ঘেরাও প্রধান (চিহ্নিত)।
স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হল এক ব্যক্তি। আর ওই ঘটনায় থানায় ধর্না থেকে তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানকে ঘেরাও— সব মিলিয়ে নতুন বছরের প্রথম দিন ঘটনাবহুল হয়ে রইল পাঁশকুড়ার প্রতাপপুর-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রতাপপুর এলাকার রুশিয়া গ্রামের চয়ন মাজির সাথে ঝিকুরিয়ার বাসিন্দা রাধারানি মাজির (১৯) ন’মাস আগে বিয়ে হয়। সোমবার রাধারানির মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসে। তার পরিবারের অভিযোগ, পণের দাবিতে রাধারানিকে খুন করেছে চয়ন এবং তার পরিবার। সোমবার মৃতের বাপের বাড়ির লোকজন থানায় চয়ন-সহ পরিজনের বিরুদ্ধে এফআইআর করতে গেলে পুলিশ অভিযোগ নেয়নি বলে অভিযোগ। সন্ধ্যায় ঝিকুরিয়া গ্রামের লোকজন ওই এলাকায় পথ অবরোধ করেন।
এ দিন সকালে ফের পাঁশকুড়া থানায় যান মৃতের পরিজন-সহ কয়েকশো গ্রামবাসী। থানার বাইরে ধর্নায় বসেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, প্রতাপপুর-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শঙ্করপ্রসাদ সামন্ত প্রভাব খাটিয়ে বিষয়টি সমঝোতা করার চেষ্টা করছেন এবং তিনিই এফআইআর দায়ের করতে বাধা সৃষ্টি করছেন। গ্রামবাসীদের ধর্নার খবর পেয়ে থানায় যান পাঁশকুড়ার নারী নিগ্রহ বিরোধী নাগরিক কমিটির সম্পাদক শ্রাবন্তী মণ্ডল। পরে মৃতের শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। মৃতের বাবা অমল ঘোড়াই বলেন, ‘‘ওরা পণের জন্য চাপ দিত। সম্প্রতি ৩০ হাজার টাকা চেয়েছিল। দিতে না পারায় মেয়েকে খুন করেছে।’’
প্রতাপপুর-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শঙ্করপ্রসাদ সামন্তকে এ দিন বিকেল ৪টে নাগাদ ঝিকুরিয়া গ্রামের মানুষে ঘেরাও করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। ঝিকুরিয়া গ্রামের এক বাসিন্দা রঞ্জিত ঘোড়াইয়ের অভিযোগ, ‘‘সোমবার পুলিশকে পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। প্রধান শঙ্করপ্রসাদ আমাদের সমঝোতার করার পরামর্শ দেন। তাই গ্রামবাসীরা এ দিন ওঁকে ঘেরাও করেন।’’
এ ব্যাপারে প্রধান শঙ্করপ্রসাদ বলেন, ‘‘কোনও ঘেরাও বা বিক্ষোভ হয়নি। গ্রামবাসীরা অবরোধ করছিলেন। আমি নিজে গিয়ে ওঁদের সঙ্গে কথা বলেছি।’’ আর পুলিশের কাজে প্রভাব ফেলার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘সোমবার থানায় পুলিশকর্মী কম ছিলেন বলে ওঁরা ব্যবস্থা নিতে পারেননি বলে শুনেছি।’’
এ দিকে, এ দিন রাতেই পুলিশ প্রতাপপুর এলাকা থেকে ঘটনার এক অভিযুক্ত তথা মৃতার স্বামী চয়নকে গ্রেফতার করে। অন্য অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। পাশাপাশি, সোমবার এফআইআর দায়ের করতে অস্বীকার করার বিষয়টিও উড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ। পাঁশকুড়া থানার তরফে জানানো হয়েছে, সোমবার মৃতার পরিবারের তরফে কেউ অভিযোগপত্র লিখতে পারেননি। তাই তাঁরা ফিরে গিয়েছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy