প্রতীকী ছবি।
রেলশহরে ডেঙ্গি পরিস্থিতি সামলাতে তৎপর হল স্বাস্থ্য দফতর। মঙ্গলবার খড়্গপুর পুরসভার প্রতিনিধিদের নিয়ে মেদিনীপুরে বৈঠক করেন জেলার স্বাস্থ্য কর্তারা। এ দিন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে ওই বৈঠকে ডাকা হয়েছিল মেদিনীপুর পুরসভার প্রতিনিধিদেরও। ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা, জেলার মশাবাহিত রোগের নোডাল অফিসার রবীন্দ্রনাথ প্রধান, খড়্গপুরের অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস পাল, খড়্গপুর হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।
গত মে মাস থেকে স্বাস্থ্য দফতর পুরসভার মাধ্যমে ডেঙ্গি রোধে যে সমীক্ষা চালানো হচ্ছে, তাই ছিল এ দিনের পর্যালোচনা বৈঠকের বিষয়। ওই সমীক্ষার পরেও খড়্গপুরে যে ভাবে ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দিয়েছে, তা দেখেই এ দিন তড়িঘড়ি বৈঠক ডাকা হয়। গত বছর শীতেও খড়্গপুর শহরে অনেকে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। খড়্গপুর শহরে গত এক মাসে ৭জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ায় ও গত এক সপ্তাহে ১০জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণুর সন্ধান মিলেছে। এছাড়াও বিভিন্ন হাসপাতালে প্রায় ৩০জন ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছে। শহরবাসীর অভিযোগ, গত দু’মাস ধরে যে সমীক্ষা চলছে, তাতে পুরসভার স্বেচ্ছাসেবকেরা শুধু কার্ডে সই করানো ছাড়া আর কিছু করেননি। ছড়ানো হয়নি মশা মারার তেল।
এ দিনের বৈঠকে খড়্গপুর পুরসভার তরফে হাজির ছিলেন স্বাস্থ্য বিষয়ক পুর-পারিষদ বেলারানি অধিকারী। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, কেন সচেতনতা প্রচার করা হয়নি, কেনই বা নর্দমায় জল জমে রয়েছে, মশা মারার তেল দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে সে কথা বৈঠকে জানতে চাওয়া হয়। নর্দমা পরিষ্কার করা হচ্ছে বলে দাবি করলেও অন্য প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি বেলারানিদেবী। পরে তিনি বলেন, “এই সপ্তাহের মধ্যেই ৪৩জন সুপারভাইজার ও স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে বৈঠক করব। আগামীদিনে ফের অভিযোগ উঠলে সুপারভাইজারকে বসিয়ে দেওয়া হবে বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দেব।’’ আর এ বার থেকে কাউন্সিলরদের কাছে মশা মারার তেল পাঠিয়ে দেওয়া হবে এবং তাঁরাই এলাকায় তেল ছড়ানোর ব্যবস্থা করবেন বলে বেলারানিদেবী জানান।
এ দিন স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকেও কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামীদিনে পুরসভার স্বেচ্ছাসেবকদের ফের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। রেলের স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে পুরসভার প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করা হবে। মহকুমা হাসপাতালে ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে কেউ ভর্তি হলেই মেদিনীপুরে ম্যাক এলাইজা পরীক্ষার জন্য রক্তের নমুনা পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, “আমরা এতদিন জ্বর হলে ওষুধের মাধ্যমে সুস্থ হলে আর রোগীকে ছেড়ে দিচ্ছিলাম। এ বার নির্দেশ মতো ডেঙ্গির উপসর্গ থাকলেই ম্যাক এলাইজা পরীক্ষা করব।” বৈঠক শেষে গিরীশবাবু বলেন, “সমীক্ষা নিয়ে কেন অভিযোগ উঠছে তা পুরসভাকে দেখতে বলা হয়েছে। মেদিনীপুর পুরসভাকেও সতর্ক করা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy