প্রতীকী ছবি।
এ হল সুপ্ত প্রতিভার স্বীকৃতির মঞ্চ। আর সেই মঞ্চে আসার সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত মৌসুমী আচার্য, স্থিতা পাল বাগচী, পল্লবী গিরিরা।
‘পি সি চন্দ্র মুগ্ধা নিবেদিত আনন্দবাজার পত্রিকা অদ্বিতীয়া’- র মেদিনীপুর আঞ্চলিকপর্বের প্রতিযোগিতা হবে আজ, শনিবার। মেদিনীপুর শহরের প্রদ্যোত স্মৃতি সদনে সেই অনুষ্ঠানেই সুযোগ পেয়েছেন মৌসুমীরা। এই সুযোগ এঁদের প্রত্যেকের কাছে নিজের সুপ্ত প্রতিভা চেনানোর সুযোগ। মৌসুমী বলছিলেন, ‘‘ছোটবেলায় সে ভাবে গান শেখা হয়নি। শুনে শুনে যতটুকু শেখা যায় শিখেছি। তবে গান আমার প্রাণ।’’ পল্লবীর কথায়, ‘‘নাচ করতে ভাল লাগে। ভাল লাগা থেকেই এই প্রতিযোগিতায় নাম দেওয়া।’’ স্থিতা বলেন, ‘‘ছোটবেলায় আবৃত্তি শিখেছি। এই মঞ্চটা একটা বড় প্ল্যাটফর্ম। তাই বিজ্ঞাপন দেখেই প্রতিযোগিতায় নাম দিয়েছি।’’
সঙ্গীত, নৃত্য, আবৃত্তি— এই তিনটি বিভাগে মেদিনীপুর অঞ্চলের সেরা নির্বাচিত হবেন আজকের এই প্রতিযোগিতা থেকে। সফলরা কলকাতায় প্রতিযোগিতার মূল পর্বে যোগ দেবেন। বিজ্ঞাপন দেখে প্রতিযোগিতায় যোগদানে আগ্রহীরা এক মিনিটের ভিডিয়ো করে পাঠিয়েছিলেন। সেখান থেকেই প্রতিটি বিভাগের ২৫ জনকে বাছাই করা হয়েছে। এঁদের নিয়েই হবে মেদিনীপুর আঞ্চলিকপর্বের প্রতিযোগিতা।
সঙ্গীত বিভাগের প্রতিযোগীদের মধ্যে রয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরের মৌসুমী আচার্য। মৌসুমীর ছোটবেলায় প্রথাগতভাবে গান শেখা হয়নি। গৃহবধূ মৌসুমীর কথায়, ‘‘দিদি গান শিখত। বাড়ির বড়রা ভাবতেন, বাড়ির একজন শিখলেই বাকিদের শেখা হয়ে যাবে। দিদির কাছে শুনে শুনেই যতটুকু শেখা।’’ তাঁর কথায়, ‘‘প্রতিযোগিতায় নাম দেওয়া নিয়ে খানিক সংশয় ছিল। পরে ভাবলাম, গান গাওয়ার আবার কোনও বয়স হয় না কি। এই মঞ্চটা তো প্রতিভার স্বীকৃতিরই মঞ্চ।’’
নৃত্য বিভাগে প্রতিযোগীদের মধ্যে রয়েছেন পল্লবী গিরি। পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার পল্লবীর নৃত্যে বরাবর আগ্রহ রয়েছে। ছোটবেলায় প্রথাগতভাবে তালিমও নিয়েছেন। কত্থক নৃত্য শিখেছিলেন। পড়াশোনা শেষে এখন চাকরির খোঁজে রয়েছেন। বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাই বাধ্য হয়েই কত্থকের ঘুঙুর তুলে রাখতে হয়েছিল। ফের অবশ্য সেই ঘুঙুর তিনি বের করেছেন। পল্লবী বলছিলেন, ‘‘চাকরির চেষ্টাই রয়েছি। নাচ করতে আমার ভাল লাগে। বিজ্ঞাপন দেখে ভাললাগাটা মাথাচাড়া দেয়।’’ নাচ থেকে খানিকটা দূরে সরে যাওয়া পল্লবী ফের ফিরে এসেছেন নাচের কাছে।
আবৃত্তি বিভাগের প্রতিযোগীদের মধ্যে রয়েছেন স্থিতা পাল বাগচী। ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা স্থিতা স্কুল শিক্ষিকা। ছোটবেলায় আবৃত্তি শিখেছেন। পরে কাজ আর সংসারের চাপে সে ভাবে আবৃত্তিচর্চায় থাকা হয়ে ওঠেনি। স্থিতা বলছিলেন, ‘‘আবৃত্তির প্রতি ভাললাগা রয়েছে। আর এই মঞ্চ তো ইচ্ছেপূরণেরই মঞ্চ।’’
কাজের ফাঁকে দম ফেলার সময় পান না ওঁরা। নিজেকে চেনানোর সুযোগ অবশ্য হাতছাড়া করতে চাননি কেউই। বছর তিপান্নর স্কুল শিক্ষিকা স্থিতা থেকে বছর তিপান্নর গৃহবধূ মৌসুমী, সকলেই মানছেন, ‘‘এ সুযোগ বড় সুযোগ। যদি প্রতিভার স্বীকৃতি মেলে, তা হলে তা হবে আরও আনন্দের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy