হতে শুরু করে। তিনি বলেন, “প্রথমে তো পাখাও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সঙ্গে মশার উপদ্রব।’’ রবিবারই পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন ঘাটালের মালতি মালিক। সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি এই প্রসূতির কথায়, “ছেলেটা ঘুমোচ্ছিল। আমিও সবে ঘুমিয়েছি। ছেলের কান্না শুনেই উঠে পড়ি। দেখি চারদিক অন্ধকার।’’ ঘাটালের ইড়পালার বাসিন্দা অমর ঘোষের কথায়, “আমার মা ভর্তি। রাতে হাসপাতালেই ছিলাম। শৌচাগারে গিয়ে দেখি জল নেই। বাধ্য হয়ে বাইরে যেতে হয়।’’
সমস্যা মানছে বিদ্যুৎ দফতর। দফতরের রিজিওনাল ম্যানেজার চিরঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি বিদ্যুৎ ভবনে জানানো হয়েছে। ঘাটালে যাতে রাতেও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়া যায়, সেই পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy