Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Hosiery Industry

বোনাস অনিশ্চিত হোসিয়ারি শ্রমিকদের

প্রতি বছর পুজোর সময় বোনাস হিসেবে কিছু বাড়তি টাকা পেতেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রায় ২৫ হাজার হোসিয়ারি শ্রমিক। কিন্তু এবার আদৌ বোনাস মিলবে কিনা তা জানেন না এঁরা। ফলে পুজোর বাজেট কাটছাঁট করতে বাধ্য হচ্ছেন শ্রমিকেরা।

বোনাসের আশায়। পাঁশকুড়ার একটি হোসিয়ারি কারখানায়। নিজস্ব চিত্র

বোনাসের আশায়। পাঁশকুড়ার একটি হোসিয়ারি কারখানায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৮ ০০:৪৯
Share: Save:

ভেস্তে গেল ত্রিপাক্ষিক বৈঠক। আর সেই সঙ্গে পুজোর মুখে বোনাস অনিশ্চিত হয়ে পড়ল হোসিয়ারি শ্রমিকদের।

শিয়রে দুর্গাপুজো। বোনাস না পেলে আর কবে নতুন জামাকাপড় ছেলেমেয়ে, স্ত্রীর হাতে তুলে দেবেন তা ভেবে মন খারাপ কয়েক হাজার হোসিয়ারি শ্রমিকদের।

প্রতি বছর পুজোর সময় বোনাস হিসেবে কিছু বাড়তি টাকা পেতেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রায় ২৫ হাজার হোসিয়ারি শ্রমিক। কিন্তু এবার আদৌ বোনাস মিলবে কিনা তা জানেন না এঁরা। ফলে পুজোর বাজেট কাটছাঁট করতে বাধ্য হচ্ছেন শ্রমিকেরা।

পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট, পাঁশকুড়া, শহিদ মাতঙ্গিনী, নন্দকুমার-ব্লক সহ বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে প্রায় দু’হাজার হোসিয়ারি কারখানা রয়েছে। প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিক এই শিল্পে যুক্ত। এর একটা বড় অংশই মহিলা।

শ্রমিকদের দাবি হোসিয়ারি সংস্থাগুলি প্রতি বছর পুজোর আগে শ্রমিকদের জন্য ১৯ শতাংশ হারে বোনাস পাঠিয়ে দেয় প্রস্তুতকারক মালিকদের কাছে। কিন্তু কারখানার মালিকরা তার একটা বড় অংশ কেটে রেখে দেন বলে অভিযোগ। এই নিয়ে আগে একাধিকবার আন্দোলন করেছে ওয়েস্ট বেঙ্গল হোসিয়ারি মজদুর ইউনিয়ন। কিন্তু মালিকপক্ষ তাঁদের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি বলে অভিযোগ। গত বছর তাঁরা মাত্র ৯.৬ শতাংশ হারে বোনাস দেন বলে দাবি শ্রমিকদের। এই বঞ্চনার অভিযোগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকের সঙ্গে দেখা করে লিখিত অভিযোগ জানায় ওই শ্রমিক সংগঠন। ওই দিনই রাজভবনে রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপিও দেয় তারা। বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য শ্রমমন্ত্রীর দফতর জেলার সহকারি শ্রমাধ্যক্ষকে নির্দেশ পাঠায়।

গত ৫ অক্টোবর জেলার অতিরিক্ত শ্রমাধ্যক্ষ অনিমেষ চক্রবর্তী মালিকপক্ষ ও শ্রমিক সংগঠনকে নিয়ে আলোচনায় বসেন। সেখানে মালিকপক্ষ ৯.৭৫ শতাংশ হারে বোনাস দেওয়ার কথা জানায়। কিন্তু শ্রমিক সংগঠন অন্তত ১২ শতাংশ হারে বোনাসের দাবিতে অনড় থাকলেও তাতে রাজি হননি মালিকপক্ষ।

কারখানার মালিক তথা বেঙ্গল হোসিয়ারি টেলার অ্যাসোসিয়েশনের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক গণেশ কাণ্ডার বলেন, ‘‘আমরা এ বছর ৯.৭৫ শতাংশ হারে বোনাস দিতে তৈরি। কিন্তু ইউনিয়ন তাদের দাবি থেকে না সরলে আমাদের কিছু করার নেই।’’ তিনি আরও জানান, সমস্ত কোম্পানি ১৯ শতাংশ হারে আমাদের বোনাস দেয় না। বিভিন্ন কোম্পানির বোনাসের হার ভিন্ন। তাই এবার এর চেয়ে বেশি বোনাস দেওয়া সম্ভব নয়।

শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি মধুসূদন বেরার অভিযোগ, ‘‘মালিকপক্ষ প্রকৃত তথ্য গোপন করছেন। ওঁরা শ্রমিকদের পাওনায় ভাগ বসাচ্ছেন। আমাদের দাবি না মানা হলে ভবিষ্যতে বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।’’

মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের টানাপড়েনে এ বছর আদৌ বোনাস মিলবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে জেলার হোসিয়ারি শ্রমিকেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hosiery Industry Bonus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE