রবিবার উদ্ধার হয় তরুণীর দেহ।
তরুণীর গলার নলি কেটে খুনের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে স্বামীকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
রবিবার সকালে তমলুক শহরের স্টিমারঘাটের কাছে আবাসবাড়ি এলাকায় কয়েকদিন আগে সেখানে ভাড়াবাড়িতে আসা মানসী পতি রানা (২১) নামে ওই তরুণীর গলার নলি কাটা দেহ উদ্ধার হয় বাড়ির সামনে ধানজমিতে। খুনের ঘটনায় সন্দেহের তির ওঠে ‘স্বামী’ হিসেবে পরিচয় দেওয়া এক যুবকের (সনাতন জানা) বিরুদ্ধে। দেহ উদ্ধারের পর পুলিশ সনাতন ও মানসীর স্বামী মন্টু রানাকে আটক করে। পরে তদন্তে পুলিশ জানতে পারে তমলুক শহরের সৈয়দপুর এলাকার বাসিন্দা পেশায় মণ্ডপ সজ্জার কর্মী মন্টুর সঙ্গে বছর ছয়েক আগে মানসীর বিয়ে হয়েছিল। তাঁদের তিন বছরের এক শিশুকন্যা রয়েছে। কিন্তু পারিবারিক অশান্তির জেরে স্বামী মন্টুর বিরুদ্ধে মানসী বধূ নির্যাতন এবং বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা দায়ের করেন তমলুক আদালতে।
গত কয়েক মাস ধরে মানসী তমলুকের নকিবসান গ্রামে বাপের বাড়িতে থাকছিলেন। এই সময় পাশের ভুবনেশ্বরপুর গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে তাঁর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে অভিযোগ। বিষয়টি জানার পর আপত্তি জানান মন্টু। গত ৮ জানুয়ারি তমলুক শহরের আবাসবাড়ি এলাকায় ঘর ভাড়া করে মানসী ও ওই যুবকের থাকার বিষয়ে জানতে পারেন মন্টু। রবিবার সকালে ওই যুবকের অনুপস্থিতির সুযোগে মন্টু ওই বাড়িতে হাজির হন বলে অভিযোগ। এর পর মানসী ও তাঁর বচলা বাধে। অভিযোগ, বচসার মাঝেই মন্টু ধারাল হাঁসুয়া দিয়ে মানসীর গলায় কোপ মেরে পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থাতেই মানসী কোনওরকমে বাড়ির বেরিয়ে এসে সামনে ধানজমিতে পড়ে যান। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় মানসীকে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেয়। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পুলিশ প্রথমে মানসীর স্বামী মন্টু ও ওই যুবককে আটক করে। পুলিশের দাবি, তদন্তে জানা গিয়েছে মন্টুই এই খুনের সঙ্গে জড়িত। স্ত্রীর সঙ্গে অন্য যুবকের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিয়ে সে আপত্তি জানিয়েছিল। পরে বাপেরবাড়ি ছেড়ে ওই যুবকের সঙ্গে স্ত্রীর ঘর ভাড়া করে থাকার কথা জানতে পেরে মানসীকে খুনের পরিকল্পনা করেছিল।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, ঘটনার তিনদিন আগেই মানিকতলা এলাকার এক লোহার সামগ্রীর দোকান থেকে হাঁসুয়া কিনেছিল মন্টু। তা সে লুকিয়ে নিয়ে গিয়েছিল আবাসবাড়ি মানসীর বাড়িতে। সেখানে দু’জনের বচসার মাঝেই হঠাৎ সে মানসীর গলায় হাঁসুয়ার কোপ মেরে পালিয়ে যায়। সোমবার দুপুরে মানিকতলা এলাকার ওই লোহার সামগ্রীর দোকানে খোঁজ নেওয়া হয়েছে।
তমলুকের এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওই যুবতীকে খুনের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে তাঁর স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তে জানা গিয়েছে, স্ত্রীর সঙ্গে অন্য যুবকের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে ক্ষোভেই ওই যুবতীকে খুন করে তাঁর স্বামী। তবে ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তদন্ত হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy